খালেদার বিরুদ্ধে বড়পুকুরিয়া দুর্নীতি মামলা চলবে
বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার করা আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। এই আদেশের ফলে এই মামলার কার্যক্রম (নিম্ন) বিচারিক আদালতে চলতে আর কোন বাধা রইলো না বলে জানিয়েছেন দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান।
কয়লা খনি দুর্নীতি মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের জারি করা রুলের চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করে বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান ও বিচারপতি আব্দুর রবের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই রায় দেন।
আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে উপস্থিত ছিলেন, আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, এজে মোহাম্মাদ আলী ও ব্যারিস্টার রাগিব রউফ চৌধুরী। এছাড়া রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ইয়াসমিন বেগম ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুর রাকিব। দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান এসময় উপস্থিত ছিলেন।
আদেশের পর খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার রাগিব রউফ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার করা আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। যে স্থগিতাদেশ ছিল সেটিও বাতিল করেছেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে আমরা সংক্ষুব্ধ হয়েছি। আমরা এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাবো।’
তার আগে গত ৩০ আগস্ট মামলার শুনানি শেষে যেকোনো দিন রায়ের জন্য (সিএভি) রেখেছিল সংশ্লিষ্ট আদালত। পরে গত ১৫ সেপ্টেম্বর রায়ের জন্য ১৭ তারিখের কার্যতালিকায় রাখেন।
আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলী, ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার রাগিব রউফ চৌধুরী ও এহসানুর রহমান প্রমুখ। অপরদিকে শুনানি করেন দুদকের পক্ষে আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
তার আগে খালেদা জিয়া মামলাটি বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন ২০০৮ সালে। দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি উত্তোলন, ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণে ঠিকাদার নিয়োগে অনিয়ম এবং রাষ্ট্রের ১৫৮ কোটি ৭১ লাখ টাকা ক্ষতি ও আত্নসাৎ করার অভিযোগে ২০০৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি শাহবাগ থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়।
ওই বছর ৫ অক্টোবর ১৬ জনের বিরুদ্ধেই অভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক। এক আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০০৮ সালের ১৬ অক্টোবর খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এ মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে হাইকোর্ট। মামলাটি কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে সংশ্লিষ্টদের প্রতি রুলও জারি করা হয়।
বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলায় চারদলীয় জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও ওই সরকারের ১০ মন্ত্রীসহ ১৬ জনকে আসামি করা হয়।
মামলায় খালেদা জিয়া ছাড়া অপর আসামিরা হলেন- সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান (মৃত), সবেক স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী আবদুল মান্নান ভূঁইয়া (মৃত), সাবেক শিল্পমন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামী, সবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, এম কে আনোয়ার, এম শামসুল ইসলাম (মৃত), আলতাফ হোসেন চৌধুরী, ব্যারিস্টার আমিনুল হক, একেএম মোশাররফ হোসেন, জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব নজরুল ইসলাম, পেট্রোবাংলার সাবেক চেয়ারম্যান এস আর ওসমানী, সাবেক পরিচালক মঈনুল আহসান, বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম ও খনির কাজ পাওয়া কম্পানির স্থানীয় এজেন্ট হোসাফ গ্রুপের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন।
এফএইচ/এসএইচএস/এমএস