স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:৩৩ এএম, ১২ জুলাই ২০২০

স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি এবং সার্বিক সামাজিক দূরত্ব কঠোরভাবে অনুসরণ করে বিভিন্ন ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তি নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে পারবেন।

শনিবার (১১ জুলাই) এ সংক্রান্ত একটি প্র্যাকটিস নির্দেশনা সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মোহাম্মদ আলী আকবর স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রধান বিচারপতি সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ বিচারপতিদের সঙ্গে আলোচনাক্রমে এই মর্মে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন যে, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ কর্তৃক জারিকৃত স্বাস্থ্যবিধি এবং শারীরিক ও সামাজিক দূরত্ব কঠোরভাবে অনুসরণ করে ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তি/ব্যক্তিগণ নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে পারবেন।

এ বিষয়ে নিম্ন আদালতের বিচারক/ম্যাজিস্ট্রেট এজলাস কক্ষে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনসহ শারীরিক ও সামাজিক দূরত্ব বজায় নিশ্চিতকরণে প্রয়োজনীয় কার্যপদ্ধতি নির্ধারণ করবেন।

৬ ফুট দূরত্ব

সংশ্লিষ্ট বিচারক/ম্যাজিস্ট্রেট আত্মসমর্পণ আবেদন দাখিল এবং শুনানি কার্যক্রমের পদ্ধতি-সময়সূচি এমনভাবে নির্ধারণ-সমন্বয় করবেন যাতে আদালত প্রাঙ্গণে ও আদালত ভবনে কোনোরূপ জনসমাগম না ঘটে। আদালত প্রাঙ্গণে এবং এজলাস কক্ষে প্রত্যেককে কমপক্ষে ছয় ফুট শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে হবে। সকল প্রকার জনসমাগম পরিহার করতে হবে।

‘আদালত প্রাঙ্গণ ও আদালতে জনসমাগম এড়াতে বিচারক/ম্যাজিস্ট্রেট প্রতিদিন নির্দিষ্ট সংখ্যক আত্মসমর্পণ দরখাস্ত শুনানির জন্য গ্রহণ করবেন। এ সংক্রান্তে একটি তালিকা সম্বলিত বিজ্ঞপ্তি আদালত ও আইনজীবী সমিতির নোটিশ বোর্ডে প্রচারের ব্যবস্থা করবেন।’

এক মামলায় দুইজন আইনজীবী

একটি মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তির পক্ষে সর্বোচ্চ দুইজন আইনজীবী শুনানিতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। এজলাস কক্ষে একত্রে ছয়জনের অধিক লোকের সমাগম করা যাবে না। তবে একই মামলায় একাধিক আত্মসমর্পণকারী অভিযুক্ত ব্যক্তি থাকলে এজলাস কক্ষের ডকে সর্বোচ্চ পাঁচজন অভিযুক্ত ব্যক্তি অবস্থান করতে পারবেন এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনে বিচারক/ম্যাজিস্ট্রেট মামলা একাধিকভাগে/সেশনে শুনানি করতে পারবেন এবং সম্পূর্ণ শুনানি সম্পন্ন করে আইনানুগ আদেশ দিবেন। মামলা শুনানির সময়ে এজলাস কক্ষের বাইরে আদালতের বারান্দায় বা করিডোরে জনসমাগম সম্পূর্ণরুপে নিষিদ্ধ।

আত্মসমর্পণ দরখাস্ত শুনানির সময় অভিযুক্ত ব্যক্তি ও তার পক্ষে নিযুক্ত আইনজীবী ব্যতীত অন্য কোনো আইনজীবী এজলাস কক্ষে অবস্থান করবেন না। একটি আত্মসমর্পণ দরখাস্ত শুনানি শেষে সংশ্লিষ্ট আইনজীবী এজলাস কক্ষ ছাড়ার দুই মিনিট বিরতি দিয়ে পরবর্তী মামলা শুনানির জন্য গ্রহণ করবেন।

আদালতে প্রবেশের সময় তাপমাত্রা পরীক্ষা

এজলাস কক্ষে প্রত্যেককে আবশ্যিকভাবে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। আদালতে প্রবেশের সময় প্রত্যেক ব্যক্তির শীরের তাপমাত্রা পরীক্ষার ব্যবস্থা গ্রহণ করা আবশ্যক। এজলাস কক্ষে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনসহ শারীরিক দূরত্ব কঠোরভাবে বজায় নিশ্চিতকরণার্থে তাৎক্ষণিক উদ্ভূত যেকোনো পরিস্থিতি বিবেচনায় বিচারক/ম্যাজিস্ট্রেট প্রয়োজনবোধে আত্সমর্পণ দরখাস্ত শুনানি করা থেকে বিরত থাকাসহ অন্য আনুষাঙ্গিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন।

এর আগে গত ৪ জুলাই ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তি শুধু মাত্র চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করতে পারবেন বলে সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন প্রধান বিচারপতি।

গত ৪ জুলাই দেয়া ওই বিজ্ঞপ্তি এটির পরিপূরক বলে শনিবারের বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়। এ নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর হবে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

মহামারি করোনাকালে সাধারণ ছুটির মধ্যে গত ৭ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভপতিত্বে গণভবনে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘আদালত তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ ২০২০’ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়।

দুইদিন পর গত ৯ মে ভার্চুয়াল কোর্ট সম্পর্কিত অধ্যাদেশ জারি করা হয়। অধ্যাদেশে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ বা ক্ষেত্রমত হাইকোর্ট বিভাগ, সময় সময়, প্র্যাকটিস নির্দেশনা (বিশেষ বা সাধারণ) জারি করতে পারবে।

গত ১০ মে সুপ্রিম কোর্ট প্র্যাকটিস ডাইরেকশন জারি করে আদালতে ভার্চুয়াল শুনানির নির্দেশ দেন। সে অনুসারে এতদিন ভার্চুয়ালি শুনানি হয়ে আসছিল।

এফএইচ/এএইচ/পিআর/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।