বিয়ের প্রলোভনে একাধিকবার ধর্ষণ, গ্রেফতারের তিনদিনের মাথায় জামিন
রাজধানীর বংশালে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এক নারীকে ধর্ষণ ও গর্ভের সন্তান নষ্ট করার অভিযোগে গ্রেফতার জুয়েল মুন্সিকে জামিন দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) ঢাকার ১ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে আসামি জুয়েলের আইনজীবী জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবু নাসের মো. জাহাঙ্গীর আলম জামিন মঞ্জুর করেন।
এর আগে আসামি জুয়েলকে গ্রেফতারি পরোয়ানামূলে ১৪ জুলাই গ্রেফতার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ থানা পুলিশ। পরদিন ১৫ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটার আব্দুল্লাহ আবু বলেন, ‘যেহেতু ধর্ষণ মামলার আসামি ঢাকার বাইরে গ্রেফতার হয়েছেন। আদালতের উচিত ছিল সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালে আসামিকে হাজির করে তার উপস্থিতিতে শুনানির জন্য দিন ধার্য রাখা। এভাবে শুনানি করে আসামির জামিন দেয়া ঠিক হয়নি।’
এদিকে সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল বারী বলেন, ‘মামলাটির জামিন শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আমরা বিরোধিতা করেছি। শুনানির সময় বাদীর আইনজীবী ও ভিকটিম নিজেও আদালতে হাজির ছিলেন। জামিন দেয়ার বিষয়টা আদালতের এখতিয়ার।’
ভিকটিমের পক্ষে আইনজীবী সৈয়দ মো. আসলাম ও সুমন শেখ শুনানি করেন। সৈয়দ মো. আসলাম বলেন, ‘ভিকটিম একজন অসহায় নারী। আসামি বিভিন্ন সময় তাকে ধর্ষণ করেছেন। এ অভিযোগে একই ট্রাইব্যুনালে মামলাটি করলে বিচারক আসামির বিরুদ্ধে ১৮ জুন গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। ১৪ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। এরপর ১৫ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। অথচ ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল গ্রেফতারের মাত্র তিনদিনের মাথায় আসামিকে জামিনের আদেশ দেন।’
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, বাদীর বাসার পাশে আসামি জুয়েল মুন্সির ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। একই এলাকায় থাকায় বাদীর সঙ্গে আসামির পরিচয় হয়। বাদী ও তার ছোট মেয়েকে রাস্তায় দেখা হলে আসামি বিভিন্ন অজুহাতে কথা বলতে চাইতেন এবং তার মেয়েকে চকলেট কিনে দিতেন। এভাবে কথাবার্তার মাঝে বিভিন্ন অজুহাতে বাদীর স্বামীর অনুপস্থিতিতে বাদীর বাসায় আসা-যাওয়া করতেন জুয়েল। একপর্যায়ে বাদীকে আসামি জুয়েল মুন্সি প্রেমের প্রস্তাব দিলে বাদী প্রত্যাখ্যান করেন। এরপর গত ১২ জানুয়ারি রাতে হঠাৎ আসামি জুয়েল মুন্সি বিপদে আছে বলে বাদীর বাসায় আসেন। এ সময় বাদী বাসায় আসায় আপত্তি করলে তার মেয়ে ঘুমিয়ে থাকায় আসামি বাদীকে ঝাপটে ধরে ধর্ষণ করে। এরপর বাদী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। ধর্ষণের বিষয়ে বাদী প্রতিবাদ করলে আসামি বাদীকে বিভিন্ন প্রলোভনসহ বিয়ে করার আশ্বাসও দেন। পরবর্তীতে বাদীর স্বামীকে তালাক দেয়া এবং গর্ভের সন্তান নষ্ট করার জন্য চাপ দেন জুয়েল। এরপর বাদী তার স্বামীকে তালাক দেন এবং গর্ভের সন্তান নষ্ট করেন।
জেএ/এনডিএস/পিআর