ন্যায় বিচারের স্বার্থে সাকার সাফাই সাক্ষী নিতে পারেন আদালত
সংবিধান অনুযায়ী ন্যায় বিচারের স্বার্থে বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পক্ষে আটজন সাক্ষীর জবানবন্দি সুপ্রিমকোর্ট গ্রহণ করতে পারেন বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন। সোমবার সুপ্রিমকোর্ট আ্ইনজীবী সমিতি ভবণের শহীদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।
তিনি বলেন, প্রয়োজনে আপিল বিভাগ সংবিধানের ১০৪ অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে এসব ব্যক্তিদের সমন দিয়ে এ ব্যাপারে (যুদ্ধের সময় সাকা চৌধুরী পাকিস্তানে ছিলেন) নিশ্চিত হতে পারেন। এতে দিবালোকের হয়ে যাবে- সাকা চৌধুরী বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগসমূহ মিথ্যা ও বানোয়াট, জাল ও জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে।
খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, সাকা চৌধুরীর সুনির্দিষ্ট ডিফেন্স হচ্ছে তিনি চট্টগ্রামে থাকতেন না। তিনি ১৯৭১ সালের মার্চ মাসের পূর্ব হতে ঢাকার নটরডেম কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশুনার সুবাদে ধানমন্ডির পৈত্রিক বাসায় থাকতেন। এবং ২৯ মার্চ পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেন এবং ১৯৭৪ সালের এপ্রিল মাসে ঢাকায় আসেন। পাঞ্জাব যাওয়ার সময় কাইউম রেজা চৌধূরী ঢাকার তেজগাঁও বিমানবন্দরে নিজ গাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার কথা ট্রাইব্যুনালে বলেছেন।
তিনি বলেন, ইতিমধ্যে দেশি এবং আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় এ ব্যাপারে বিস্তারিত রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। এসব রিপোর্ট পর্যালোচনায় দেখা যায়-যদি আদালত অনুমতি প্রদান করে তবে উপরোক্ত ব্যক্তিগণ তাদের এফিডেবিট প্রদত্ত বক্তব্যের ব্যাপারে বাংলাদেশে এসে সত্যতা নিশ্চিতের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর পক্ষে রিভিউ শুনানির সময় আটজনকে সাক্ষী দেওয়ার জন্য আবেদন করা হয়েছে।
সোমবার সকালে আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় পাঁচজন পাকিস্তানের, একজন যুক্তরাষ্ট্র ও বাকি দু’জন বাংলাদেশি সাকা চৌধুরীর পক্ষে সাফাই সাক্ষী দিতে অনুমোদন চেয়ে আবেদন করা হয়।
এ আটজন হলেন- পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকারী মোহাম্মদ মিঞা সুমরো, সাবেক রেলমন্ত্রী ইসহাক খান খাকওয়ানি, ডন মিডিয়া গ্রুপের চেয়ারপারসন আম্বার হারুন সাইগাল, স্থপতি মুনিব আরজামান্দ খান ও
ভিকারুন্নিসা নুনের নাতি ফিরোজ আহমেদ নুন, ফিজিতে দায়িত্বপালনকারী আমেরিকার সাবেক রাষ্ট্রদূত ওসমান সিদ্দিক, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি শামীম হাসনাইন এবং বিচারপতি শামীমের মা জিনাত আরা বেগম।
বিচারপতি শামীম হাসনাইন এর আগে সাক্ষী দেওয়ার অনুমতির জন্য প্রধানবিচারপতির কাছে আবেদন করেছিলেন। কিন্তু সে আবেদনে সাড়া দেননি প্রধানবিচারপতি।
এর আগে, ১৪ অক্টোবর মৃত্যুদণ্ডের চূড়ান্ত রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়েআবেদন জানিয়েছেন সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরী।
তিনি জানান, মোট ১০৮ পৃষ্ঠার রিভিউ আবেদনে ১০টি যুক্তি দেখিয়ে অভিযোগথেকে অব্যাহতি ও মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস চাওয়া হয়েছে। সাকা চৌধুরীর প্রধানআইনজীবী হিসেবে সর্বোচ্চ আদালতে রিভিউ আবেদনের শুনানিতে আসামিপক্ষে থাকবেন অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন।
এদিকে দ্রুত রিভিউ আবেদনের শুনানির জন্য দিন নির্ধারণে আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। রাষ্ট্রপক্ষের এ আবেদনের শুনানি হতে পারে মঙ্গলবার। গত ২৯ জুলাই মানবতাবিরোধী অপরাধে সাকা চৌধুরীর আপিলে মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে চূড়ান্ত রায় দেন আপিল বিভাগ।
এফএইচ/এসএইচএস/পিআর