মডেল সুমাইয়ার স্বামী হত্যায় হাইকোর্টের রায় দেয়া শুরু


প্রকাশিত: ০৩:২১ পিএম, ২৯ নভেম্বর ২০১৫

চাঞ্চল্যকর ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম হত্যার অভিযোগে রাজধানীর শ্যামপুর থানায় করা মামলায় রায় দেয়া শুরু করেছেন হাইকোর্ট। যে মামলায় নিহতের স্ত্রী মডেল কন্যা সুমাইয়া কানিজ সাগরিকাসহ ছয় আসামির মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় দিয়েছিলেন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল।

আসামীপক্ষের করা আপিলের ওপর শুনানি শেষে রোববার হাইকোর্টের বিচারপতি সোমেন্দ্র সরকার ও বিচারপতি এএনএম বশিরউল্লাহ সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে এই রায় দেয়া শুরু হয়। আদালতে শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমএ মান্নান মোহন।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমরা আজকে (রোববার) যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করেছি। আদালত এরপরে দুপুর ১২টা থেকে রায় দেয়া শুরু করেন। দিনের কার্যক্রম শেষ হওয়া পর্যন্ত মামলার বিভিন্ন অংশ পর্যালোচনা করে রায় ঘোষণা করেন আদালত। আদালত রায়ের বাকি অংশ সোমবার ঘোষণা করবেন বলে জানান তিনি।

যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের বিষয়ে তিনি বলেন, এ মামলায় নিহতের স্ত্রী মডেল কন্যা সুমাইয়া কানিজ সাগরিকা, আলী আশরাফ লিটন, ইব্রাহিম ওরফে ইয়াছিন, হিজড়া খলিল, আল আমিন ও খলিল শেখের ১৬৪ ধারায় দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। মামলার আলামতগুলো সবই আসামীদের বিপক্ষে ছিলো। এছাড়া ঘটনায় সাক্ষ্য দেয়া সাক্ষীদের বক্তব্যের ওপর ভিত্তি করে আমরা আদালতের কাছে সর্বোচ্চ সাজার আবেদন করেছি।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০১০ সালের ২২ জুন জাহাঙ্গীর আলম হত্যা মামলায় নিহতের স্ত্রী মডেল সুমাইয়া কানিজ সাগরিকাসহ ৬ আসামির ফাঁসির আদেশ দেন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামিরা হলো আলী আশরাফ লিটন, ইব্রাহিম ওরফে ইয়াছিন, হিজড়া খলিল, আল আমিন ও খলিল শেখ, সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় পলাতক অপর আসামি ইসমাইল হোসেনকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়। আসামিরা রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আসলে ওই বিষয়ে ৮ নভেম্বর শুনানি শুরু হয়।

মামলার এজাহারে দেখা যায়, নিহত জাহাঙ্গীর আলম শ্যামপুর থানার শ্মশানঘাট এলাকায় লোহার ব্যবসা করতেন। ঘটনার দিন সে তার ভাড়া বাসায় ৩ মেয়ে, গৃহকর্মী ও স্ত্রী সাগরিকাসহ ঘুমিয়ে ছিলেন। ২০০৮ সালের ৪ নভেম্বর ভোর ৪ টার দিকে নিহতের পিতা ফিরোজ আলম খবর পান জাহাঙ্গীর আলম খুন হয়েছে। খবর পেয়ে দ্রুত তিনি ঘটনাস্থলে এসে জাহাঙ্গীর আলমের রক্তাক্ত লাশ দেখতে পান। বাদী ঘটনা সম্পর্কে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সাগরিকাকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান বন্ধ ঘরে জাহাঙ্গীর আলমকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। সাগরিকাকে আরও জিজ্ঞাসা করা হয় কারা হত্যা করেছে জিজ্ঞাসা করলে সে নিশ্চুপ থাকে।

এজাহারে আরও বলেন, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাগরিকা নাটক করত। ভিকটিম জীবিত থাকা অবস্থায় সাগরিকা বিভিন্ন পুরুষের সঙ্গে অবাধে মেলামেশা করত। একবার অন্য পুরুষের সঙ্গে চলেও গিয়েছিল। তার এই অবৈধ মেলামেশায় বাধা দেয়ার কারণে ভাড়াটে খুনি দিয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়।

হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের পিতা ফিরোজ আলম বাদী হয়ে শ্যামপুর থানায় ৭ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ২০০৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর শ্যামপুর থানার এসআই শাহজাহান ঘটনা তদন্ত করে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশীট দাখিল করেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাগরিকাসহ ৫ আসামি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দী দেন।

এফএইচ/এএইচ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।