মুজাহিদের রায় বুধবার


প্রকাশিত: ০৬:১২ এএম, ১৭ নভেম্বর ২০১৫

মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের ফাঁসির রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদনের শুনানির রায় আগামীকাল বুধবার।

মঙ্গলবার দুপুরে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বিভাগের বেঞ্চ আসামি ও রাষ্ট্র উভয়পক্ষের শুনানি শেষে রায়ের জন্য এই দিন ধার্য করেন।

বেঞ্চের অন্যান্য সদস্যরা হলেন- বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। আদালতে মুজাহিদের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন,উপস্থিত ছিলেন- আইনজীবী  এসএম শাহজাহান ও মোহাম্মদ শিশির মনির। এসময় আদালতে আরো উপস্থিত ছিলেন, মুজাহিদের ছেলে আহমেদ মাবরুর।

অপরদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম,উপস্থিত ছিলেন-  অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মমতাজ উদ্দিন ফকির, ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু ও জ্যেষ্ঠ সদস্য প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী।

এর আগে সকাল ৯টা ৫ মিনিটে সুপ্রিমকোর্টের তালিকায় প্রথমে থাকা অন্য একটি মামলার আদেশ দেন। তার কয়েক মিনিট পরেই  রিভিউ আবেদনের শুনানি শুরু হয়।

প্রথমে মুজাহিদের পক্ষে যুক্তিতর্ক তুলে ধরে প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপি শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন। এরপর ১০টা ৫৫ মিনিটে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানি শুরু করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। সকাল ১১টায় আধা ঘণ্টার জন্য শুনানিতে বিরতি দিয়ে বেলা সাড়ে ১১টায় আবারও রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন অ্যার্টনি জেনারেল। তিনি ১২ টার সময় যুক্তি উপস্থান শুরু করলে আদালত রায় ঘোষণা জন্য বুধবার দিন ঠিক করেন।

আদালতে খন্দকার মাহবুব তার যুক্তিতে বলেন, জেরায় তদন্ত কর্মকর্তা নির্দ্বিধায় স্বীকার করেছেন যে, তার তদন্তকালে রাজাকার, আলবদর, আল-শামস বা শান্তি কমিটির সংশ্লিষ্ট কোনো তালিকায় আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের নাম ছিল মর্মে তিনি কোনো প্রমাণ পাননি। তাহলে আদালত কিসের ভিত্তিতে তাকে আলবদরের কমান্ডার সাব্যস্ত করলেন?

এছাড়া আদালতে মুনতাসির মামুন সম্পাদিত ‘দি ভ্যাঙ্কুইশড জেনারেলস’ রেফারেন্স দিয়ে বলা  হয়- এই বইয়ে রাও ফরমান আলী এবং জেনারেল এ এ কে নিয়াজি স্বীকার করেছেন যে, আলবদর বাহিনী সরাসরি আর্মির কমান্ডে এবং কন্ট্রোলে পরিচালিত হতো। প্রশ্ন হলো মুজাহিদ একজন ছাত্রনেতা হয়ে কিভাবে এই বাহিনীর কমান্ডার হলেন?

খন্দকার মাহবুব তার যুক্তিতে আরো বলেন, বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড নিয়ে ১৯৭২ সালে দালাল আইনে ৪২টি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। এর একটিতেও মুজাহিদকে আসামি করা হয়নি। রাষ্ট্রপক্ষ এই মামলাগুলোর নথি আদালতে উপস্থাপন করেনি। অথচ ৪২ বছর পর কিভাবে এই হত্যাকাণ্ডের সব দায়-দায়িত্ব তার ওপর চাপানো হয়েছে?

আদালতে শুনানির সময় শতাধিক আইনজীবী ও দেশি-বিদেশি মিডিয়ার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে গত ১৪ অক্টোবর ফাঁসির দণ্ড থেকে খালাস চেয়ে রিভিউ আবেদন দাখিল করেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ। মোট ৩৮ পৃষ্ঠার রিভিউ আবেদনে ৩২টি যুক্তি দেখিয়ে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি ও মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস চান মুজাহিদ।

এফএইচ/আরএস/জেডএইচ/এমএস/এসকেডি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।