ধর্ষণ নিয়ে মিডিয়ার ভূমিকা ভালো : অ্যাটর্নি জেনারেল
‘ধর্ষণ একটি অপরাধ। এটা কমাতে হলে এলাকায় এলাকায় জনগণকে আরও সোচ্চার হতে হবে। মিডিয়া এ ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে আরও পালন করবে। এটা খুব ভালো দিক।’ কথাগুলো বলেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
ধর্ষণের মামলা নিষ্পত্তিতে হাইকোর্টের সাত দফা নির্দেশনা দিয়ে আদেশ দেওয়ার পর তার নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
এর আগে অ্যাটর্নি জেনারেল আদালতে এ বিষয়ে শুনানির জন্য উপস্থিত হলে আদালত আদেশের তথ্য তাকে অবহিত করেন। এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘এসব ধরনের ঘটনা তাৎক্ষণিকভাবে বিচারের জন্য একজন বিচারক স্ট্যান্ডবাই থাকবেন। অভিযোগ পাওয়ার পর ভিকটিমকে মেডিকেল অফিসারের কাছে তিনি নিয়ে যাবেন। এরপর রিপোর্টের ভিত্তিতে তাৎক্ষণিক বিচার করে ফেলতে হবে। দ্রুত বিচার ছাড়া এ জাতীয় প্রবণতা কমানো যাবে না।’
আদালত বলেন, ‘একটি ইয়ং মেয়ে বা শিশু ভিকটিম হবে আর বিচার বিলম্বিত হবে তা হতে পারে না। ভিকটিমের তো একটা ভবিষ্যৎ রয়েছে।’
এরপর অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘সাক্ষীদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য একটা আইন প্রণয়ন করা হয়। তার কারণ হলো অনেক সাক্ষী নিজেদের জীবনের ভয়ে বা সন্ত্রাসীদের আক্রমণের ভয়ে আদালতে আসতে চান না বা সাক্ষ্য দিতে চান না। এসব বিষয়ে সংবিধানের ১০৯ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সাত দফা নির্দেশনা দিয়ে আদেশ দেওয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সংবিধানের এই অনুচ্ছেদে বলা আছে, নিম্ন আদালতের তদারকি বা তত্ত্বাবধায়নের ক্ষমতা হাইকোর্ট বিভাগের। সেই অনুচ্ছেদের ক্ষমতা বলে হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ এ আদেশ প্রদান করেছেন।’
‘সাত দফার একটিতে বলা হয়েছে বা আইনেও বলা আছে, নির্দিষ্ট সময় অর্থাৎ ১৮০ দিনের মধ্যে মামলাগুলো নিষ্পত্তি করতে হবে। এটা যাতে সঠিকভাবে প্রতিপালিত হয় এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত’-যোগ করেন মাহবুবে আলম।
সাম্প্রতিক সময়ে ধর্ষণের মামলা অনেকাংশে বেড়ে গেছে। আজকে যে নির্দেশনা হাইকোর্ট দিয়েছেন আপনি কি মনে করেন তাতে ধর্ষণের ঘটনা কমবে-জানতে চাইলে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘এ আদেশের জন্য কমবে বলে মনে হয় না। এটাতো মামলাগুলো বিচারের জন্য তাড়াতাড়ি করার জন্য। আর ধর্ষণের বিষয়টির জন্য একটা সামাজিক আন্দোলন যদি না গড়ে তোলা হয়, তাহলে এভাবে এটা আমার মনে হয় না, প্রতিকার হবে। নির্দেশ দিয়েতো ধর্ষণ কমানো যাবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘ধর্ষণ কমাতে এলাকায় এলাকায় জনগণকে কমিটি করতে হবে। এবং ধর্ষণে আক্রান্ত যারা হয়, তাদের ব্যাপারে আগে থেকেই সুরক্ষা নিতে হবে।’
‘যদি কেউ দেখে ধর্ষণ করার পরে কোনো রকম বিচারের সম্মুখীন হতে হলো না। বিচারটা কার্যকরী হলো না, সেতো এ অপরাধের ব্যাপারে আরও উৎসাহিত হবে। কিন্তু আমার কথা হলো-এই (ধর্ষণ) অপরাধটা কমাতে হলে এলাকায় এলাকায় জনগণকে আরও সোচ্চার হতে হবে এবং মিডিয়া এ ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে আরও পালন করবে-এটা ভালো দিক।’
এফএইচ/এসআর/এমকেএইচ