সনদধারী আইনজীবীদের ঢুকতে দেয়া হচ্ছে আপিল বিভাগে
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন শুনানিকে কেন্দ্র করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের এনরোলমেন্টের (সনদধারী) তালিকা ধরে ধরে আইনজীবীদের ঢুকতে দেয়া হচ্ছে।
সুপ্রিম কোর্টের একজন সহকারী রেজিস্ট্রার আইনজীবীদের এই তালিকা দেখছেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার জামিন শুনানি অনুষ্ঠিত হবে আজ (বৃহস্পতিবার)। শুনানিতে খালেদা সর্বশেষ স্বাস্থ্যগত প্রতিবেদন উপস্থাপন করবে বিএসএমএমইউ কতৃর্পক্ষ।
সুপ্রিম কোর্টের কার্যতালিকায় আবেদনটি শুনানির জন্য ১২ নম্বর ক্রমিকে রয়েছে। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের ছয় সদস্যের বেঞ্চে এ আবেদনের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
এই শুনানিকে ঘিরে সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় গতকাল সন্ধ্যা থেকেই কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা গড়ে তুলেছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই অপরিচিত কাউকে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না সর্বোচ্চ আদালত চত্বরে।
সুপ্রিম কোর্টে ঢোকার প্রবেশপথগুলোয় বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ছাড়া মৎস্য ভবন, প্রেস ক্লাব এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ, র্যাব, আর্মড পুলিশ। এসব এলাকায় পথচারীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হচ্ছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আজ হাইকোর্টের আপিল বিভাগে খালেদা জিয়ার জামিন শুনানির জন্য দিন ধার্য রয়েছে। অথচ এর আগের দিন বুধবার বিকেলে সুপ্রিম কোর্টের বাইরের তিনটি পৃথক স্থানে মোটরসাইকেলে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। ওই ধরনের ঘটনাকে আজ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। খালেদা জিয়ার আজকে জামিন শুনানির রায়কে ঘিরে যে কোনো ধরনের অপচেষ্টা, নাশকতা ঠেকাতেই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর এ সতর্ক অবস্থান।
বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিনে সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় দেখা যায়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সতর্ক অবস্থান। আদালতের সেবাপ্রত্যাশী, আইনজীবী, ও আদালতে কর্মরতদেরও তল্লাশির মাধ্যমে ভেতরে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে। এর বাইরে পরিচয় নিশ্চিত না হয়ে কাউকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। ব্যাগধারীদের ব্যাগ, লাগেজ কিংবা নারীদের পার্সও তল্লাশি করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
তবে আপিল বিভাগের সামনে দিয়ে সুপ্রিম কোর্টের মূল গেট হয়ে গাড়ি, স্টাফরা প্রবেশ করছেন। যাদের পরিচয়পত্র বা কার্ড নেই তাদের বার কাউন্সিলের পাশের গেট দিয়ে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। তাদের মাজার গেট হয়ে প্রবেশের পরামর্শ দিচ্ছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিটিউটের পাশের গেট দিয়ে শুধু বিচারকদের গাড়ি ঢোকার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান বলেন, নাশকতার উদ্দেশ্যেই অজ্ঞাত দুর্বত্তরা গতকাল সুপ্রিম কোর্ট এলাকার মোটরসাইকেলে আগুন দেয়। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। তবে জড়িত ব্যক্তিদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে।
তিনি বলেন, ওই ঘটনাকে গুরুত্ব দিয়ে আজ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় কর্তব্যরত ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) নাদিয়া ফারজানা বলেন, এর আগে খালেদা জিয়ার জামিনের শুনানির দিন আইনজীবীরা আদালতে কী ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছিলেন সেটা সবাই দেখেছি। তখন হয়তো অনেক অপরিচিতও আদালতে প্রবেশের সুযোগ নিয়েছিলেন। আজ জামিন শুনানিকে ঘিরে সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। অপরিচিত কাউকে কার্ড ছাড়া ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) সাজ্জাদুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, আজ নিরাপত্তা নিশ্চিতে যা যা করা দরকার সবই পুলিশের পক্ষ থেকে গ্রহণ করা হয়েছে। আদালতে কার্ডধারী ছাড়া প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। আদালতের কর্মরতদের পরিচিতি নিশ্চিত করতে সুপ্রিম কোর্টের কর্মকর্তাদের সহায়তা নেয়া হচ্ছে।
নিরাপত্তাব্যবস্থা আরও জোরদার করতে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের ১ নম্বর আদালতে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা বসানো হয়েছে।
এফএইচ/জেএ/জেডএ/জেআইএম