সাবেক এমপি আউয়ালকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:২৫ পিএম, ২১ মে ২০২১
ফাইল ছবি

রাজধানীর পল্লবীতে প্রকাশ্যে ছেলের সামনে শাহীন উদ্দিনকে (৩৩) কুপিয়ে হত্যার মামলায় লক্ষ্মীপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও ইসলামী গণতান্ত্রিক পার্টির চেয়ারম্যান এম এ আউয়ালকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেছে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।

শুক্রবার (২১ মে) তাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক সৈয়দ ইফতেখার হোসেন। বেলা ৩টার দিকে ঢাকা মহানগর হাকিম নিভানা খায়ের জেসির আদালতে এ রিমান্ড শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

বৃহস্পতিবার কিশোরগঞ্জের ভৈরব থেকে হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ও হত্যা মামলার এক নম্বর আসামি লক্ষ্মীপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও ইসলামী গণতান্ত্রিক পার্টির চেয়ারম্যান এম এ আউয়ালকে গ্রেফতার করে র‍্যাব। এদিকে শাহীন উদ্দিনকে কুপিয়ে হত্যার মামলার এজাহারভুক্ত পাঁচ নম্বর আসামি মো. মানিক র‍্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন।

প্রসঙ্গত, গত ১৬ মে বিকেলে জমি সংক্রান্ত বিরোধের বিষয়ে মীমাংসার কথা বলে শাহীন উদ্দিনকে পল্লবীর ডি ব্লকের একটি গ্যারেজের ভেতর নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করা হয়। প্রকাশ্য দিবালকে লোমহর্ষক এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ভিকটিমের মায়ের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৭ মে পল্লবী থানায় হত্যা মামলা হয়।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ১৬ মে বিকেল ৪টায় সুমন ও টিটু নামে দুই যুবক শাহীন উদ্দিনকে জমির বিরোধ মেটানোর কথা বলে ফোন করে ডেকে নেন। শাহীন মোটরসাইকেলে পল্লবীর ডি-ব্লকের ৩১ নম্বর সড়কের ৪০ নম্বর বাসার সামনে পৌঁছলে সুমন ও টিটুসহ ১৪-১৫ জন মিলে তাকে টেনে-হিঁচড়ে ওই বাড়ির গ্যারেজে নিয়ে যান। এ সময় শাহীনের সাত বছরের ছেলে মাশরাফি গেটের বাইরে ছিল। গ্যারেজে ঢুকিয়ে তাকে চাপাতি, চাইনিজ কুড়াল, রামদা দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন তারা। এরপর তাকে ওই বাড়ি থেকে বের করে ৩৬ নম্বর বাড়ির সামনে ফের কুপিয়ে সেখানে ফেলে রেখে চলে যান তারা।

নিহতের মা আকলিমা বেগমের অভিযোগ, পল্লবীর সেকশন-১২ বুড়িরটেকের আলীনগর আবাসিক এলাকার হ্যাভেলি প্রোপার্টিজ ডেভেলপার লিমিটেডের এমডি এবং লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এম এ আউয়ালের সঙ্গে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ভাড়া করা স্থানীয় সন্ত্রাসীরা শাহীনকে হত্যা করেন। আনুমানিক পাঁচ কোটি টাকা মূল্যের ১০ একর জমি জবরদখলে বাধা দেয়ায় খুন হতে হয় তাকে।

মামলায় প্রধান আসামি করা হয় লক্ষ্মীপুর-১ আসনের সাবেক এমপি এম এ আউয়ালকে। অন্য আসামিরা হলেন- ছাত্রলীগের সাবেক নেতা সুমন, মো. আবু তাহের, মুরাদ, মানিক, মনির, শফিক, টিটু, কামরুল, কিবরিয়া, দিপু, আবদুর রাজ্জাক, মরণ আলী, লিটন, আবুল, বাইট্যা বাবু, বড় শফিক, কালু ওরফে কালা বাবু, নাটা সুমন ও ইয়াবা বাবু। আসামিরা সবাই পল্লবী থানা এলাকার বাসিন্দা।

র‍্যাব জানায়, ঘটনার সময় প্রথমে সুমন, মনির, মানিক, হাসান, ইকবাল ও মুরাদসহ ১০-১২ জন ধারালো অস্ত্র দিয়ে শাহীনকে এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকে। ঘটনার শেষ পর্যায়ে শরীরের ওপরের অংশে মনির এবং হাঁটু ও হাত-পায়ে কুপিয়ে মানিক শাহীনের মৃত্যু নিশ্চিত করে।

এ সময় বাবুসহ বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে ‘লুকআউট ম্যান’ হিসেবে নজরদারি করে। হত্যাকাণ্ডটি ৫-৭ মিনিটের মধ্যে সংঘটিত হয়। মৃত্যু নিশ্চিত হলে সাবেক এমপি আউয়ালের মোবাইলে ফোন করে সুমন বলে, ‘স্যার ফিনিশড।’ এরপর হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়া ব্যক্তিরা দেশের বিভিন্ন এলাকায় গা ঢাকা দেয়।

জেএ/বিএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।