শুরুতে জাহালম শেষে ভাস্কর্য
বিদায় নিচ্ছে ২০২০। দেশের বিচারাঙ্গনের ইতিহাসে এটি ঘটনাবহুল বছর। বেশকিছু আলোচিত বিষয় নিয়ে এ বছর দেশের সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্ট ছিল আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের নিরাপত্তা নিশ্চিতের নির্দেশ, জিকে শামীমের জামিন আবেদন, বাসচাপায় পা হারানো রাসেলকে ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ এবং বিনা অপরাধে তিন বছর জেল খাটা জাহালমকে ক্ষতিপূরণ দেয়ার আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল ছিল আলোচনায়।
এছাড়া বরগুনার রিফাত হত্যা মামলায় খালাস চেয়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির আপিল, বিদেশে অবস্থান করে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি সিকদার গ্রুপের দুই ভাইকে আদালতের সময় নষ্ট করার জন্য ১০ হাজার পিপিই জরিমানার আদেশও দেশবাসীর আগ্রহ-আলোচনার কেন্দ্রে ছিল। বিদায়ের লগ্নে ফিরে দেখা যাক ২০২০ সালে সর্বোচ্চ আদালতের আলোচিত ঘটনাগুলো।
ভাস্কর্য নিয়ে উসকানিদাতাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ
চলতি বছরের শেষে এসে ব্যাপক আলোচিত ইস্যু ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙচুর এবং ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতা। পরে এ ঘটনায় উসকানিদাতাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যসহ দেশের সব ভাস্কর্য রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের শুনানি নিয়ে গত ৮ ডিসেম্বর হাইকোর্টের বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ রুলসহ এই আদেশ দেন।
কুষ্টিয়া শহরের পাঁচরাস্তার মোড়ে পৌরসভার তত্ত্বাবধানে ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে বঙ্গবন্ধুর তিনটি ভাস্কর্য নির্মাণ করা হচ্ছে। এর একটির কাজ প্রায় শেষের দিকে ছিল। কিন্তু গত ৪ ডিসেম্বর দিবাগত রাত ২টার দিকে বঙ্গবন্ধুর একটি ভাস্কর্য ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা। পরে এ ঘটনায় জড়িত চারজনকে পুলিশ গ্রেফতার করে। তারা ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে বাবুনগরী ও মামুনুল হকের বক্তব্যে উদ্ধুদ্ধ হয়ে এই ভাঙচুর ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে স্বীকারোক্তি দেন। এরপর সেই ইস্যুতে রিট করলে আদালত এই আদেশ দেন।
আদালতের সময় নষ্ট করায় সিকদার গ্রুপের দুই ভাইকে পিপিই জরিমানা
এক্সিম ব্যাংকের দুই কর্মকর্তাকে নির্যাতন ও গুলি করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে সিকদার গ্রুপ অব কোম্পানিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রন হক সিকদার ও তার ভাই দিপু হক সিকদারের বিরুদ্ধে রাজধানীর গুলশান থানায় মামলা করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
মামলার বিবরণীতে বলা হয়, গত ৭ মে রন ও দিপু এক্সিম ব্যাংকের এমডি মুহাম্মদ হায়দার আলী মিয়া ও অতিরিক্ত এমডি মুহাম্মদ ফিরোজ হোসনেকে ডেকে নিয়ে একটি অ্যাপার্টমেন্টে বন্দি করে রাখেন। সেখানে তাদেরকে গুলি করে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়। পরে সাদা কাগজে সই নিয়ে তাদেরকে ছেড়ে দেন তারা। প্রস্তাবিত ঋণের টাকার বিপরীতে জমি পরিদর্শনের নামে তাদেরকে নিয়ে গিয়ে এ ঘটনা ঘটানো হয় বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়। মামলা হওয়ার বেশ কিছুদিন পর এই দুই ভাই এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে দেশ ছাড়েন।
রন হক সিকদার ও দিপু হক সিকদার
আদালত সূত্রে জানা যায়, ব্যাংক কর্মকর্তাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় গত ২ জুলাই বিদেশে বসে ই-মেইলের মাধ্যমে আগাম জামিন চেয়ে সংশ্লিষ্ট আদালতে আবেদন করেন রন ও দিপু সিকদার। তারা নির্বিঘ্নে দেশে ফিরতে জামিন আবেদন করেছিলেন। বিদেশে থেকে জামিন আবেদন করায় রন ও দিপুকে জামিন দেননি হাইকোর্ট। বরং আদালতের সময় নষ্ট করায় তাদেরকে ১০ হাজার পিপিই (ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী) জরিমানা করেন আদালত।
