দল থেকে সাঈদ খোকনকে বহিষ্কারের দাবি আওয়ামীপন্থী আইনজীবীদের

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:১৩ পিএম, ১০ জানুয়ারি ২০২১

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সব পর্যায়ের পদ থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনের পদত্যাগ দাবি করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা। এ সময় সাঈদ খোকনের বিরুদ্ধে আইনজীবীরা স্লোগান দিতে থাকেন।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক অ্যাডভোকেট ড. মোমতাজ উদ্দিন মেহেদীর সভাপতিত্বে আইনজীবী একেএম তৌহিদুর রহমানের সঞ্চালনায় সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে উপস্থিত আইনজীবীদের মধ্যে বক্তৃতা দেন- পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো. বশির উল্লাহ, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হুমায়ুন কবির, ব্যারিস্টার মো. সাজ্জাদ, ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন, সুপ্রিম কোর্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মোহাম্মদ বাকের উদ্দিন ভূঁইয়া, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মফিজ উদ্দিন, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল হাসিনা মমতাজ, নূরে আলম উজ্জ্বল, তাসনিম সিদ্দিকী লিনা, শামীম সরদার, মোছা পরভীন আক্তার, ঢাকা দক্ষিণের আওয়ামী আইন বিষয়ক উপদেষ্টা জগলুল কবির, আবুল কালাম আজাদ, শেখ মোহাম্মদ মাজু, মো. ফরাজি, আব্দুর রাজ্জাক রাজু, অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্জ, মহি উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ। এছাড়া সংগঠনের ভাইস প্রেসিডেন্ট মনিরুজ্জামান এবং আবু হানিফ বক্তৃতা করেন।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, ‘কেউ যদি ব্যক্তিগত আক্রোশের বশবর্তী হয়ে কোনো কিছু বলে থাকেন, সেটার জবাব আমি দায়িত্বশীল পদে থেকে দেয়াটা সমীচীন মনে করি না।’

রোববার (১০ জানুয়ারি) সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন শেখ ফজলে নূর তাপস।

এর আগে শনিবার (৯ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর জাতীয় ঈদগাহ ময়দান ও প্লেস ক্লাব সংলগ্ন কদম ফোয়ারার সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে উপস্থিত হয়ে শেখ ফজলে নূর তাপস ডিএসসিসির মেয়র পদে থাকার যোগ্য নন বলে দাবি করেন সংস্থাটির সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোহাম্মদ সাঈদ খোকন।

গুলিস্তান এলাকায় দুটি মার্কেটে উচ্ছেদ অভিযানে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা পুনর্বাসনের দাবিতে ওই মানববন্ধনের আয়োজন করেছিলেন।

jagonews24

সেখানে সাঈদ খোকন বলেন, ‘তাপস দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের শত শত কোটি টাকা তার নিজ মালিকানাধীন মধুমতি ব্যাংকে স্থানান্তর করেছেন। এই টাকা বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা তিনি লাভ করেছেন এবং করছেন।’

অন্যদিকে অর্থের অভাবে করপোরেশনের গরিব কর্মচারীরা মাসের পর মাস বেতন পাচ্ছেন না। সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প অর্থের অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে মেয়র তাপস সিটি করপোরেশন আইন ২০০৯, দ্বিতীয় ভাগের দ্বিতীয় অধ্যায়ের অনুচ্ছেদ ৯ (২) (জ) অনুযায়ী মেয়র পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন বলে তিনি দাবি করেন।

সাঈদ খোকন বলেন, ‘তাপস মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করার পর থেকেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে গলাবাজি করে চলছেন। আমি তাকে বলব, রাঘববোয়ালের মুখে চুনোপুটির গল্প মানায় না। দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন গড়তে হলে সর্বপ্রথম নিজেকে দুর্নীতিমুক্ত করুন। তারপর চুনোপুটির দিকে দৃষ্টি দিন।’

তিনি বলেন, ‘ফুলবাড়িয়া মার্কেটে সিটি করপোরেশন যে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেছে, সেটা নিয়ে আমি আগেও বলেছি এটা সম্পূর্ণভাবে অবৈধ। কারণ মহামান্য আদালত কর্তৃক নিদেশিত হয়ে, ব্যবসায়ীদের বৈধকরণের আবেদন নিষ্পত্তির লক্ষ্যে আমরা করপোরেশনের বোর্ডসভায় সর্বসম্মতিক্রমে আলোচিত মার্কেটগুলোর নকশা সংশোধন ও বকেয়া ভাড়া আদায় সাপেক্ষে বৈধ ব্যবসা পরিচালনার অনুমতি প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। বোর্ডসভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল বিভাগ নকশা সংশোধন করে এবং রাজস্ব বিভাগ সাত-আট বছরের বকেয়া ভাড়া আদায় করে ব্যবসায়ীদের বৈধভাবে ব্যবসা পরিচালনা করার অনুমতি দেয়।’

সাবেক মেয়র এই উচ্ছেদকে অবৈধ আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘আমরা আশ্চর্যের সঙ্গে লক্ষ করলাম, বিনা নোটিশে দক্ষিণ সিটি অবৈধ উচ্ছেদের মাধ্যমে বুলডোজার দিয়ে হাজার হাজার বৈধ দোকান গুঁড়িয়ে দিল এবং হাজার হাজার দোকান মালিক ও কর্মচারী সপরিবারে পথে বসে গেল। আমি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র হিসেবে এই অবৈধ উচ্ছেদের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’

এফএইচ/এমআরআর/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।