অর্থ আত্মসাৎ : সাঈদীর অভিযোগ গঠন বাতিলের শুনানি ১ এপ্রিল
জাকাতের অর্থ আত্মসাতের মামলায় মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন বাতিল চেয়ে করা আবেদন শুনানি ‘নট টুডে’ করেছেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ১ এপ্রিল পরর্বর্তী দিন ধার্য করা হয়েছে।
এ বিষয়ে শুনানির নির্ধারিত দিন বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার মো. সরোয়ার হোসেন বাপ্পী। আদালতে আজ তিনি রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন। অন্যদিকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন মো. খুরশিদ আলম খান। মাওলানা সাঈদীর পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট এ জে মোহাম্মদ আলী। তার সঙ্গে ছিলেন মো. মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন।
গত ৪ ফেব্রুয়ারি মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন বাতিল চেয়ে করা আবেদন শুনানি শুরু হয়। এ বিষয়ে আরও শুনানির জন্য আজ (১১ ফেব্রুয়ারি) ধার্য দিন হাইকোর্ট এই আদেশ দেন।
এর আগে জাকাতের অর্থ আত্মসাতের মামলায় দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের বিষয়টি বাতিল চেয়ে গত ৩১ জানুয়ারি হাইকোর্টে আবেদন করা হয়। হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আবেদন করেন আইনজীবী মো. মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন।
তিনি বলেন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের (ইফার) জাকাতের অর্থ আত্মসাতের মামলায় বিচারিক আদালতে সাঈদীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ বাতিল এবং অভিযোগ থেকে অব্যাহতি চেয়ে এ আবেদন করা হয়েছে।
এর আগে গত ১১ জানুয়ারি রাজধানীর পুরান ঢাকার বকশীবাজারে স্থাপিত অস্থায়ী ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১-এর বিচারক সৈয়দা হোসনে আরা অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন। একই সঙ্গে এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর জন্য আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন আদালত।
মামলায় দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীসহ মোট ছয়জন আসামি রয়েছেন। অপর পাঁচ আসামি হলেন- ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ লুৎফুল হক, মসজিদ কাউন্সিল ফর কমিউনিটি অ্যাডভান্সমেন্টের সাবেক চেয়ারম্যান মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, বন্ধুজন পরিষদের প্রধান সম্পাদক মিয়া মোহাম্মদ ইউনুস, ইসলামী সমাজ কল্যাণ কেন্দ্রের সাবেক সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মসজিদ কাউন্সিলের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল হক।
আসামিদের মধ্যে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী কারাগারে আছেন। আবুল কালাম আজাদ ও আব্দুল হক পলাতক রয়েছেন। অপর তিন আসামি জামিনে রয়েছেন। এ মামলায় সাতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছিল। তবে সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মোশাররফ হোসেন শাহজাহান মারা যাওয়ায় তাকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের জাকাত তহবিলের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে সংস্থাটির সাবেক পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) আইয়ুব আলী চৌধুরী ২০১০ সালের ২৪ মে শেরেবাংলা নগর থানায় এ মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে দুদকের সহকারী পরিচালক ওয়াজেদ আলী গাজী ২০১২ সালের ৩০ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
মামলার নথি অনুযায়ী, জাকাতের ১ কোটি ২৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে ২০১০ সালে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অর্থ ও হিসাব বিভাগের তৎকালীন পরিচালক আইয়ুব আলী চৌধুরী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
মুক্তিযুদ্ধকালীন সংঘটিত হত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এর আগে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে ২০১০ সালের ২৯ জুন সাঈদীকে গ্রেফতার করা হয়। পরে একই বছরের ২ আগস্ট মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। এরপর থেকে তিনি কারাগারেই আছেন।
এফএইচ/এমএসএইচ/জিকেএস