রবি ও এয়ারটেল নিয়ে হাইকোর্টের রুল


প্রকাশিত: ০৯:২৭ এএম, ২৯ নভেম্বর ২০১৫

কমিশনের মাধ্যমে বেসরকারি মোবাইল অপারেটর রবি ও এয়ারটেলের একীভূত হওয়ার আবেদনের নিষ্পত্তি কেন করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। এয়ারটেল গ্রাহকের করা রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে রোবাবর হাইকোর্টের বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি ফরিদ আহমদ শিবলীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।

রুলে আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, বাণিজ্য সচিব, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা (কমপিটিশিন) কমিশনের সচিব, টেলিকম সচিব, বিটিআরসি চেয়ারম্যান এবং রবি ও এয়ারটেল কর্তৃপক্ষকে জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আদালতে আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ইউসুফ আলী এবং তার সঙ্গে ছিলেন উজ্জল হোসেন। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমাতুল করীম।

আইনজীবী উজ্জল হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, “দুই কোম্পানির একীভূত হওয়ার বিষয়টি সরকার অনুমোদন করলে বাংলাদেশের মোবাইল ফোনের মার্কেট শেয়ারের ৯৬ শতাংশ চলে যাবে তিনটি কোম্পানির হাতে। এতে নতুন বিনিয়োগকারীরা নিরুৎসাহিত হবে। প্রতিযোগিতা না থাকলে গ্রাহকরাও বঞ্চিত হবেন।”

ব্যবসার সুস্থ ও প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ তৈরির জন্য ২০১২ সালের জুন মাসে সরকার ‘প্রতিযোগিতা আইন’ করে প্রতিযোগিতা কমিশন গঠনের কথা বলা হয়। ওই কমিশনের জন্য সচিব নিয়োগ হলেও এখন পর্যন্ত চেয়ারম্যান নিয়োগ দেয়নি সরকার।

ব্যবসা একীভূত করার অনুমতি চেয়ে গত সেপ্টেম্বরে বিটিআরসি কাছে চিঠি দেয় রবি ও এয়ারটেল। চিঠিতে বলা হয়, একীভূত হওয়ার পর ৭৫ শতাংশ শেয়ার থাকবে মালয়েশিয়া ভিত্তিক আজিয়াটা গ্রুপ ও এনটিটি ডকোমার কাছে। বাকি ২৫ শতাংশ শেয়ার থাকবে ভারতীয় এয়ারটেলের কাছে।

চিঠিতে আরো বলা হয়, দুই অপারেটর একীভূত হওয়ার পর যৌথ গ্রাহকদের কোনো ধরনের অসুবিধা হবে না। এয়ারটেলের গ্রাহকদের নম্বর (০১৬.. দিয়ে শুরু) অপরিবর্তিত থাকবে। তবে তিন বছর পর থেকে ০১৬ দিয়ে নতুন সংযোগ দেওয়া হবে।

ওই চিঠি পাওয়ার পর দুই কোম্পানির একীভূত হওয়ার মাঠ পর্যায়ে বিশ্লেষণে করার সিদ্ধান্ত নেয় বিটিআরসি। একীভূত হওয়ার আর্থ-সামাজিক প্রভাব বিশ্লেষণ, কোনো প্রকার বিরূপ প্রভাব থাকলে তা থেকে উত্তরণের পদ্ধতি ও কৌশল নির্ধারণ, একীভূত হওয়ার কারণে কর্মসংস্থানের উপর প্রভাব, বিশেষ করে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরি সঙ্কোচন বা সম্প্রসারণের সম্ভবনা এবং একীভূত কোম্পানিতে যোগদানে অনিচ্ছুক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য স্বেচ্ছা অবসর স্কিমের (ভিআরএস) মতো বিষয় ওই সমীক্ষায় থাকবে বলে গত ২৩ নভেম্বর বিটিআরসির পক্ষ থেকে জানানো হয়।

এশিয়ার বড় টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানিগুলোর মধ্যে মালয়েশিয়ার আজিয়াটা অন্যতম। মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশের পাশাপাশি ক্যাম্বোডিয়া, ভারত ও সিঙ্গাপুরেও তাদের ব্যবসা রয়েছে। বাংলাদেশে ৮ হাজার ১১৯টি সাইটের মাধ্যমে টেলিযোগাযোগ সেবা দিচ্ছে রবি, যাদের গ্রাহক সংখ্যা অক্টোবরের হিসেবে ২ কোটি ৮২ লাখ।

অপরদিকে ভারতীয় এয়ারটেলের বাংলাদেশে বিনিয়োগ শুরু হয় ২০১০ সালে। তারা ওয়ারিদের ব্যবসা বাংলাদেশে কিনে নিয়েছিল। প্রথমে ৭০ শতাংশ ও তিন বছর পর ওয়ারিদের কাছে থাকা বাকি ৩০ শতাংশ শেয়ারও কিনে নেয় সিঙ্গাপুরে ভারতীয় এয়ারটেলের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ভারতী এয়ারটেল হোল্ডিংস লিমিটেড।

বাংলাদেশে ব্যবসা বাড়াতে তারা আশাবাদী হলেও শেষ পর্যন্ত তা হয়ে ওঠেনি। ৯৯ লাখ গ্রাহক নিয়ে বর্তমানে ছয়টি মোবাইল ফোন অপারেটরের মধ্যে এয়ারটেল বাংলাদেশে চতুর্থ। রবি ও এয়ারটেল একীভূত হলে নতুন কোম্পানির মোট গ্রাহক হবে ৩ কোটি ৮০ লাখের মতো।

এফএইচ/আরএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।