তিতাসের মৃত্যুতে ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপকসহ তিন জন দায়ী

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:০৪ পিএম, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯

ফেরিঘাটে স্কুলছাত্র তিতাস ঘোষের মৃত্যুর ঘটনায় ঘাটের ব্যবস্থাপক সালাম হোসেনসহ তিনজনকে দায়ী করে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। অন্য দুজন হলেন- ঘাটের প্রান্তিক সহকারী খোকন মিয়া ও উচ্চমান সহকারী ফিরোজ আলম।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নির্ধারিত সময়ের দুই ঘণ্টা দেরিতে ফেরি ছাড়ার কারণে তিতাসের মৃত্যু হওয়ায় তিনজন দায় এড়াতে পারেন না। তবে যুগ্ম সচিব আব্দুস সবুর মণ্ডলের দোষ খুঁজে পায়নি তদন্ত কমিটি।

এ বিষয়ে দাখিল করা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুগ্ম সচিব আব্দুস সবুর মণ্ডল জানতেন না যে ফেরিঘাটে মুমূর্ষু রোগী আছে। কোনো ব্যক্তিবিশেষের জন্য কোনো ভাবেই ফেরি দেরি করে ছাড়া যাবে না বলে প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়।

বৃহস্পতিবার প্রতিবেদন দাখিলের বিষয়টি নিশ্চিত করেন সংশ্লিষ্ট কোর্টের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. রেজাউল হাসানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি এ প্রতিবেদন দাখিল করে। অপর দুই সদস্য হলেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব আ. সাত্তার শেখ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিরাপত্তা বিভাগের যুগ্ম সচিব তোফায়েল ইসলাম।

বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ প্রতিবেদনের ওপর শুনানি হবে।

এর আগে গত ৩১ জুলাই মাদারীপুর কাঁঠালবাড়ি ফেরিঘাটে স্কুলছাত্র তিতাস ঘোষের মৃত্যুর ঘটনায় অতিরিক্ত সচিবের নিচে নন, এমন পদমর্যাদার কর্মকর্তার নেতৃত্বে তদন্ত করার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

একই সঙ্গে রুলে তিতাসের পরিবারকে কেন তিন কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে না- তা জানতে চাওয়া হয়। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. জহির উদ্দিন লিমন।

নড়াইল কালিয়া পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র তিতাস ঘোষ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হলে তাকে খুলনার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য অ্যাম্বুলেন্সে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির উদ্দেশে রওনা হয় পরিবারের লোকজন।

রাত ৮টার দিকে কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌ-রুটের মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি ১ নম্বর ভিআইপি ফেরিঘাটে পৌঁছায় অ্যাম্বুলেন্সটি। তখন ঘাটে কুমিল্লা নামে একটি ফেরি যানবাহন পারাপারের অপেক্ষায় ছিল। এ সময় সরকারের এটুআই প্রকল্পের যুগ্ম সচিব আবদুস সবুর মণ্ডল পিরোজপুর থেকে ঢাকা আসবেন বলে ওই ফেরিকে অপেক্ষা করতে ঘাট কর্তৃপক্ষকে বার্তা পাঠানো হয়।

তিন ঘণ্টা অপেক্ষার পর ফেরিতে ওঠে অ্যাম্বুলেন্সটি। কিন্তু এর মধ্যে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়ে অ্যাম্বুলেন্সেই মারা যায় তিতাস। বিষয়টি জানাজানি হলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে তিতাসের মৃত্যু নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হয়। এতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়।

এফএইচ/এনডিএস/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।