আবরার হত্যা মামলা দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এ পাঠিয়েছেন মহানগর দায়রা জজ আদালত। দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল মামলাটি আমলে নিয়ে পলাতক তিনজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন। একই সঙ্গে ৬ এপ্রিল মামলার অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য দিন ধার্য করেছেন।
রোববার ঢাকার দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান মামলাটি আমলে নিয়ে পলাতক তিন আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি তিন আসামি হলেন-মোর্শেদুজ্জামান জিসান, এহতেশামুল রাব্বি তানিম ও মোস্তফা রাফিদ। তাদের মধ্যে প্রথম দুজন এজাহারভুক্ত ও শেষের জন এজাহারবহির্ভূত আসামি।
এর আগে ১৮ মার্চ ঢাকা মহানগর দায়রা জজ ইমরুল কায়েসের আদালতে মামলাটির অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। মন্ত্রণালয় থেকে মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এ স্থানান্তরের আদেশ জারি হওয়ায় বিচারক মামলাটি ওই ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরের নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে ৬ এপ্রিল মামলার অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন আদালত।
১৬ মার্চ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে মামলাটি ঢাকার দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এ স্থানান্তর করে আদেশ জারি করা হয়।
গত ১১ মার্চ আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক এ সংক্রান্ত ফাইল অনুমোদন দেন। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে নেয়ার আবেদন করেছিলেন মামলার বাদী নিহত আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ।
ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ার জেরে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে ডেকে নেয় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। এরপর রাত ৩টার দিকে শেরেবাংলা হলের নিচতলা ও দোতলার সিঁড়ির মধ্যবর্তী করিডোর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পরদিন ৭ অক্টোবর দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে আবরারের মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। নিহত আবরার বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন তিনি। ওই ঘটনায় আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে চকবাজার থানায় ১৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।
২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ওয়াহিদুজ্জামান। অভিযুক্ত ২৫ জনের মধ্যে এজাহারনামীয় ১৯ জন এবং তদন্তে প্রাপ্ত এজাহারবহির্ভূত ছয়জন। এজাহারভুক্ত ১৯ জনের মধ্যে ১৬ জন ও এজাহারবহির্ভূত ছয়জনের মধ্যে পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারদের মধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন আটজন।
গ্রেফতার ২২ জন হলেন- মেহেদী হাসান রাসেল, মো. অনিক সরকার, ইফতি মোশাররফ সকাল, মো. মেহেদী হাসান রবিন, মো. মেফতাহুল ইসলাম জিওন, মুনতাসির আলম জেমি, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভির, মো. মুজাহিদুর রহমান, মুহতাসিম ফুয়াদ, মো. মনিরুজ্জামান মনির, মো. আকাশ হোসেন, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মাজেদুর রহমান, শামীম বিল্লাহ, মোয়াজ আবু হুরায়রা, এ এস এম নাজমুস সাদাত, ইসতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, অমিত সাহা, মো. মিজানুর রহমান ওরফে মিজান, শামসুল আরেফিন রাফাত, আসামি মোর্শেদ অমত্য ইসলাম ও এস এম মাহমুদ সেতু।
মামলার তিন আসামি এখনও পলাতক। তারা হলেন- মোর্শেদুজ্জামান জিসান, এহতেশামুল রাব্বি তানিম ও মোস্তবা রাফিদ। তাদের মধ্যে প্রথম দুজন এজাহারভুক্ত ও শেষের জন এজাহারবহির্ভূত আসামি।
জেএ/এমএফ/এমকেএইচ