সাংবাদিক আরিফুলের মামলার সকল নথি তলব করেছেন হাইকোর্ট
কুড়িগ্রামের সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগ্যানকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে মধ্যরাতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কারাদণ্ড দেয়ার মামলা সংক্রান্ত সকল নথিপত্র তলব করেছেন হাইকোর্ট।
আগামী সোমবারের (২৩ মার্চ) মধ্যে এসব নথি দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি ওইদিন মামলার পরবর্তী আদেশ এবং শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। একইসঙ্গে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে কী ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তাও সোমবারের মধ্যে জানানোর জন্য বলা হয়েছে।
এ-সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে সোমবার (১৬ মার্চ) বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আজ রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট এএম আমিন উদ্দিন ও অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল দেবাশীষ ভট্টাচার্য।
রোববার (১৫ মার্চ) সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে দেয়া সাজা ও দণ্ডের আদেশের অনুলিপি, অভিযান কারা পরিচালনা করেছে, মোবাইল কোর্ট নাকি টাস্কফোর্স, রাতে অভিযান পরিচালনার বিষয়ে আইন অনুসারে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে কিনা, অভিযান পরিচালনার কারণ এবং আইন অনুসারে ঘটনা কার সম্মুখে কখন সংঘটিত হলো তা রাষ্ট্রপক্ষে জানাতে নির্দেশ দেন। এ আদেশ অনুসারে রাষ্ট্রপক্ষ নথির ফটোকপি দাখিল করে।
এদিন (১৫ মার্চ) বাংলা ট্রিবিউনের নির্বাহী সম্পাদক হারুন উর রশীদ জনস্বার্থে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট আবেদন করেন। রিটে টাস্কফোর্সের নামে ভ্রাম্যমাণ আদালতে আরিফুল ইসলামকে অবৈধ সাজা ও আটক করা কেন সংবিধান পরিপন্থী হবে না এবং আরিফুল ইসলামকে ৫০ লাখ টাকা কেন ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারির আর্জি জানানো হয়।
এছাড়াও রিটে কুড়িগ্রামের ডিসি, সিনিয়র সহকারী কমিশনার, সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে তাদের ভূমিকার ব্যাখ্যা দেয়ার জন্য তলবের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে আরিফের বিরুদ্ধে করা ভ্রাম্যমাণ আদালতের মামলার নথি এবং টাস্কফোর্স পরিচালনার নথি তলবের নির্দেশনা চাওয়া হয়।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার (১৩ মার্চ) মধ্যরাতে বাড়িতে হানা দিয়ে মারধর করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় বাংলা ট্রিবিউন ও ঢাকা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি আরিফুল ইসলামকে।
তার বাসা থেকে আধা বোতল মদ ও দেড়শ গ্রাম গাঁজা জব্দ করা হয়েছে জানিয়ে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত ওই সাংবাদিককে এক বছরের কারাদণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠান। রোববার সকালে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে তাকে আবার জামিন দেয়া হয়।
এফএইচ/বিএ/এমএস