অ্যাম্বুলেন্স পারাপারে সর্বাধিক অগ্রাধিকার দেয়ার সুপারিশ
ফেরিতে অ্যাম্বুলেন্স ও লাশবাহী গাড়ি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে পারাপারের ব্যবস্থা গ্রহণ করাসহ সাত দফা সুপারিশ করে হাইকোর্টে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে তিতাসের মৃত্যুর ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি।
মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি এক নম্বর ফেরিঘাটে ভিআইপির জন্য (যুগ্ম সচিব) প্রায় দুই ঘণ্টা ফেরি আটকে রাখার কারণে স্কুল ছাত্র তিতাস ঘোষের মৃত্যুর অভিযোগ তদন্ত করে প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ের কমিটি এ প্রতিবেদন জমা দেয়।
তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশে বলা হয়, লাশবাহী গাড়ি বা অ্যাম্বুলেন্সকে সর্বাধিক অগ্রাধিকার দিতে হবে। প্রত্যেক ঘাটে ও ফেরিতে সিসি ক্যামেরা বসিয়ে গাড়ি পারাপার পর্যবেক্ষণ করতে হবে। ফেরিঘাট ও ফেরিতে কর্মরত সবার নামসহ নির্দিষ্ট পোশাক পরিধানের ব্যবস্থা করতে হবে। ঘাটে ও ফেরিতে গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরি মোবাইল নম্বরসমূহ প্রদর্শনের ব্যবস্থা করতে হবে।
বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে এ সংক্রান্ত তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হয় । প্রতিবেদনটি হাইকোর্টের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে দাখিল করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কোর্টের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
এরপর হাইকোর্ট প্রতিবেদনের বিষয়ে আগামী ১৩ অক্টোবর শুনানি হতে পারে বলেও জানান তিনি। ব্যারিস্টার এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার জানান, ভবিষ্যতে এ রকম অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে প্রতিবেদনে সাত দফা সুপারিশ করা হয়েছে।
সুপারিশগুলো হলো-
১. অ্যাম্বুলেন্স, লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স/গাড়ি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার প্রদান করে ফেরিঘাটে পারাপারের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে
২. ঘাট থেকে ফেরি ছাড়া ও পৌঁছানোর সময় মাস্টারকে অবশ্যই স্থায়ী লগ বুক/রেজিস্টারের সময় লিখে স্বাক্ষর করতে হবে
৩. ফেরিঘাটে ভিড়িয়ে ফেরির র্যাম্প উঠিয়ে কোনো ব্যক্তিবিশেষের জন্য কোনোক্রমে অপেক্ষা করা যাবে না
৪. নীতিমালা অনুযায়ী ভিআইপি সুবিধা চেয়ে কেউ ফেরি পারাপার হতে চাইলে তাকে অবশ্যই তার সরকারি ভ্রমণ বিবরণী পূর্ব হতে ফেরি কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠাতে হবে। তবে জরুরি প্রয়োজনে পূর্বে যোগাযোগ সাপেক্ষে ও অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে এ নিয়ম শিথিল করা যেতে পারে
৫. প্রত্যেক ঘাটে ও ফেরিতে সিসি ক্যামেরা বসিয়ে গাড়ি ও ফেরি পারাপারের বিষয়সমূহ পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ করতে হবে
৬. ফেরিঘাট ও ফেরিতে কর্মরত সবার নাম ট্যাগসহ নির্দিষ্ট পোশাক পরিধান করতে হবে এবং
৭. ফেরিঘাট ও ফেরিতে জরুরি গুরুত্বপূর্ণ মোবাইল নম্বরসমূহ প্রদর্শন করতে হবে।
কমিটি আলোচিত যুগ্ম সচিব আব্দুস সবুর মণ্ডলের কোনো দোষ খুঁজে পায়নি তদন্ত কমিটি। ফেরি দেরিতে ছাড়ার জন্য ওইদিন দায়িত্বরত ফেরিঘাটের তিন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দায়ী করে তদন্ত কমিটি। তারা হলেন- ঘাট ম্যানেজার মো. সালাম হোসেন, প্রান্তিক সহকারী মো. খোকন মিয়া এবং উচ্চমান সহকারী ও গ্রুপ প্রধান ফিরোজ আলম।
হাইকোর্টের নির্দেশনার আগেই ঘটনা তদন্তে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. রেজাউল হাসানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটির তদন্ত শেষে হাইকোর্টে দাখিল করার জন্য ৩৫ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে জমা দিয়েছেন।
এফএইচ/আরএস/এমকেএইচ