ফিটনেসবিহীন গাড়ি বন্ধে প্রত্যেক জেলায় টাস্কফোর্স গঠনের নির্দেশ
সারা দেশসহ মহাসড়কে চলাচলের অনুপযোগী, ফিটনেসহীন ও অনিবন্ধিত যান চলাচল তদারকি ও বন্ধে এবং নতুন সড়ক আইন-২০১৮ বাস্তবায়নে প্রত্যেক জেলায় টাস্কফোর্স গঠন করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। জেলা প্রশাসকের (ডিসি) নেতৃত্বে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) তত্ত্বাবধানে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের টাস্কফোর্সে রাখতে বলা হয়েছে। জনপ্রশাসন সচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, সড়ক ও সেতু সচিবের প্রতি এই নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আদেশের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
বিআরটিএ ও বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে দাখিল করা প্রতিবেদনের বিষয়ে শুনানি নিয়ে রোববার ( ১৬ ফেব্রুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল হেলেনা বেগম চায়না, মাহজাবিন রাব্বানী দীপা, কাজী শামসুন নাহার কনা ও ঈশিতা পারভীন। বিআরটিএর পক্ষে ছিলেন মঈন আলম ফিরোজী ও রাফিউল ইসলাম।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক বলেন, শুনানির নির্ধারিত দিনে বিআরটিএ আদালতকে বলেছে জনবল সংকটের কারণে ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করতে পারছে না। তাই তারা টাক্সফোর্স গঠনের আবেদন করেন। পরে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিবকে এই টাস্কফোর্স গঠনের নির্দেশ দেন। টাস্কফোর্স জেলা প্রশাসকরা গঠন করবেন। এতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ ও বিআরটিএ প্রতিনিধিসহ জেলা প্রশাসক প্রয়োজনবোধে অন্যদেরও অন্তর্ভুক্ত করতে পারবেন।
এই টাস্কফোর্স সব গাড়ির কাগজপত্র যাচাই করতে পারবে এবং ফিটনেসবিহীন, আনফিট ও রেজিস্ট্রেশনবিহীন গাড়ি আটক, চালককে গ্রেফতার, জরিমানা ও গাড়ি ডাম্পিং করতে পারবেন।
এই আদেশের অগ্রগতি প্রতিবেদন আগামী তিন মাস পর হাইকোর্টকে জানাতে হবে। আগামী ১ জুন এই রুলের পরবর্তী শুনানির জন্য ধার্য করা হয়েছে।
এর আগে ১২ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট বলেন, ফিটনেস সনদ ছাড়া, ফিটনেস সনদ নবায়ন না করা এবং ঝুঁকিপূর্ণ ও পরিবেশদূষণকারী মোটরযান রাস্তায় চলতে পারবে না। কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। এসব রোধে সংশ্লিষ্ট সবার দায়িত্ব আছে। যার যার অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
গত ২৩ অক্টোবর এক আদেশে ফিটনেস নবায়নবিহীন গাড়িকে সিএনজি গ্যাস স্টেশন বা পেট্রলপাম্প থেকে জ্বালানি (গ্যাস, ডিজেল, পেট্রল, অকটেন ইত্যাদি) না দিতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
‘নো ফিটনেস ডকস, ইয়েট রানিং’ শিরোনামে গত বছরের ২৩ মার্চ ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টার পত্রিকায় একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। এতে বলা হয়, ৭০ হাজারের বেশি যানবাহন ১০ বছরেও ফিটনেস সার্টিফিকেট নবায়ন করেনি। এর অনেকগুলোই দুর্ঘটনার গুরুতর ঝুঁকি নিয়ে রাস্তায় আছে। প্রতিবেদনটি আদালতের নজরে এলে একই বছরের ২৭ মার্চ আদালত স্বতঃপ্রণোদিত রুল দেন। একই সঙ্গে ঢাকাসহ সারা দেশে ফিটনেসবিহীন ও নিবন্ধনবিহীন যানবাহন এবং লাইসেন্সবিহীন চালকের তথ্যাদি প্রতিবেদন আকারে আদালতে দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
এফএইচ/জেএইচ/এনএফ/পিআর/এমএস