ডলফিন হত্যা বন্ধে পদক্ষেপ কী, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জানতে চান হাইকোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:১১ পিএম, ১২ মে ২০২০

অবিলম্বে ডলফিন হত্যা বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তা আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আদালতকে জানানোর জন্য বলা বলা হয়েছে। বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন রিটকারী আইনজীবী আব্দুল কাইয়ুম লিটন। তিনি বলেন, শুনানিতে আদালত বলেছেন আরেকটি ডলফিনও যেন হত্যা করা না হয়।

চট্টগ্রামের হালদা নদীতে ডলফিন হত্যা বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশনা চেয়ে অনলাইনে করা রিট আবেদনের ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (১২ মে ) হাইকোর্টের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এই আদেশ দেন। রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আব্দুল কাইয়ুম লিটন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার ও সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস।

আদেশের বিষয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস জাগো নিউজকে বলেন, ডলফিন হত্যা বন্ধে কোনো ধরনের রুল জারি করেনি আদালত। তবে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য বলা হয়েছে। আর কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে তা তিন দিনের মধ্যে মামলার তিন নম্বর বিবাদী পরিবেশ অধিদফতরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালককে ই-মেইলে আদালতকে জানানোর জন্য বলা হয়েছে।

বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করে চট্টগ্রামের হালদা নদীতে ডলফিন হত্যা বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশনা চেয়ে সোমবার (১১ মে) হাইকোর্টের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের বেঞ্চে ই-মেইলের মাধ্যমে রিট আবেদনটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আব্দুল কাইয়ুম লিটন। দেশের ভার্চুয়াল কোর্ট পদ্ধতিতে এটিই প্রথম রিট আবেদন

রিটে হালদা নদীতে ডলফিন হত্যা বন্ধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং ডলফিন হত্যা বন্ধে কেন প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে।

রিটে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সচিব, পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক, চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক ও চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে বিবাদী করা হয়েছে।

এর আগে হালদা নদীতে ডলফিন হত্যা বিষয়ে ইংরেজি ও বাংলা জাতীয় পত্রিকা এবং অনলাইন সংবাদমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। পরে ওই সংবাদ প্রতিবেদন সংযুক্ত করে জনস্বার্থে হাইকোর্টে এ রিট আবেদন করা হয়।

প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, লকডাউন আর শাটডাউন পৃথিবীর নানা অংশের বন্যপ্রাণী ও নদী-সমুদ্রের স্তন্যপায়ী প্রাণীদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে আসলেও মানুষের নিষ্ঠুরতা থেকে মুক্তি পাচ্ছে না গাঙ্গেয় এ ডলফিন। অবৈধ জালের শিকার হচ্ছে মা-মাছও। শনিবারও (৯ মে) হালদা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ইঞ্জিন বোটের আঘাতে রক্তাক্ত ১৩ কেজি ওজনের একটি মা-মাছ। গাঙ্গেয় এ ডলফিন (গাঙ্গেটিকা প্লাটানিস্টা) দক্ষিণ এশিয়ার নদীগুলোতে একটি বিপন্ন প্রজাতি। প্রকৃতি সংরক্ষণের জোট ‘আইইউসিএন’ এ প্রজাতিকে মহাবিপন্ন হিসেবে লাল ক্যাটাগরিতে তালিকাভুক্ত করেছে ২০১২ সালে। ডলফিনের মৃত্যুর তালিকায় যুক্ত হয়েছে নতুন ধরনের নৃশংসতাও। গত শুক্রবার (৮ মে) সকালে রাউজানের উরকিরচর ইউনিয়নে হালদা সংলগ্ন এলাকায় একটি ডলফিনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ডলফিনের চর্বি থেকে তৈরি তেল নারীদের রোগমুক্তি ঘটে এমন কুসংস্কারের বশে এ ডলফিনকে হত্যা করা হয়েছে বলে স্থানীয়দের অভিমত।

এফএইচ/এমএফ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।