শিশুদের নিরাপদ ইন্টারনেট সেবা দিতে রুল
শিশুদের নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহারের নির্দেশ কেন দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে শিশুবান্ধব ইন্টারনেট চালুর নির্দেশ কেন দেয়া হবে না তাও রুলে জানতে চেয়েছেন আদালত।
এ ছাড়া শিশুদের জন্য ক্ষতিকর, অশ্লীল, আপত্তিকর ওয়েবসাইট বন্ধ এবং (হরর) ভুতুড়ে ও নিষ্ঠুর গেম বন্ধে নির্দেশনা কেন দেয়া হবে না- তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় সচিব, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সচিব, শিক্ষা মন্ত্রণালয় সচিব, সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় সচিব, আইন মন্ত্রণালয় সচিব ও মোবাইল অপারেটর জিপি, বাংলালিংক, রবি ও এয়ারটেলসহ সংশ্লিষ্ট ১৫ জনকেএ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
জনস্বার্থে করা এক রিটের শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ কামরুল হাসান। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী আসমা পরভীন ও সাজেদুল ইসলাম। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এবিএম আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সাইফুল আলম।
আইনজীবীরা জানান, বিভিন্ন গণমাধ্যমে শিশুদের জন্য ইন্টারনেটের ক্ষতিকর দিক তুলে ধরে প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করে রিটটি করেন আইনজীবী আসমা পারভীন।
শিশুদের জন্য নিরাপদ ইন্টারনেট নিশ্চিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না এবং ক্ষতিকর ইন্টারনেট থেকে কেন সরানো হবে না জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে শিশুদের জন্য ইন্টারনেট তদারকিতে কর্তৃপক্ষ গঠন করার নির্দেশ কেন দেয়া হবে না তাও জানতে চেয়েছেন আদালত।
শিশুদের নিরাপদ ইন্টারনেট সেবা এবং আপত্তিকর সাইটগুলো অপসারণ, মনিটরিং ও পর্যবেক্ষণের জন্য কেন একটি কর্তৃপক্ষ গঠন করা হবে না-তাও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।
কামরুল ইসলাম জানান, বর্তমানে শিশু ও নারীদের প্রতি নিষ্ঠুর, নিপীড়ন ও ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশের আশঙ্কাজনকভাবে শিশু-কিশোরদের অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। মূলত প্রযুক্তিগত আসক্তির ফলে শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। মনোরোগ বিষেজ্ঞদের চেম্বারে আশঙ্কাজনকভাবে শিশু-কিশোরদের বিভিন্ন গেমে আসক্তি নিয়ে অভিভাবকরা ভিড় করছেন। ইন্টারনেট প্রযুক্তির অশ্লীল-আপত্তিকর ও ক্ষতিকর দিকগুলোর প্রতি শিশুদের সংশ্লিষ্টতার কারণে সমাজ ব্যবস্থা এবং নৈতিকতার চরম অবক্ষয় হচ্ছে। হরর ভৌতিক ও আপত্তিকর গেম খেলতে গিয়ে শিশুরা পর্নোগ্রাফির সাইটে ঢুকে যাচ্ছে। এতে শিশুদের অবক্ষয় হচ্ছে বলেও গবেষণায় উঠে এসেছে। তাই এসব থেকে শিশু ও অবিভাবককে পরিত্রাণ পেতে ইন্টারনেট আসক্তি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে গবেষণাধর্মী প্রতিবেদন সংযুক্ত করে গত ২৮ জুলাই জনস্বার্থে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট করা হয়।
এফএইচ/এনডিএস/এমকেএইচ