সঠিক সময়ে পদক্ষেপ নিলে এত লোক মারা যেত না

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:৩৮ পিএম, ২৭ আগস্ট ২০১৯

‘ডেঙ্গু প্রতিরোধে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ব্যর্থতার কারণে মানুষের মৃত্যু হয়েছে’- এমন মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, মশা নিধন আদেশ দেয়ার পরও সিটি করপোরেশন কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারেনি।

প্রতি বছর জনগণের করের টাকা বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে কিন্তু মশা নিয়ন্ত্রণে কোনো ফল পাওয়া যাচ্ছে না। সরকার দুই সিটি করপোরেশনের বাজেট বৃদ্ধি করেছে। সেই বাজেটের টাকা কোথায় যায়? দুই সিটি করপোরেশন সঠিক সময়ে পদক্ষেপ নিলে এতো লোক মারা যেত না- বলেন আদালত।

পরে আদালত ওই প্রতিবেদনের ওপর শুনানির জন্য হাইকোর্টের অপর একটি দ্বৈত বেঞ্চে যাওয়ার নির্দেশ দেন, যেখানে ডেঙ্গু নিয়ে আগেই রুল জারি করা হয়েছে।

ডেঙ্গু নিয়ে দুই সিটি করপোরেশনের প্রতিবেদন পেশের পর মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এমন মন্তব্য করেন।

আদালতে এদিন আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষে সাঈদ আহমেদ রাজা ও উত্তর সিটি করপোরেশনের পক্ষে ছিলেন তৌফিক এনাম টিপু। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ সাইফুল আলম।

মশা নিধনে অকার্যকর ওষুধ আমদানিতে দুই সিটি করপোরেশনের কারা জড়িত এবং গাফিলতির বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করতে আদালত এর আগে নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই মোতাবেক দুই সিটি করপোরেশন প্রতিবেদন নিয়ে আদালতে হাজির হয়।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষে আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা আদালতকে জানান, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীনে নতুন ওষুধ আনা হয়েছে। তিনি বলেন, আদালতের নির্দেশে গত ১১ আগস্ট থেকে নতুন ওষুধ ছিটানো শুরু হয়েছে। ২০ আগস্ট থেকে ভারত থেকে আনা নতুন ওষুধ ‘ডেল্টামেথরিন’ ছিটানো শুরু হয়। এতে গত কয়েক দিন ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা আগের তুলনায় কমে এসেছে।

আইনজীবী আরও বলেন, দক্ষিণ সিটির পাশাপাশি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ও আদালতে প্রতিবেদন পেশ করেছে।

পরে আদালত এ প্রতিবেদনের ওপর শুনানির জন্য অপর বেঞ্চে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন, যেখানে ডেঙ্গু নিয়ে আগেই রুল জারি করা হয়েছে।

এর আগে মশা নিধনে অকার্যকর ওষুধ আমদানি ও সরবরাহে জড়িতদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্তের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনকে বিষয়টি তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিয়ে প্রতিবেদন দিতে বলেন আদালত।

আদেশের পরে মনজিল মোরসেদ বলেন, সিটি করপোরেশন মশা নিয়ন্ত্রণে যে ব্যবস্থা নিচ্ছে সেটা অকার্যকর। মিডিয়ায় রিপোর্ট এসেছে, যে ওষুধগুলো দেয়া হচ্ছে, সে ওষুধগুলোর মধ্যে কার্যকারিতা নেই। তারপরও ওই ওষুধগুলো তারা দিচ্ছে। এগুলো দুর্নীতির মাধ্যমে নেয়া হচ্ছে। যারা এ কাজগুলো করছে তাদের বিরুদ্ধে সিটি করপোরেশন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। পরে আদালত বলেন, যেহেতু ডেঙ্গু নিয়ে হাইকোর্টের অপর একটি বেঞ্চ রুল জারি করেছেন। ওই বেঞ্চে এ আবেদনের ওপরও শুনানির আবেদন করেন।

গত ২ জুলাই এ সংক্রান্ত রিটের পরিপ্রেক্ষিতে মশা নিধনে কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তা জানাতে বলেছিলেন হাইকোর্ট। এরপর দুই সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে দুটি প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করা হয়।

এফএইচ/এমএআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।