হাইকোর্টে শুনানির আগেই সিএমএম কোর্টে মইনুলের জামিন

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:২৫ পিএম, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯

মানহানির অভিযোগে এক নারী সাংবাদিকের দায়ের করা মামলায় সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের জামিন চেয়ে হাইকোর্ট আবেদন করা হয়েছিল। তবে, এর আগেই সিএমএম কোর্টে অসুস্থতাজনিত কারণে পাঁচ হাজার টাকা বন্ডে তার জামিন মঞ্জুর হয়েছে।

রোববার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের পক্ষে তার মামা ও আইনজীবী খন্দকার মাহাববু হোসেন আবেদনটি করেন। কিন্তু এরই মধ্যে দুপুরে খবর আসে তার জামিন মঞ্জুর করেছেন বিচারিক আদালত।

এ বিষয়ে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের অপর আইনজীবী এম মাসুদ জাগো নিউজকে জানান, সিএমএম কোর্ট থেকে জামিন না পেয়ে আমরা হাইকোর্টে আবেদন করেছিলাম। জামিন আবেদনের বিষয়ে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে আগামীকাল সোমবার ১টা ২০ মিনিটে শুনানির জন্য সময় নির্ধারণ করেছিলেন।

‘রোববার বিচারপতি মুহাম্মদ আব্দুল হাফিজ ও বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ দিন ঠিক করে আদেশ দেন। এখন শুনছি ওনার জামিন হয়েছে।’

গত ৩ সেপ্টেম্বর মানহানির অভিযোগে সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টির দায়ের করা মামলায় সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ঢাকা মহানগর হাকিম মো. তোফাজ্জল হোসেন।

একই আদালত আজ (৮ সেপ্টেম্বর) তার জামিন মঞ্জুর করেন। এদিন তার জামিনের পক্ষে শুনানি করেন ঢাকা বারের সাবেক সভাপতি গোলাম মোস্তাফা, আইনজীবী আমিনুল ইসলাম ও মহিউদ্দিন চৌধুরী।

আইনজীবীরা জানান, ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন সব মামলায় জামিনে রয়েছেন। সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টি নিজে বাদী হয়ে ঢাকা মহানগর হাকিম তোফাজ্জল হোসেনের আদালতে মানহানির মামলাটি করেছিলেন। এ মামলাতেও ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়েছিলেন।

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের নির্দেশনা ছিল, সংশ্লিষ্ট আদালতে আত্মসমর্পণ করে উচ্চ আদালতের দেয়া জামিনের বিষয়ে অবহিত করতে হবে। সেই সঙ্গে পুনরায় নিম্ন আদালত থেকে জামিন নিতে হবে। তারই ধারাবাহিকতায় তিনি জামিন নিতে গেলে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছিলেন আদালত।

গত ১৬ অক্টোবর একাত্তর টেলিভিশনের টক শো ‘একাত্তরের জার্নাল’-এ ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টি প্রশ্ন করেন, ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে আপনি যে হিসেবে উপস্থিত থাকেন- আপনি বলেছেন আপনি নাগরিক হিসেবে উপস্থিত থাকেন। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই বলছেন, আপনি জামায়াতের প্রতিনিধি হয়ে সেখানে উপস্থিত থাকেন।’

মাসুদা ভাট্টির এমন প্রশ্নে রেগে গিয়ে মইনুল হোসেন বলেন, ‘আপনার দুঃসাহসের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ দিচ্ছি। আপনি চরিত্রহীন বলে আমি মনে করতে চাই। আমার সঙ্গে জামায়াতের কানেকশনের কোনো প্রশ্নই নেই। আপনি যে প্রশ্ন করেছেন তা আমার জন্য অত্যন্ত বিব্রতকর।’

তার এসন মন্তব্যে প্রকাশ্য ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়ে বক্তৃতা-বিবৃতি দেন বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠন। এরপর রংপুর ও জামালপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তার বিরুদ্ধে মানহানি ও ডিজিটাল আইনে আরও কয়েকটি মামলা হয়।

রংপুরে করা মানহানির এক মামলায় ২২ অক্টোবর রাত পৌনে ১০টার দিকে রাজধানীর উত্তরায় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রবের বাসা থেকে মইনুল হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) কার্যালয়ে নেয়া হয়। পরে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে সব মামলায় জামিন পেয়ে কারামুক্ত হন সুপ্রিম কোর্টের এ জ্যেষ্ঠ আইনজীবী।

এফএইচ/জেএ/এমএআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।

আরও পড়ুন