জি কে শামীমের জামিন বাতিল
অস্ত্র মামলায় যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীমকে দেয়া জামিন বাতিল করেছেন হাইকোর্ট। রাষ্ট্রপক্ষের রিকল আবেদনের শুনানি নিয়ে ৮ মার্চ (রোববার) হাইকোর্টের বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি এস এম মজিবুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ তার জামিন বাতিল করেন।
ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের মধ্যে ২০১৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর গুলশানের নিকেতনে গোলাম কিবরিয়া (জি কে) শামীমের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানেও অভিযান চালায় র্যাব। সে সময় ওই ভবন থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা, এফডিআর, আগ্নেয়াস্ত্র ও মদ উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
অভিযানকালে জি কে শামীম ও তার সাত দেহরক্ষীকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর তাদের বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা হয়। এর মধ্যে অস্ত্র আইনের মামলায় বিচার শুরু হয় গত ২৮ জানুয়ারি। পরে এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক আইনে দুটি মামলা হয়।
ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে গ্রেফতার জি কে শামীম
গত ৪ ও ৬ ফেব্রুয়ারি গোপনে হাইকোর্টের দুই বেঞ্চ থেকে ছয় মাসের জামিন নেন জিকে শামীম। জামিন পওয়ার প্রায় মাসখানেক পরে বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশ পায়। এরপর ৮ মার্চ সংশ্লিষ্ট হাইকোর্ট বেঞ্চ দুই মামলায় তার জামিন প্রত্যাহার করে আদেশ দেন।
রিফাত হত্যা মামলায় খালাস চেয়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মিন্নির আপিল
২০১৯ সালের বছরের ২৬ জুন সকালে বরগুনা সরকারি কলেজ রোডের ক্যালিক্স একাডেমির সামনে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে জখম করে সাব্বির আহমেদ ওরফে নয়ন বন্ড, মো. রাকিবুল হাসান রিফাত ওরফে রিফাত ফরাজী এবং তাদের সহযোগীরা। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি। বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রিফাত মারা যান। এ ঘটনায় পরের দিন ২৭ জুন রিফাতের বাবা আবদুল হালিম শরীফ ১২ জনের নাম উল্লেখ করে বরগুনা থানায় হত্যা মামলা করেন।
মামলায় প্রধান সাক্ষী করা হয় মিন্নিকে। পরে মিন্নির শ্বশুর হত্যাকাণ্ডে পুত্রবধূর জড়িত থাকার অভিযোগ তুললে আলোচনা নতুন মোড় নেয়। ১৬ জুলাই মিন্নিকে বরগুনার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে সেদিন রাতে তাকে রিফাত হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।
এরপর বিচার শেষে গত ৩০ সেপ্টেম্বর বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামান চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিসহ ছয় আসামির ফাঁসি দেন বিচারিক আদালত। বাকি চার আসামিকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়। বর্তমানে মিন্নিকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছে।
রিফাত হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি
রায়ের পরে আলোচিত এই ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মিন্নিসহ অন্যান্য আসামিরা খালাস চেয়ে হাইকোর্টে আপিল করেন। পরে ৪ নভেম্বর মিন্নি ও মোহাইমিনুল ইসলাম ওরফে সিফাতের খালাস চেয়ে করা আপিল গ্রহণ করেন হাইকোর্ট।
জাহালমের ক্ষতিপূরণের রায় স্থগিত চেয়ে ব্র্যাক ব্যাংকের আবেদন
