পদ্মা সেতুতে লাগবে মাথা, সেই বাবুর জামিন মেলেনি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:১২ পিএম, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৯

‘পদ্মা সেতু নির্মাণে এক লাখ মানুষের কাটা মাথা লাগবে’- এমন গুজব ছড়ানোর অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় গ্রেফতার নড়াইলের নাজমুল হোসেন ওরফে বাবুর জামিন মেলেনি। তবে তার জামিনেরর বিষয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

রুলে নাজমুল হোসেন ওরফে বাবুর জামিন কেন দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়েছেন আদালত। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আদেশের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।

জামিন-সংক্রান্ত আবেদন শুনানি নিয়ে বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. শওকত হোসেন ও বিচারপতি ফাতেমা নজীবের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে রুল জারির এ আদেশ দেন।

আদালতে এদিন জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট হেলাল উদ্দিন মোল্লা। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।

গত ৪ সেপ্টেম্বর একই বেঞ্চে আবেদনের পক্ষে জামিন শুনানি শুরু হলে হাইকোর্ট রাষ্ট্রপক্ষকে মামলাটি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করে শুনানির জন্য বলেন। আজ রাষ্ট্রপক্ষের শুনানি নিয়ে রুল জারির এ আদেশ দেন।

শুনানিতে আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেন, আসামি তার মোবাইল ম্যাসেঞ্জারে গুজবের বিষয়টি অন্য মোবাইলে প্রেরণ করেননি। এর জবাবে রাষ্ট্রপক্ষ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ই-মেইলের মাধ্যমে প্রেরিত আসামি কর্তৃক সাতজনের ম্যাসেঞ্জারে মিথ্যা গুজবটি প্রেরণের ডকুমেন্ট দাখিল করেন এবং জানান, বিষয়টি সিআইডি বরাবর নিশ্চিতের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। এ অবস্থায় আসামির জামিন দেননি হাইকোর্ট। জামিন প্রশ্নে চার সপ্তাহের রুল জারি করেছেন।

গত ১৯ আগস্ট মো. নাজমুল হোসেন (৪০) ওরফে বাবুর জামিন চেয়ে নড়াইল আদালতে আবেদন করা হয়। এরপর ওই জামিন আবেদনের শুনানি নিয়ে তা নাকোচ করেন নড়াইলের ভারপ্রাপ্ত দায়রা জজ মো. হায়দার আলী খোন্দকারের আদালত।

বিচারিক আদালতে জামিন আবেদন নিষ্পত্তিতে বলা হয়, নথি পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, এজাহার বর্ণনায় আবেদনকারী আসামি নাজমুল হোসেন বাবুর বিরুদ্ধে তার নামের ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার আইডি থেকে ‘পদ্মা সেতু নির্মাণে এক লাখ মানুষের মাথা লাগবে’ মর্মে সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব ও আতঙ্ক ছড়ানোর সুনির্দিষ্ট অভিযোগ বিদ্যামান। বিষয়টি স্পর্শকাতর এবং দেশের মানুষের জন্য ব্যাপক বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। অতএব আসামি নাজমুল হোসেন বাবুর জামিন আবেদনটি ‘নামঞ্জুর’ করা হলো।

বিচারিক আদালতে জামিন না পেয়ে হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন আসামি নাজমুল হোসেন বাবু।

২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫ (২), ৩১ (২), ৩৫ ধারায় গত ২৫ জুলাই নড়াইল সদর থানায় নাজমুল হোসেন বাবুর বিরুদ্ধে মামলা করেন পুলিশের পরিদর্শক মো. ইলিয়াস হোসেন। বাবুকে তার মোবাইলসহ হাতেনাথে গ্রেফতার করে এ অভিযোগ দায়ের করা হয়।

পোস্টে বাবু লেখেন, ‘পদ্মা সেতু নির্মাণে বাধার সৃষ্টি হওয়ায় এক লাখ বা তারও অধিক মানুষের মাথা প্রয়োজন। পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ চালিয়ে যেতে তাই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে দেশজুড়ে ৪২ দল বের হয়েছে এ মাথা সংগ্রহের জন্য। এরা পথেঘাটে, খেলার মাঠে, হাট-বাজারে ঘুরে বেড়ায়। এদের কাছে আছে ধারালো ছুরি এবং বিষাক্ত গ্যাস, যা ১০-১৫ হাত দূর থেকে স্প্রে করলেই মানুষ অজ্ঞান হয়ে যায়। তখন তারা মাথা কেটে নিয়ে যায়। তাদের লক্ষ্য মাথা কাটা। ইতোমধ্যে খুলনায় অনেক মাথা কেটে নেয়া হয়েছে; তাই সাবধান থাকবেন, বাসার সবাইকে সতর্ক করে দেবেন এবং বাসায় কোনো ভিক্ষুক এলে সাবধানে থাকবেন। অপরিচিত কেউ এলে দরজা খুলবেন না। (সাবধান বাঙালি), বেশি বেশি ফরোয়ার্ড করুন এবং অন্যের জীবন রক্ষা করুন।’

এফএইচ/এমএআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।