মুসা ম্যানশনে অগ্নিকাণ্ড : দুই কেমিক্যাল ব্যবসায়ী রিমান্ডে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:০০ পিএম, ২৭ এপ্রিল ২০২১

রাজধানীর পুরান ঢাকার আরমানিটোলায় হাজী মুসা ম্যানশন ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় করা মামলায় দুই কেমিক্যাল ব্যবসায়ীর তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। তারা হলেন- ভবনটির নিচতলার ভাড়াটিয়া ব্যবসায়ী মোস্তাফিজুর রহমান (৪২) ও মোহাম্মদ মোস্তফা (৪৫)।

মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) তাদের ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাদের ১০ দিনের রিমান্ড চায় পুলিশ। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম আবু সুফিয়ান মোহাম্মদ নোমান তাদের তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে সোমবার (২৬ এপ্রিল) ভোরে আরমানিটোলায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় করায় মামলার দুই নম্বর আসামি মোস্তাফিজুর রহমানকে বগুড়ার নন্দীগ্রাম থেকে এবং তিন নম্বর আসামি মোহাম্মদ মোস্তফাকে রাজধানীর উত্তরা থেকে গ্রেফতার করে র‍্যাব-১০ ও র‍্যাবের গোয়েন্দা বিভাগ।

বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) দিবাগত রাত ৩টার দিকে হাজী মুসা ম্যানশনের নিচতলায় আগুন লাগে। সকাল ৯টার পর আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে। এতে চারজন অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান। আর দগ্ধ অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন ২১ জন। এ ঘটনায় রাজধানীর বংশাল থানায় মুসা ম্যানশনের মালিক মোস্তফাসহ আটজনের নামে একটি মামলা করে পুলিশ। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ১৫-২০ জনকে আসামি করা হয়।

মামলাটি করেন বংশাল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ আলী শিকদার। মামলার অন্য আসামিরা হলেন- মোস্তাক আহমেদ চিশতি, মোস্তাফিজুর রহমান, মোস্তফা, গাফফার, সাইদ, ফিরোজ, তারেক ও বাপ্পী।

মামলার বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে হাজী মুসা ম্যানশনের নিচতলায় আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি টিম প্রায় সাড়ে ছয় ঘণ্টা চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা থানা পুলিশের সহায়তায় বিল্ডিংয়ের ভেতরে ঢুকে আহত অবস্থায় ২১ জনকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য দ্রুত শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে বিল্ডিং তল্লাশি করে ৩ জন পুরুষ ও একজন নারীর মরদেহ উদ্ধার করে ব্যবস্থা নিতে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগে পাঠানো হয়। হাসপাতালের মর্গে মৃত রাসেল (২৮), সুমাইয়া (২২), অলিউল্লাহ (৪৫) ও কবিরের (৪০) মৃতদেহের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ণয়ের জন্য মৃতদেহ ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হয়।

‘মুসা ম্যানশনের মালিক মোস্তফা আহম্মেদসহ অন্যান্য কেমিক্যাল ব্যবসায়ীরা মুসা ম্যানশনের নিচতলায় দাহ্য পদার্থ এবং কেমিক্যাল সংরক্ষণের জন্য দোকান/গোডাউন হিসেবে তাচ্ছিল্যভাবে ব্যবহার করে। কেমিক্যালের দোকান/গোডাউনের আগুন লাগার ফলে কেমিক্যালের বিষাক্ত ধোঁয়ায় শ্বাসরুদ্ধ হয়ে ও আগুনে দগ্ধ হয়ে ৪ জনের মৃত্যু হয়। উক্ত বাড়িতে বসবাসরত আবাসিক ভাড়াটিয়াদের বিভিন্ন আসবাবপত্র আগুনে পুড়ে ও ভাঙচুর হয়ে আনুমানিক ৫০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। আসামিরা তাচ্ছিল্যভাবে মানুষের জীবন বিপন্ন হতে পারে জেনেও অবৈধভাবে লাভবান হওয়ার জন্য আবাসিক স্থলে দাহ্য পদার্থ ও কেমিক্যাল সংরক্ষণের জন্য দোকান/গোডাউন ব্যবহার করে অবহেলার ফলে মৃত্যু ঘটিয়ে ও ক্ষতিসাধন করে পেনাল কোড আইনের ৩০৪-ক/৩৩৭/৪২৭ ধারায় অপরাধ করেছে।’

জেএ/এসএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।