২০১৯ সালের জানুয়ারিতে একটি জাতীয় দৈনিকে ৩৩ মামলায় ‘ভুল’ আসামি জেলে ‘স্যার, আমি জাহালম, সালেক না...’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অমিত দাশ গুপ্ত। এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তা, মামলার বাদীসহ চারজনকে তলব করেন হাইকোর্ট। এছাড়া রুলও জারি করেন। ৩ ফেব্রুয়ারি সংশ্লিষ্টরা হাজিরের পর হাইকোর্ট জাহালমকে মুক্তির নির্দেশ দেন।
পরে এ ঘটনায় জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানির শেষে ২০২০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর এক রায়ে হাইকোর্ট জাহালমকে ১৫ লাখ টকা ক্ষতিপূরণ দিতে ব্র্যাক ব্যাংকের প্রতি নির্দেশ দেন। পরে জাহালমের ক্ষতিপূরণে হাইকোর্টের দেয়া রায় স্থগিত চেয়ে আপিল আবেদন করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
আগুনে পুড়ে রোগীর মৃত্যু: ক্ষতিপূরণ থেকে বাঁচতে ইউনাইটেডের আপিল
রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালের মূল ভবনের বাইরে আইসোলেশন ইউনিটে আগুন লেগে গত ২৭ মে লাইফ সাপোর্টে থাকা কোভিড-১৯ ইউনিটের পাঁচ রোগীর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় আগুনে মৃত ব্যক্তিদের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা পৃথক চারটি রিট করেন।
এর শুনানি নিয়ে ১৫ জুলাই হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের ভার্চুয়াল বেঞ্চ ভুক্তভোগী পরিবারগুলোকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৩০ লাখ টাকা করে দিতে ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। ১৫ দিনের মধ্যে ভুক্তভোগী পরিবারগুলোকে ওই অর্থ দিতে বলা হয়। কিন্তু ক্ষতিপূরণ না দিয়ে হাইকোর্টের ওই আদেশ স্থগিত চেয়ে ইউনাইটেড কর্তৃপক্ষ আবেদন করে, যা ২১ জুলাই আপিল বিভাগের ভার্চুয়াল চেম্বারজজ আদালতে শুনানি হয়।
সেদিন চেম্বার জজ আদালত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে বিষয়টি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান। সেই সঙ্গে আবেদনকারীপক্ষকে (হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ) নিয়মিত লিভ টু আপিল করতে বলা হয়। পরে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ক্ষতিপূরণ, বিচারিক তদন্ত চেয়ে করা রিটগুলো নতুন করে হাইকোর্টের রিট বেঞ্চে উপস্থাপন করার আদেশ দেন। এর ফলে, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে ৩০ লাখ টাকা করে দিতে হাইকোর্টের দেয়া আদেশের কার্যকারিতা আপাতত নেই।
হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আবেদন নিষ্পত্তি করে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যর বিচারপতির আপিল বিভাগের ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ আদেশ দিয়েছিলেন।
ক্ষতিপূরণের সব টাকা পাননি বাসচাপায় পা হারানো রাসেল
রাজধানীর মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারে ২০১৮ সালের ২৮ এপ্রিল গ্রিন লাইন পরিবহনের ধাক্কায় প্রাইভেটকারচালক রাসেল সরকারের বাম পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এ ঘটনায় অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতি রিট করেন। রিটে হাইকোর্ট ওই বছরের ১৪ মে রুল জারি করেন। এ রুল বিবেচনাধীন থাকা অবস্থায় রাসেল সরকারকে চিকিৎসা ব্যয়সহ মোট ১৩ লাখ টাকা দেয় গ্রিনলাইন।
তবে রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ১ অক্টোবর তিন মাসের মধ্যে আরও ২০ লাখ টাকা পরিশোধ করতে গ্রিনলাইনকে নির্দেশ দেন আদালত। আইনজীবীরা বলেন, এ রায় নিয়ে গ্রিনলাইন কর্তৃপক্ষ আর আপিল করবে না বলে আইনজীবীর মাধ্যমে জানিয়েছে। তাই সর্বসম্মত জাজমেন্ট দিয়েছেন আদালত।
গ্রীন লাইনের বাসের চাপায় পা হারান রাসেল
এ বিষয়ে জারি করা রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি করে রায় ঘোষণার নির্ধারিত দিন ১ অক্টোবর হাইকোর্টের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রায় দেন। রায়ের পর গ্রিনলাইনের আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক বলেন, আগে রাসেল সরকারকে ১৩ লাখ ৪২ হাজার টাকা দিয়েছি। এটা সর্বসম্মতিক্রমে একটি রায়। এ কারণে গ্রিনলাইন এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবে না।
