কৃষকের মৃত্যুতে এএসআই গ্রেফতার, তাই ‘শুনানি নয়’
পুলিশের পিটুনিতে গোপালগঞ্জের এক কৃষকের মৃত্যুর ঘটনায় আসামি গ্রেফতার হওয়ায় এই মুহূর্তে কোনো হস্তক্ষেপ করবে না হাইকোর্টের ভার্চুয়াল বেঞ্চ। বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম এ বিষয়ে ‘এখন কোনো শুনানি নয়’ বলে জানিয়ে দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবীকে।
কৃষক নিখিল তালুকদারকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাসহ দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আসামিরা গ্রেফতার হওয়ায় আদালত এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান আইনজীবী কুমার দেবুল দে।
মঙ্গলবার (৯ জুন) কুমার দেবুল দে জানান, গত ৭ জুন সন্ধ্যায় ই-মেইলের মাধ্যমে বিষয়টি আদালতের নজরে আনি। আদালত ৮ জুন বিষয়টি দেখেছেন। এরপর ওইদিনই বিকেলে আমাকে জানিয়েছেন যে, এরই মধ্যে পুলিশ প্রশাসন ব্যবস্থা নিয়েছে। মামলা হয়েছে, দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাই এই মুহূর্তে শুনানি গ্রহণ করবেন না।
তিনি আরও জানান, আদালত এ মুহূর্তে কোনো হস্তক্ষেপ করবেন না।
গত ২ জুন বিকালে রামশীল বাজারের ব্রিজের পূর্বপাশে কৃষক নিখিলসহ চারজন বসে সময় কাটাতে তাস খেলছিলেন। এ সময় কোটালীপাড়া থানার এএসআই শামীম উদ্দিন ঘটনাস্থলে জনৈক ভ্যানচালক ও অপর যুবককে নিয়ে গোপনে মুঠোফোনে তাস খেলার দৃশ্য ধারণ করতে থাকলে তারা বিষয়টি টের পেয়ে খেলা রেখে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। অন্য তিনজন পালিয়ে গেলেও নিখিলকে এএসআই শামীম উদ্দিন ধরে মারপিট শুরু করেন। মারপিটের একপর্যায়ে হাঁটু দিয়ে নিখিলের মেরুদণ্ডে আঘাত করলে তার মেরুদণ্ড ভেঙে যায়।
চিকিৎসার জন্যে প্রথমে নিখিলকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে নেয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৩ জুন বিকালে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে।
ওই ঘটনায় গত ৬ জুন কোটালীপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান বিমল কৃষ্ণ বিশ্বাসের কার্যালয়ে তার উপস্থিতিতে এক বৈঠক হয়। বৈঠকে নিহতের পরিবার, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান হাওলাদার, পৌরসভা মেয়র কামাল হোসেন, কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, রামশীল ইউনিয়ন চেয়ারম্যান খোকন বালা, কোটালীপাড়া থানার ওসি শেখ লুৎফর রহমানসহ এলাকার গণমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে নিহতের পরিবারকে নগদ পাঁচ লাখ টাকা, তার স্ত্রী ইতি তালুকদার ও ছোট ভাই মন্টু তালুকদারকে চাকরি দেয়ার আশ্বাস দেয়া হয়।
এরপর ৭ জুন থানায় দুজনকে আসামি করে মামলা করেন নিহতের ছোট ভাই মন্টু তালুকদার। ওই রাতেই এএসআই শামীম উদ্দিন ও পুলিশের সোর্স মো. রেজাউলকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এফএইচ/এমএআর/জেআইএম