মুসা ম্যানশনে চারজন মারা যান কেমিক্যালের বিষাক্ত ধোঁয়ায়

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:২৯ পিএম, ২৪ এপ্রিল ২০২১

রাজধানীর পুরান ঢাকার আরমানিটোলার হাজী মুসা ম্যানশনের মালিক মোস্তফা আহম্মেদসহ অন্যান্য কেমিক্যাল ব্যবসায়ীরা ম্যানশনের নিচতলায় দাহ্য পদার্থ ও কেমিক্যাল সংরক্ষণের জন্য দোকান/গোডাউন হিসেবে তাচ্ছিল্যভাবে ব্যবহার করে। কেমিক্যালের দোকান/গোডাউনে আগুন লাগার ফলে কেমিক্যালের বিষাক্ত ধোঁয়ায় শ্বাসরুদ্ধ হয়ে ও আগুনে দগ্ধ হয়ে রাসেল, সুমাইয়া, অলিউল্লাহ ও কবিরের মৃত্যু হয়।

বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে হাজী মুসা ম্যানশনের নিচতলায় আগুন লাগে। সকাল ৯টার পর আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে। এতে চারজন অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান। আর দগ্ধ অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন ২১ জন। এ ঘটনায় রাজধানীর বংশাল থানায় মুসা ম্যানশনের মালিক মোস্তফাসহ আটজনের নামে একটি মামলা করে পুলিশ। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরো ১৫-২০ জনকে আসামি করা হয়। মামলাটি করেন বংশাল থানার এসআই মোহাম্মদ আলী শিকদার।

মামলার এজাহারে এসব কথা উল্লেখ করেছেন মামলার বাদী।

মামলার অপর আসামিরা হলেন- মোস্তাক আহমেদ চিশতি, মোস্তাফিজুর রহমান, মোস্তফা, গাফফার, সাইদ, ফিরোজ, তারেক ও বাপ্পী।

মামলার বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে হাজী মুসা ম্যানশনের নিচতলায় আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি টিম প্রায় সাড়ে ছয় ঘণ্টা চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা থানা পুলিশের সহায়তায় বিল্ডিংয়ের ভেতর প্রবেশ করে আহত অবস্থায় ২১ জনকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য দ্রুত শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ণ ও প্লাস্টিক সাজারি ইনস্টিটিউটে প্রেরণ করি। পরবর্তী বিল্ডিং তল্লাশি করে ৩ জন পুরুষ ও একজন নারীর মরদেহ উদ্ধার করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিভাগীয় প্রধান স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগে প্রেরণ করি। হাসপাতালের মর্গে মৃত রাসেল(২৮), সুমাইয়া(২২), অলিউল্লাহ (৪৫) ও কবিরের (৪০) মৃতদেহের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ণয়ের জন্য মৃতদেহ ফরেনসিক বিভাগে প্রেরণ করি।

‘মুসা ম্যানশনের মালিক মোস্তফা আহম্মেদসহ অন্যান্য কেমিক্যাল ব্যবসায়ীরা মুসা ম্যানশনের নিচতলায় দাহ্য পদার্থ এবং কেমিক্যাল সংরক্ষণের জন্য দোকান/গোডাউন হিসেবে তাচ্ছিল্যভাবে ব্যবহার করে। কেমিক্যালের দোকান/গোডাউনের আগুন লাগার ফলে কেমিক্যালের বিষাক্ত ধোঁয়ায় শ্বাসরুদ্ধ হয়ে ও আগুনে দগ্ধ হয়ে ৪ জনের মৃত্যু হয়। উক্ত বাড়িতে বসবাসরত আবাসিক ভাড়াটিয়াদের বিভিন্ন আসবাবপত্র আগুনে পুড়ে ও ভাঙচুর হয়ে আনুমানিক পঞ্চাশ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। উক্ত আসামিরা তাচ্ছিল্যভাবে মানুষের জীবন বিপন্ন হতে পারে জেনেও অবৈধভাবে লাভবান হওয়ার জন্য আবাসিক স্থলে দাহ্য পদার্থ ও কেমিক্যাল সংরক্ষণের জন্য দোকান/গোডাউন ব্যবহার করে অবহেলার ফলে মৃত্যু ঘটাইয়া ও ক্ষতিসাধন করে পেনাল কোড আইনের ৩০৪-ক/৩৩৭/৪২৭ ধারায় অপরাধ করেছে।’

জেএ/এমএইচআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।