চিকিৎসক-পুলিশের পাল্টা বিবৃতি, এমন আচরণ কাম্য নয় : হাইকোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২:৩২ পিএম, ২০ এপ্রিল ২০২১

চলমান লকডাউনে রাস্তার ‘মুভমেন্ট পাস’ নিয়ে চিকিৎসক, ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশের বাগবিতণ্ডার ঘটনায় দুই পেশাজীবী সংগঠনের পাল্টাপাল্টি বিবৃতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।

আদালত বলেছেন, ওই ঘটনায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পাল্টাপাল্টি বিবৃতি দেয়া সমীচীন হয়নি। তাদের এমন আচরণ অনাকাঙ্ক্ষিত। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছে এমন আচরণ কাম্য নয়।

মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এমন মন্তব্য করেন।

আদালতে আজ আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ চিকিৎসক-পুলিশের পাল্টাপাল্টি বিবৃতি নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন তুলে ধরেন। আদালত এ সময় ইউনুছ আলী আকন্দকে বলেন, ‘গতকালও (সোমবার) আপনি এ বিষয় নিয়ে এসেছিলেন। আপনি তো সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি নন। আপনি কেন এসেছেন?’

এ সময় ইউনুছ আলী আকন্দ বলেন, ‘আমার মেয়েও একজন চিকিৎসক। আত্মীয়-স্বজনের মধ্যেও চিকিৎসক রয়েছেন।’

এসময় অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘আনফরচুনেটলি ওই ঘটনা ঘটেছে।’ তখন আদালত উভয়পক্ষের উত্তেজনা প্রশমনে ভূমিকা রাখতে বলেন।

এর আগে গত রোববার (১৮ এপ্রিল) লকডাউনের পঞ্চম দিনে রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে মুভমেন্ট পাস নিয়ে বাগবিতণ্ডায় জড়ান চিকিৎসক, ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ কর্মকর্তা। ভিডিওতে দেখা যায়, দুপুরে এলিফ্যান্ট রোডের বাটা সিগন্যালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সাঈদা শওকত জেনি ভ্রাম্যমাণ আদালতের চেকে পড়েন।

সেখানে ঢাকা জেলা প্রশাসন অফিসের সহকারী কমিশনার শেখ মো. মামুনুর রশিদ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছিলেন। নিউমার্কেট থানার একজন পরিদর্শকের নেতৃত্বে একাধিক পুলিশ সদস্য সেখানে দায়িত্বরত ছিলেন।

চেকপোস্টে পুলিশ সদস্যরা চিকিৎসকের কাছে তার আইডি কার্ড দেখতে চান। তখন আইডি কার্ড সঙ্গে আনেননি বলে জানান ওই চিকিৎসক। এরপর তার কাছে মুভমেন্ট পাস দেখতে চাওয়া হয়। জেনি জানতে চান, ডাক্তারের মুভমেন্ট পাস লাগে?

এরপর জেনি তার গাড়িতে বিএসএমএমইউ স্টিকার ও হাসপাতাল থেকে পাওয়া তার লিখিত পাস দেখান। এরপরও পুলিশ তার কাছে আইডি কার্ড দেখতে চান। পরে তাদের মধ্যে বাগবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। পরে এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।

পরে ওই ঘটনায় গত ১৯ এপ্রিল বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন নিজ মন্ত্রণালয়ের বৈধ আদেশ লঙ্ঘন এবং ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়ে বিবৃতি দেয়।

বিবৃতিতে সই করেন অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট ও ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম এবং অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম।

অন্যদিকে চিকিৎসকদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে লেখা এক চিঠিতে এলিফ্যান্ট রোডে চিকিৎসককে হেনস্তায় জড়িতদের দ্রুত চিহ্নিত করে বিভাগীয় শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে।

ভবিষ্যতে এ ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে দূরে থাকার জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেয়ারও অনুরোধ জানায় সংগঠনটি। বিএমএ সভাপতি মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন এবং মহাসচিব মো. ইহতেশামুল হক চৌধুরী ওই চিঠিতে সই করেন।

এফএইচ/এমআরআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।