সফলভাবে থাকতে হলে সময়োপযোগী হতে হবে : আইনমন্ত্রী
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ‘সময় প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের চাহিদা, আচার-আচরণ, দাবি-দাওয়া, অপরাধের ধরন, পরিবেশ-পরিস্থিতি, যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ সব বিষয়ে প্রতিনিয়ত পরিবর্তন ঘটে। আজ যে অনলাইন প্রশিক্ষণ কোর্সের আয়োজন করা হয়েছে- এটিও কিন্তু এক ধরনের পরিবর্তনের ফসল।’
তিনি বলেন, ‘কোভিড-১৯ আমাদের এই অনলাইন প্রশিক্ষণ কোর্সের আয়োজন করতে বাধ্য করেছে, এমনকি আদালত কর্তৃক তথ্য-প্রযুক্তি আইন প্রণয়ন এবং ভার্চুয়াল কোর্ট চালু করতেও বাধ্য করেছে। আবার যিনি প্রি-কোভিড পরিস্থিতিতে নিজেকে সফলভাবে তৈরি করে নিয়েছিলেন তাকে কোভিড পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য নতুন করে ভাবতে হয়েছে, নতুন করে তৈরি হতে হচ্ছে। সুতরাং এই পরিবর্তনশীল পৃথিবীতে সফলভাবে টিকে থাকতে হলে সর্বনিম্ন পদ থকে শুরু করে সর্বোচ্চ পদে অধিষ্ঠিত সকলকে সময়োপযোগী, আধুনিক এবং বৈশ্বিক মানে উন্নীত হতে হবে। এজন্য প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই।’
রোববার (২২ নভেম্বর) বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে জেলা ও দায়রা জজ এবং স্পেশাল জজদের জন্য অনলাইনে আয়োজিত ১৪৩তম রিফ্রেশার কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, ‘বিচার ব্যবস্থায় বিচারপ্রার্থী জনগণ প্রতিনিয়ত নানা রকমের সমস্যা বা দাবি-দাওয়া নিয়ে আদালতে হাজির হন। তাছাড়া বিশ্ববাণিজ্যের দ্বার উন্মোচিত হওয়ায় এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে যোগাযোগ ও সংযোগ বৃদ্ধি পাওয়ায় হাজারো রকমের বিরোধের উদ্ভব হয়। এসব প্রেক্ষাপটে নতুন নতুন বিষয়ে নিজেকে পরিচিত করার জন্য, আইনের জটিল সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা করে পারস্পরিক বোঝাপড়াকে আরও দৃঢ় করার জন্য প্রশিক্ষণ একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। এ কথা বিবেচনায় নিয়ে বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে অধস্তন আদালতের বিচারকদের জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কোর্সের আয়োজন করা হচ্ছে, যা বিচারকদের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় এবং কার্যকর হবে।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ জাতিসংঘ কর্তৃক উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার সব যোগ্যতা অর্জন করেছে। বাংলাদেশের এলডিসি স্ট্যাটাস থেকে উত্তোরণ এবং উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে যাত্রা শুরুর প্রাক্কালে, আমরা রাষ্ট্রীয়ভাবে একটি ট্রানজিশনাল পর্যায়ে অবস্থান করছি। এই সময়ে আমাদের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও মানবিক সূচকের অগ্রগতি অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে আইনের শাসন, ন্যায়বিচার এবং সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে।’
আনিসুল হক বলেন, ‘দেশের প্রতিটি অঙ্গ এবং প্রতিষ্ঠানকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একই লক্ষ্যে কাজ করতে হবে- আর তা হলো, দেশের আপামর জনগণের উন্নয়ন। আমাদের দেশের প্রত্যেকটি মানুষ যেন সুস্থ এবং স্বাভাবিকভাবে জীবনযাপন করতে পারে, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাসস্থানসহ অন্যান্য মৌলিক চাহিদা পূরণ করে পছন্দ মতো পেশা ও ব্যবসা-বাণিজ্যের মাধ্যমে আত্মনির্ভরশীলতা অর্জন করতে পারে, সেটাই আমাদের সবার মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত।’
বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি খোন্দকার মূসা খালেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আইন সচিব মো. গোলাম সারওয়ারও বক্তৃতা রাখেন।
এফএইচ/এফআর/পিআর