উপহার পাঠানোর নামে প্রতারণা, ৩ বিদেশি কারাগারে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:৩৫ পিএম, ০৪ জুলাই ২০২০

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অপরাধে গ্রেফতার তিন বিদেশি নাগরিককে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

ঢাকা মহানগর হাকিম শাহিনুর রহমান তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। শনিবার ঢাকা মহানগর হাকিম আদালত থেকে এ তথ্য জানা যায়।

আদালতের সূত্র মতে, শুক্রবার তিনজনকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে গুলশান থানার প্রতারণার মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কারাগারে পাঠানোর আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এর আগে বুধবার (১ জুলাই) রাতে রাজধানীর ভাটারা এলাকা থেকে এই তিনজনকে গ্রেফতার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গ্রেফতারদের একজন কেনিয়ার ও দুজন ক্যামেরুনের নাগরিক। তারা হলেন- সোলেমান ওরফে গুইন্যাং টেগোমো বের্টিন, গুইন্যাং তোয়োসের্জ ক্রিশ্চিয়ান ও ইকোনগো ইরনাস্ট ইব্রাহিম।

এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম ইউনিটের প্রধান ডিআইজি শেখ মোহাম্মদ রেজাউল হায়দার বলেন, তারা ২০১৮ সাল থেকে বাংলাদেশে অবস্থান করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। প্রথমে তারা ফেসবুকে ভুয়া আইডি ও নাম ব্যবহার করে মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। যারা নিতান্তই সাধারণ তাদের মধ্যে কেউ কেউ বন্ধুত্ব তৈরি করে। এই সুযোগে প্রতারকচক্রের সদস্যরা বিভিন্ন দামি উপহার পাঠান এবং সেটি কাস্টমসে আটকে আছে ছাড়িয়ে আনতে হবে বলে মোটা অঙ্কের টাকা চান। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশি কেউ কাস্টমসের কর্মকর্তা অথবা সিঅ্যান্ডএফ কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে প্রতারণার কাজে সহায়তা করে।

তিনি আরও বলেন, প্রতারকচক্রের গ্রেফতার সদস্যরা জেনেটার নামে একজন নারীর ভুয়া আইডি খুলে ভুক্তভোগী মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম ফয়সালের সঙ্গে বন্ধুত্ব সম্পর্ক গড়ে তোলে। জেনেটার নিজেকে একজন আমেরিকান হিসেবে পরিচয় দেন এবং ভুক্তভোগী আরিফুল ইসলামকে কুরিয়ারের মাধ্যমে উপহার পাঠাবে বলে জানায়। এরপর আরিফুলকে উপহার সামগ্রী পাঠানোর কথা বলে চক্রটি বিভিন্ন সময়ে নগদ আট লাখ ৭০ হাজার টাকা এবং ব্যাংকের মাধ্যমে ১৩ লাখ ৯৮ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। তার কাছ থেকে মোট ২২ লাখ ৬৮ হাজার টাকা প্রতারণা মাধ্যমে নেয় এই চক্রের তিন সদস্য। ভুক্তভোগী আরিফুল ইসলাম ফয়সাল রাজধানীর বিমানবন্দর থানায় একটি প্রতারণার মামলা দায়ের করেছেন।

সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, গ্রেফতার আসামিদের কারও কাছেই পাসপোর্টের কোনো কপি পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, তাদের ভিসার মেয়াদ নেই। অবৈধভাবে তারা বাংলাদেশে অবস্থান করে আসছিলেন। বিষয়টি নিয়ে আমরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করব এবং তাদের চোখে আরও কোনো সদস্য আছে কি-না তা জেনে তাদের গ্রেফতারে অভিযান পরিচালনা করা হবে।

রেজাউল হায়দার বলেন, গ্রেফতার আসামিরা আক্রমণাত্মক। অভিযানকালে তারা পুলিশ সদস্যদের ওপর বিভিন্ন ধরনের হামলার চেষ্টা করেছেন।

জেএ/বিএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।