বায়ুদূষণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি হাইকোর্টের নির্দেশ
ঢাকার বায়ুদূষণ রোধে পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশনা চেয়ে মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে ২০১৯ সালের ২৭ জানুয়ারি হাইকোর্টে রিট করে। পরে বায়ু দূষণ রোধে ঢাকার রাজপথে পানি ছিটানোসহ বিভিন্ন নির্দেশনা দেন আদালত। এছাড়া ঢাকার আশপাশের জেলাগুলোতে থাকা অবৈধ ইটভাটা বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যে বলেন হাইকোর্ট।
তারই ধারাবাহিকতায় রাজধানীর বাতাস কী কারণে দূষিত হচ্ছে এবং দূষণ রোধে কী কী পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন সে বিষয়ে উচ্চ আদালতের নির্দেশনায় পরিবেশ সচিবের নেতৃত্বে গঠিত উচ্চ পর্যায়ের কমিটির কার্যক্রমের প্রতিবেদন ও অগ্রগতি দাখিল করার পর সেটি নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে, ঢাকার বায়ুদূষণের মাত্রা যেন নিয়ন্ত্রণে থাকে সে বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে পরিবেশ অধিদফতরসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতিও গত ২৪ নভেম্বর হাইকোর্ট নির্দেশ দেন।
ব্যারিস্টার জুম্মনের সনদ বৈধ ঘোষণা করে দেয়া রায় স্থগিত
বাংলাদেশ বার কাউন্সিল পরীক্ষায় কয়েকবার অংশ নিয়েও কৃতকার্য হতে পারেননি হাইকোর্টের বিচারপতির ছেলে মো. জুম্মান সিদ্দিকী। অথচ ২০১৯ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর তাকে সরাসরি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে ওই বছরের ৩১ অক্টোবর গেজেট প্রকাশ করা হয়। এরপর ২০১৯ সালের ২১ নভেম্বর আইনজীবী অন্তর্ভুক্তির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হওয়ার পরেও সরাসরি হাইকোর্টের আইনজীবী ঘোষণার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন ব্যরিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন ও ইশরাত হাসান।
ওই বছরের ১৮ ডিসেম্বর সরাসরি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে জারি করা গেজেটের কার্যক্রম স্থগিত করেন আদালত। একই সঙ্গে সরাসরি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে গেজেট প্রকাশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত।
এরপর ওই রুলের শুনানিতে মো. জুম্মন সিদ্দিকীকে সরাসরি আইনজীবী হিসেবে প্র্যাকটিসের সুযোগ দিয়ে বার কাউন্সিলের গেজেট চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিটটি গত ৮ নভেম্বর খারিজ করে রায় দিয়েছিলেন হাইকোর্টের বিচারপতি গোবিন্দ্র চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি মোহাম্মাদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ। রায়ে রিটকারী আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন ও ইশরাত হাসানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করেন এবং তাদের প্রত্যেককে ১০০ টাকা করে জরিমানা করা হয়।
এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন রিটকারী দুই আইনজীবী। পরে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হয়েও ব্যারিস্টার জুম্মন সিদ্দিকীকে সরাসরি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে বৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায় স্থগিত করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। নিয়মিত আপিল শুনানি না হওয়া পর্যন্ত হাইকোর্টের রায় স্থগিত থাকবে বলেও আদেশে বলেছেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। গত ১১ নভেম্বর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এফএইচ/এমআরআর/এমএসএইচ/এমকেএইচ