শ্বশুর হত্যার আসামির জামিন চেয়ে ফেঁসে গেলেন জামাই
চট্রগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার রমেন্দ্র পালিত (৬৫) হত্যা মামলার বাদী ছিলেন তার মেয়ের জামাই বিপ্লব খাস্তগীর। কিন্তু সম্প্রতি তিনি এ মামলার প্রধান আসামির জামিন চেয়ে আদালতে আপসনামা দাখিল করেন।
এ ঘটনায় উষ্মা প্রকাশ করে বিপ্লব খাস্তগীরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এই মামলার প্রধান আসামি মো. ফোরকানের জামিন শুনানিতে হাইকোর্টের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও মো. বদরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রোববার (৩ ডিসেম্বর) এই আদেশ দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো. বশির উল্লাহ। অন্যদিকে আসামি পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট জেড আই খান পান্না। তার সঙ্গে ছিলেন মো. রুহুল আমিন।
আদালতের এই আদেশের বিষয়ে সোমবার (৪ জানুয়ারি) সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন সংশ্লিষ্ট আদালতের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো. বশির উল্লাহ।
ড. বশির বলেন, ৬৫ বছরের বৃদ্ধ রমেন্দ্র পালিত চট্রগ্রামের হাটহাজারী মডেল থানার ফটিকছড়ি এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। চাকরি শেষে তিনি যে টাকা পেনশন পেয়েছিলেন তা একই এলাকার মো. ফোরকান নামে এক ব্যক্তিকে ধার দেন। এই টাকা ফেরত চাইলে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য শুরু হয়। সালিশ মিমাংসা করার পরেও বিয়য়টি সমাধান না হওয়াই এই বিরোধের জেরে ২০০৫ সালের ফোরকান রমেন্দ্র পালিতকে হত্যা করেন। পরে এ ঘটনায় রমেন্দ পালিতের মেয়ের জামাই বিপ্লব খাস্তগীর হাটহাজারী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ১৬৪ ধারায় মো. ফোরকান আদালতে জবানবন্দি দেন। তিনি কিভাবে রমেন্দ পালিতকে হত্যা করে পুতে রাখেন সেই বর্ণনা নিজেই আদালতে দেন। এ মামলায় ইতোমধ্যে তিনজন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
এই পর্যায়ে এসে মামলার বাদী বিপ্লব খাস্তগীর হাইকোর্টে আপসনামা দাখিল করে বলেন, ‘এই মামলা চালানোর আর আমাদের কোনো প্রয়োজন নেই। তাকে জামিন দিলেও আমাদের কোনো আপত্তি নেই।’
মো. ফোরকানের এই আপসনামা দেখে হাইকোর্ট উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। আদালত বলেছেন, ‘৩০২ ধারার অধীনে দায়েরকৃত কোনো মামলা আপস হতে পারে না। একটা হত্যাকাণ্ড হয়েছে। লাশ পাওয়া গেছে। ১৬৪ ধারায় আসামি স্বীকার করেছে যে, এইভাবে মানুষটাকে আমি হত্যা করেছি। এই মামলা আপস হয় কিভাবে?’
আদালত উষ্মা প্রকাশ করে আরও বলেছেন, ‘যেহেতু বাদী নিজেই আসামির জামিন চাচ্ছেন, আমরা জামিন দিলাম। কিন্তু বাদী মিথ্যা তথ্য দেয়ার কারণে হাটহাজারী থানাকে নির্দেশ দিচ্ছি বাদীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার জন্য।’
এফএইচ/এমআরআর/এমএস