ট্রেনে নারীদের জন্য আলাদা কামরা বরাদ্দের নির্দেশনা চেয়ে রিট

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:৪৫ এএম, ১৪ জানুয়ারি ২০২১
ফাইল ছবি

নারীদের নিরাপদে রেল ভ্রমণের জন্য ট্রেনে তাদের জন্য আলাদা কামরা বরাদ্দের বাস্তবায়ন চেয়ে রিট আবেদন করা হয়েছে। জনস্বার্থে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. আজমল হোসেন খোকন।

সেই সঙ্গে নারীরা যাতে নিরাপদে ভ্রমণ করতে পারেন, সেজন্য ট্রেনে তাদের জন্য আলাদা কামরা বরাদ্দের বাস্তবায়ন চেয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের প্রতি রিটে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।

রিটে রেল মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক ও রেলওয়ে পরিদর্শককে বিবাদী করা হয়েছে।

রিট করার বিষয়টি জাগো নিউজকে আইনজীবী মো. আজমল হোসেন খোকন নিজে নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বুধবার (১৩ জানুয়ারি) এ রিট আবেদন করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহের যেকোনো দিনে হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হতে পারে।

সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী বলেন, ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের আইন অনুযায়ী নারীদের জন্য আলাদা কামরা বরাদ্দ দেয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে। তারপরও তাদের জন্য আলাদা কোনো কামরা বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে না। আমি শুধু রেলের সেই নিয়মটি বাস্তবায়ন চাই। কারণ ট্রেনে ভ্রমণ অত্যন্ত আরামদায়ক। কিন্তু কোনো নারী যদি একা টেনে যাতায়াত করতে চায়, তাহলে প্রচণ্ড ভিড় ঠেলে রেল গাড়িতে ওঠা যেমন কষ্টকর, তেমনি শতশত পুরুষের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি করে ট্রেনের কামরার ভেতরে আসন পর্যন্ত গিয়ে সিটে বসাটাও টাফ হয়ে যায়।’

মো. আজমল হোসেন খোকন বলেন, ‘যেসব নারীরা দুধের শিশু নিয়ে ট্রেনে ওঠেন, তারা নির্দ্বিধায় তার শিশুকে দুধ পান করাতে পারেন না। কারণ শত শত নারী-পুরুষের ঠাসা রেলের কামরায় নিজে যেখানে বসতে অস্বস্তিবোধ করেন, সেখানে শিশুদের দুধ পান করানো আরও কঠিন। তাই আলাদা কামরা বরাদ্দ হলে শিশুদের দুধ পান করাতে তাদের কোনো সমস্যা হবে না।’

আইনজীবী আজমল বলেন, ‘রাতে কোনো নারী একা ট্রেনে ভ্রমণ করতে চাইলে তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন। তাই নারীদের জন্য আলাদা কামরা বরাদ্দ দিলে দিনে কিংবা রাতে নারীরা তাদের কামরায় নির্দ্বিধায় উঠে তাদের আসনে বসতে পারবেন। এতে তাদের নিরাপত্তা নিয়ে ঝুঁকিও কমবে। এছাড়া ট্রেনে ভ্রমণের সময় যদি নামাজের সময় হয়, তখন তারা নিয়মিত সেখানে নামাজও আদায় করতে পারবেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিটি ট্রেনে নারীদের জন্য পৃথক একটি কামরার কথা বলা থাকলেও সেটি কোনো ট্রেনে বাস্তবায়ন না হওয়ায় এর আগে নারীদের জন্য আলাদা কামরা বরাদ্দ চেয়ে ২০২০ সালে ১৩ অক্টোবর রেল মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি একটি (আইনি) লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছিলাম। নোটিশে বলা হয়েছিল, বাংলাদেশ রেলওয়ে আইন, ১৮৯০’ এর ৬৪ ধারায় নারীদের জন্য একটি কামরা বরাদ্দ রাখার বিধান থাকলেও এখন পর্যন্ত আইনটি বাস্তবায়ন হয়নি। এজন্য লিগ্যাল নোটিশটি পাঠানো হলো।’

নোটিশ পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছিল। অন্যথায় বিষয়টির প্রতিকার চেয়ে উচ্চ আদালতে রিট করা হবে বলেও উল্লেখ করেছিলেন এই আইনজীবী। লিগ্যাল নোটিশের পরেও কোনো ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় হাইকোর্টের প্রতিকার চেয়ে রিট আবেদন করা হয়েছে।

এফএইচ/এমআরআর/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।