কাদের সিদ্দিকীর ঋণখেলাপি বিষয়ে আগে সিদ্ধান্ত পরে নির্বাচন


প্রকাশিত: ১০:১৪ এএম, ২৭ অক্টোবর ২০১৫

বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী ঋণ খেলাপি কিনা সে বিষয়ে সমাধান হওয়ার পরে টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনের উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

মঙ্গলবার টাঙ্গাইল-৪ আসনের উপ-নির্বাচন স্থগিত করে আদেশ দেয়ার পর অ্যাটর্নি জেনারেলের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

মাহবুবে আলম বলেন, ‘কাদের সিদ্দিকী ঋণ খেলাপি কিনা আগে সিদ্ধান্ত পরে নির্বাচন’।

তিনি বলেন, আমি মনে করি চেম্বার জজ আদালতের এই আদেশের ফলে কাদের সিদ্দিকীর জন্য ভাল হয়েছে।

এর আগে দুপুর ১টার দিকে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত টাঙ্গাইলের নির্বাচন স্থগিত করে আদেশ দেন। একইসঙ্গে এ উপ-নির্বাচনে বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকীর মনোনয়নপত্র নিয়ে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) আবেদন শুনানির জন্য আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠানো হয়েছে।  

আগামী ২ নভেম্বর প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চে এ আবেদনের শুনানির জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে। ইসির তফসিল অনুযায়ী, আগামী ১০ নভেম্বর এ আসনে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, চেম্বার জজের এই আদেশের ফলে আগামী ১০ নভেম্বর আপাতত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে না।

তিনি বলেন, আমি আদালতে বলেছি কাদের সিদ্দিকীর অগ্রণী ব্যাংক সেন্ট্রাল ব্যাংকে বলেছেন কাদের সিদ্দিকীর ঋণ নিন্ম মানের। এই লোন ডি-ক্ল্যাসিফাই হতে পারে না। অথাৎ তিনি ঋণ খেলাপি। কোনো ঋণ খেলাপি নির্বাচনে দাঁড়াতে পারে না।

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আমাদের এখানে সামান্য ইলেকট্রিক বিল বাকি রেখে সংসদ সদস্য নির্বাচন করতে পারে না। এখানে ১০ কোটি টাকা ঋণ মানে তিনি ঋণ খেলাপি।

মাহবুবে আলম বলেন, আদালত সঠিক সিদ্ধান্তই দিয়েছেন। আর সেই সিদ্ধান্তে কাদের সিদ্দিকীর আইনজীবী ব্যারিস্টার রাগিব রউফ চৌধুরী সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেছেন, আমরা চেম্বার জজ আদালতের আদেশে খুশি। তাতে বুঝা যায় আদালতের আদেশে উভয় পক্ষই খুশি।

অবকাশকালীন চেম্বার বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের আদালত মঙ্গলবার এই আদেশ দেন।

সোমবার কাদের সিদ্দিকীর মনোনয়নপত্রের বৈধতা নিয়ে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করেন ইসির অ্যাডভোকেট-অন-রেকর্ড ব্যারিস্টার ড. মো. ইয়াসীন খান। তার সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার শানজানা ইয়াসীন খান।

আদালতে ইসির পক্ষে ব্যক্তিগত ক্ষমতায় (পারসোনাল ক্যাপাসিটি) শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। কাদের সিদ্দিকীর পক্ষে শুনানি করেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরী।

কাদের সিদ্দিকীর বড় ভাই লতিফ সিদ্দিকী গত ১ সেপ্টেম্বর পদত্যাগ করায় আসনটি শূন্য ঘোষণা করে গত ৩ সেপ্টেম্বর গেজেট প্রকাশ করে সংসদ সচিবালয়। এরপর নির্বাচন কমিশন এ আসনে উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। অন্য দলের পাশাপাশি এতে কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের প্রার্থী হিসেবে কাদের সিদ্দিকী ও তার স্ত্রী নাসরিন সিদ্দিকী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। কিন্তু ঋণ খেলাপির কারণে গত ১৩ অক্টোবর তাদের মনোনয়ন বাতিল করা হয়। পরে গত ১৬ অক্টোবর দুই নেতা সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল আবেদন করেন।

১৮ অক্টোবর বিকেলে কাদের সিদ্দিকীর আপিল খারিজ করে দেয়া হয়। রিটার্নিং অফিসার ও নির্বাচন কমিশনের আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন কাদের সিদ্দিকী। রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট নির্বাচন কমিশনের আদেশ স্থগিত করে রুল জারি করেন।

২০১৪ সালে টাঙ্গাইল-৮ (সখিপুর) আসনের উপ-নির্বাচনেও প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন কাদের সিদ্দিকী। সে সময়ও ঋণখেলাপির অভিযোগে তার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়।

এফএইচ/একে/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।