মুজাহিদ-সাকার চূড়ান্ত রায় প্রকাশ
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন (সাকা) কাদের চৌধুরীর মৃত্যুদণ্ডের চূড়ান্ত রায় রায় প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
এই দুই নেতার রায় প্রকাশ পেয়েছে বলে জাগো নিউজকে জানান সুপ্রিমকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল সৈয়দ আমীরুল ইসলাম। তিনি বলেন, জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন (সাকা) কাদের চৌধুরীর মৃত্যুদণ্ডের চূড়ান্ত রায় প্রকাশ পেয়েছে।
এর কিছুক্ষণ পরেই সুপ্রিম কোর্টের ওয়েব সাইটে আপলোড করা হয় মুজাহিদের ১৯১ পৃষ্ঠার ও সাকা চৌধুরীর ২১৭ পৃষ্ঠার রায়।
এর আগে গত ১৬ জুন সকালে আলী আহসান মুজাহিদ এবং ২৯ জুলাই সকালে সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার সদেস্যের বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন। বেঞ্চের অন্য বিচারপতিরা হলেন- বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
সাকা চৌধুরীই প্রথম বিএনপি নেতা, যার মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডের চূড়ান্ত রায় হল। সাকা চৌধুরী হচ্ছেন; বাংলাদেশের মন্ত্রিসভায় দায়িত্ব পালন করা দ্বিতীয় ব্যক্তি। এ নিয়ে ট্রাইব্যুনাল থেকে আপিল বিভাগে আসা পঞ্চম আপিল মামলার শুনানির চূড়ান্ত রায় প্রকাশ পেল।
এর আগে আরো ৪টি মামলা সুপ্রিমকোর্টে আপিলে নিষ্পত্তি হয়েছে। আপিলের প্রথম রায়ে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লার আপিল নিষ্পত্তির পর ২০১৩ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর যাবজ্জীবন সাজা বাড়িয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আপিল বিভাগ। এ রায় রিভিউ’র আবেদনও খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ। এরপর ওই বছর ১২ডিসেম্বর কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। গত বছর ১৭ সেপ্টেম্বর আপিলের দ্বিতীয় রায়ে জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ট্রাইব্যুনালে দেয়া সাজা মৃত্যুদণ্ড থেকে কমিয়ে তাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেন আপিল বিভাগ। আপিলের তৃতীয় রায়ে জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামানকে ট্রাইব্যুনালে দেয়া ফাঁসির দণ্ডাদেশ বহাল রাখা হয়।
ফাঁসির দণ্ড বহাল রাখায় রায়ের বিরুদ্ধে কামারুজ্জামানের রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) আবেদনও খারিজ করে রায় দেয় সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ। গত ১১ এপ্রিল রাতে এ ফাঁসি কার্যকর করা হয়। ট্রাইব্যুনালে দণ্ডিতদের মধ্যে কামারুজ্জামান হলেন দ্বিতীয় ব্যক্তি যার ফাঁসির রায় কার্যকর করা হলো।
উল্লেখ্য, হরতালে গাড়ি পোড়ানো ও ভাঙচুরের মামলায় সাকা চৌধুরীকে ২০১০ সালের ১৫ ডিসেম্বর রাতে গ্রেফতার করা হয়। তদন্তের স্বার্থে এক আবেদনের প্রেক্ষিতে ওই বছরের ১৯ ডিসেম্বর মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। সে থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।
এছাড়া ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার অভিযোগে একটি মামলায় ২০১০ সালের ২৯ জুন গ্রেফতার হন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ। পরে ওই বছরের ২ জুলাই তাকে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় আটক রাখাল আদেশ দেয়া হয়। সেই থেকে কারাগারে আছেন এ জামায়াত নেতা।
এফএইচ/এসএইচএস/এএইচ/আরআইপি