‘মায়ের কাছে থাকবে ১০ বছরের মেয়ে, বাবা চাইলে দেখা করতে পারবেন’
১০ বছরের কন্যাসন্তানকে বাবার জিম্মায় দিতে নিম্ন আদালতের আদেশ স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ওই শিশুকে মায়ের কাছে রাখার আদেশ দিয়েছেন। তবে বাবা চাইলে সন্তানের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন।
বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলাম। তিনি জানান, ৩০ দিনের স্থগিত আদেশ দিয়েছেন আদালত, তবে এই সময়ের মধ্যে তার বাবা শিশুর সঙ্গে দেখা করতে পারবেন। সপ্তাহে বা মাসে কতদিন তা উল্লেখ করা হয়নি, আদেশের কপি প্রকাশ পেলে হয়তো জানা যাবে।
তিনি আরও জানান, ২০১৯ সালে বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ হয়। এরপর ১০ বছর বয়সের কন্যাশিশুটি থাকে মায়ের কাছে। কিন্তু এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পারিবারিক আদালত (নিম্ন) বাবার কাছে রাখার আদেশ দেন। মায়ের কাছে থাকবে শুধু শুক্রবার ও শনিবার। ওই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আসেন ওই শিশুর মা।
রোববার (৪ জুলাই) ওই আবেদন শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন একক ভার্চুয়াল বেঞ্চ পারিবারিক আদালতের আদেশ স্থগিত করে দেন। একইসঙ্গে ১০ বছরের কন্যাকে মায়ের জিম্মায় রাখার আদেশ দিয়ে হাইকোর্ট বলেছেন, বাবা চাইলে সন্তানের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন।
আদালতে আজ আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলাম। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী এম. মাসুদ রানা। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস।
আইনজীবী সূত্রে জানা যায়, স্বামী-স্ত্রী দুইজনই ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। ২০০৭ সালে তারা ভালোবেসে বিয়ে করেন। ২০১১ সালে তাদের ঘরে জন্ম নেয় এক কন্যাসন্তান। কিন্তু দুই বছর আগে তাদের মধ্যে বিয়েবিচ্ছেদ ঘটে। তখন সন্তান ছিল মায়ের কাছে।
এরই মধ্যে মেয়েকে নিজ হেফাজতে নিতে পারিবারিক আদালতে আবেদন করেন বাবা। সেই আবেদন মঞ্জুর করেন ঢাকার পারিবারিক আদালত। গত ১৬ জুন আদালত প্রথমে মায়ের জিম্মায় রাখার আদেশ দেন।
একদিন পর ওই আদেশ স্থগিত করে পারিবারিক আদালতের দ্বিতীয় অতিরিক্ত সহকারী জজ বলেন, আগামী ২১ দিন নাবালিকা বাবার হেফাজতে থাকবে। তার মধ্যে মায়ের হেফাজতে থাকবে শুক্রবার ও শনিবার।
বাবা সন্তানের অনলাইনে স্কুলের ক্লাসের ব্যবস্থা করবেন। বাদী ও বিবাদীর এবং তাদের বাবা-মা বাসার পরিবেশ দেখা, কার বাসায় কে থাকেন এবং ওই বিষয়ে সার্বিক প্রতিবদনের জন্য ২১ দিনের মধ্যে হাজারীবাগ থানার ওসিকে নির্দেশ দেয়া হয়।
ওই আদেশ স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন মেয়েটির মা। শুনানি শেষে হাইকোর্ট পারিবারিক আদালতের আদেশ ৩০ দিনের জন্য বা নিয়মিত আদালত খোলা পর্যন্ত স্থগিত করে দেন। একইসঙ্গে নিয়মিত খোলার পর বিষয়টি পরবর্তী আদেশের জন্য উপস্থাপন করতে আইনজীবীকে নির্দেশ দেয়া হয়।
এফএইচ/বিএ/এমএস