‘দামটা নিয়ন্ত্রণ করুন, নইলে বেসামাল তেলের কাছেই পরাজিত হয়ে যাব’

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:৫৩ এএম, ০৮ জুলাই ২০২১

বাণিজ্যমন্ত্রী উদ্দেশ্যে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বলেছেন, এই তেলের দামটা একটু নিয়ন্ত্রণ করুন। নইলে এই তেলই কিন্তু বেসামাল হয়ে আমাদের কষ্টটাকে এত বেশি বাড়িয়ে দেবে যে অর্থনৈতিকভাবে আমরা তেলের কাছেই পরাজিত হয়ে যাব।

বুধবার (৭ জুলাই) বিকেলে নিত্যপণ্য সামগ্রীর দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ফেসবুক লাইভে তিনি এমন কথা বলেন।

দেশে সয়াবিন তেলের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে বাণিজ্যমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মানুষ করোনায় এমনিতেই কষ্টে আছে। এর মধ্যে সয়াবিন তেলের দাম নিয়ন্ত্রণ না করলে মানুষের কষ্টের সীমা থাকবে না।’

ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ‘বাংলাদেশের সব মানুষ যখন করোনার কারণে ভয়ে আছে, করোনা নিয়ন্ত্রণে সরকার, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ত্রাহী ত্রাহী অবস্থা। এটা বলতেই হবে সরকার সফলতার সঙ্গে করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে এসেছে। সফলতার সঙ্গে সারাদেশের মানুষের করোনার ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা করছে সরকার। একই সময়ে ব্যবসায়ীদের একটি আলামত আপনাদের দেখাতে চাই। যখনই বাংলাদেশের বিপদ আসে, তখনই ব্যবসায়ীরা কেন যেন বদলে যায়।’

তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন যখন রমজান মাস আসে তখন ব্যবসায়ীরা সব পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। পৃথিবীর আর কোথাও পাবেন না যে রমজান মাসে পণ্যের দাম বাড়ানো হয়। ঠিক তেমনি যখন করোনার মতো বিপদ চলছে, এখন প্রতিদিনই লাশের সারি, লাশের মিছিল চলছে, আমরা লকডাউনে সবাই ঘরের মধ্যে বন্দি অবস্থায় আছি। ঠিক একই সময়ে সয়াবিন তেল আমাদের বারোটা বাজিয়ে দিচ্ছে।’

সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী বলেন, ‘সব কোম্পানির তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। ঠিক আড়াই থেকে তিন মাস আগে এই তেল লিটার প্রতি ১০০ থেকে ১০৫ টাকা ছিল। এই তিন মাসের ব্যবধানে করোনারে পেয়ে তেলের দাম নিয়ে বারোটা বাজিয়ে দিচ্ছে তেল ব্যবসায়ীরা।’

পাশে থাকা এক দোকানদারকে তিনি জিজ্ঞেস করেন, ‘কতো দিনে তেলের দাম কতো বাড়ছে আপনি কী জানেন?’ জবাবে ওই ব্যক্তি বলেন, ‘তিন মাসের মধ্যে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা লিটারে বেড়েছে তেলের দাম।’ তিন মাসের মধ্যে এত বেড়েছে, এতে কী দোকানির লাভ হচ্ছে নাকি কোম্পানির লাভ হচ্ছে, এমন প্রশ্নে ওই দোকানদার বলেন, ‘দাম যত বেশি আমাদের ইনভেস্টও বেশি করতে হচ্ছে। সাধারণ মানুষের কী অবস্থা, এমন প্রশ্নে ওই দোকানি বলেন, ‘আগে যেখানে লুজ তেল ছিল ৭০ টাকা লিটার এখন সেটা ১২০ টাকা। করোনায় সাধারণ মানুষের ওপর বেশি প্রভাব পড়ছে।’

ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ‘এই ভিডিও শেষ করার আগে আমি বাণিজ্যমন্ত্রীকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছি, আমরা তো সবাই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিয়ে ব্যস্ত। এই ফাঁকে যদি বাণিজ্যমন্ত্রী একটু তেলের দিকে খেয়াল না করেন, তাহলে এমনি তো মানুষের করোনায় কষ্ট হচ্ছে।’

বাণিজ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরও বলেন, ‘সরকারিভাবে করোনায় টিসিবিতে যে পরিমাণ বরাদ্ধ দেয়া হেয়েছে এটা মানুষের জন্য যথেষ্ট কম। খুব অল্প মানুষ এখান (টিসিবি) থেকে কিনতে পারে। করোনায় এই সময়ে লকডাউনের কথা বলবেন, মানুষকে বাসায় থাকতে বলবেন, তাহলে অবশ্যই এমন কিছু করে দিতে হবে যেন মানুষের কষ্ট কম হয়। আপনি লকডাউনের কথাও বলবেন আর ব্যবসায়ীদের যদি নিয়ন্ত্রণ করা না যায় তাহলে সাধারণ মানুষের যে দীর্ঘশ্বাস, সেই দীর্ঘশ্বাস কঠিন থেকে কঠিনতর হতে থাকবে। তাই পরিশেষে আমার একটাই বক্তব্য এই তেলের দামটা একটু নিয়ন্ত্রণ করুন। নইলে এই তেলই কিন্তু বেসামাল হয়ে আমাদের কষ্টটাকে এত বেশি কষ্টকর করবে যে অর্থনৈতিকভাবে তেলের কাছেই আমরা পরাজিত হয়ে যাব।’

এফএইচ/এমআরআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।