১৮ বছর পর মা-বাবাকে বিয়ে দিলেন মিলন
প্রেম করে বিয়ে, তারপর স্ত্রীর গর্ভে সন্তান। কিন্তু পরে সেই স্ত্রী ও সন্তানকে অস্বীকার। এরপর ডিএনএ টেস্টে মেলে সন্তানের পরিচয়। এভাবে প্রায় দেড় যুগ পর (ছয় হাজার ৫৭০ দিন) স্বামী ইসলামের স্ত্রীর মর্যাদা পেলেন ঝিনাইদহের মালা। সন্তানের মর্যাদা পেলেন মিলন। দেড় যুগ আইনি লড়াইয়ের পর তারা এ স্বীকৃতি পান।
প্রথমে প্রেম করে বিয়ে। এরপর গতকাল বুধবার (৩১ জুলাই) যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে দ্বিতীয় দফায় বিয়ে হয়েছে তাদের। এতে উপস্থিত ছিলেন ১৮ বছর বয়সী ছেলে মিলন। ১৮ বছর পর নিজের মা-বাবাকে বিয়ে দিলেন নিজের সন্তান।
জানা গেছে, ঝিনাইদহের লক্ষ্মীপুর গ্রামের মেয়ে মালার সঙ্গে একই গ্রামের আজিজ মৃধার ছেলে ইসলামের প্রেম থেকে পরিণয় ঘটে। স্থানীয় মৌলভীর মাধ্যমে ২০০০ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি বিয়ে করেন তারা। পরবর্তীতে মালা গর্ভবতী হন। ২০০১ সালের ২১ জানুয়ারি মালার গর্ভে জন্ম নেয় তাদের ছেলে মিলন।
একসময় ইসলাম মালার সঙ্গে তার বিয়ে ও মিলনের পিতৃত্ব অস্বীকার করেন। এরপর মালার বাবা ইসলামের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করেন। এ মামলায় বিচারিক আদালত ইসলামকে যাবজ্জীন কারাদণ্ড দেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে ইসলাম আপিল করলে রায় বহাল রাখেন হাইকোর্ট।
এরপর হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আবেদন করলে সেখানেও ইসলামের সাজার রায় বহাল রাখেন। পরবর্তীতে আপিল বিভাগে রিভিউ আবেদন করেন যাবজ্জীন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ইসলাম।
ইসলামের করা রিভিউ শুনানিতে আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল প্রধান বিচারপতির নেত্বত্বে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির বেঞ্চে মালা ও মিলনের স্বীকৃতির বিষয়টি সামনে আনেন।
আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল আপিল বিভাগকে বলেন মালা ইসলামেরই স্ত্রী। আর মিলন যে ইসলামের সন্তান সেটা হাইকোর্টের আদেশর পর ডিএনএ রিপোর্টে প্রমাণিত। এরপর বুধবার যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে মালা-ইসলামের মধ্যে পুনরায় বিয়ে হয়।
সেখানে বিয়ের রেজিস্ট্রি (কাবিনও) হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন ছেলে মিলন। এরপর আপিল বিভাগ ইসলামকে জামিনে মুক্তির নির্দেশ দেন। আগামী ২৯ আগস্ট এ বিষয়ে অগ্রগতি জানাতে নির্দেশ দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
এফএইচ/বিএ