গুগল-ফেসবুকে বিজ্ঞাপন : দুই হিসাবে ব্যাপক ফারাক
তিন মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোন, বাংলালিংক ও রবি গত পাঁচ বছরে গুগল, ফেসবুক, ইউটিউব, ইয়াহু, হোয়াটসঅ্যাপ, আমাজন, ইমোসহ অন্যান্য ইন্টারনেটভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে বিজ্ঞাপন বাবদ আট হাজার ৭৪৪ কোটি ১৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা প্রদান করেছে বলে হাইকোর্টে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।
অপরদিকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাত্র ১৩৩ কোটি টাকা জমা দিয়েছে। এই দুই প্রতিবেদনের হিসাবের গড়মিলের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে আগামী ২০ অক্টোবরের মধ্যে এনবিআরকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
একইসঙ্গে ইন্টারনেটভিত্তিক সবধরনের প্রতিষ্ঠান থেকে রাজস্ব আদায়ে কী কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে- তাও এনবিআরকে জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে এই প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
আদালতে বিটিআরসির পক্ষে প্রতিবেদন দাখিল করেন আইনজীবী একেএম আলমগীর পারভেজ। রিট আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির পল্লব। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।
আদালতে বিটিআরসির সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিসেস বিভাগের উপপরিচালক প্রকৌশলী মো. নাহিদুল হাসান স্বাক্ষরিত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত পাঁচ বছরে গ্রামীণফোন, বাংলালিংক এবং রবি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে ১০৪ কোটি ৯ লাখ ৭৫ হাজার ৫৯৬ মার্কিন ডলার (আট হাজার ৭৪৪ কোটি ১৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা) দিয়েছে। এর মধ্যে গ্রামীণফোন দিয়েছে ৪৩ কোটি ৩১ লাখ ২৫ হাজার ৬২৯ ডলার, বাংলালিংক দিয়েছে ২৮ কোটি ৬৪ লাখ ৬৯ হাজার ৯৬৭ ডলার এবং রবি দিয়েছে ৩২ কোটি ১৩ লাখ ৮০ হাজার ডলার।
তবে একই বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আরেকটি প্রতিবেদন দাখিল করে। সেখানে ১৩৩ কোটি টাকার হিসাব দেয়া হয়েছে। গত ২৩ জুন হাইকোর্ট এনবিআরকে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার এনবিআর আদালতের কাছে সময় চায়। আদালত এনবিআরকে পুনরায় প্রতিবেদন দাখিল করতে সময় বেঁধে দিয়েছেন।
এর আগে ২০১৮ সালের ১৮ এপ্রিল হাইকোর্ট ইন্টারনেটভিত্তিক সবধরনের প্রতিষ্ঠানের রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দেন। এছাড়াও ইন্টারনেট মাধ্যমগুলোর মাধ্যমে বিজ্ঞাপন, ডোমেইন বিক্রি এবং বিভিন্ন প্রকার লাইসেন্স বিক্রির ফিসহ যেকোনো লেনদেনের বিপরীতে যে পরিমাণ টাকা পরিশোধ করা হয় তা থেকে আদায়যোগ্য রাজস্ব সংগ্রহ করতে বলা হয়।
সুপ্রিম কোর্টের ছয় আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির, ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাউসার, অ্যাডভোকেট আবু জাফর মো. সালেহ, অ্যাডভোকেট অপূর্ব কুমার বিশ্বাস, ব্যারিস্টার মোহাম্মদ সাজ্জাদুল ইসলাম ও ব্যারিস্টার মোহাম্মদ মাজেদুল কাদেরের করা রিট আবেদনে এ আদেশ দেন আদালত। আদালত অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশনার পাশাপাশি রুল জারি করেন।
এফএইচ/বিএ