প্রসাদ খাইয়ে স্কুলে মন্ত্রপাঠ করানো অন্যায় : হাইকোর্ট
ইসকন নামে হিন্দু ধর্মালম্বীদের একটি এনজিও চট্রগ্রামের স্কুলে স্কুলে প্রসাদ খাইয়ে শিক্ষার্থীদের ‘হরে কৃষ্ণ হরে রাম’ মন্ত্র পাঠ করানোর বিষয়টি হাইকোর্টের নজরে আনা হয়েছিল।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার বিষয়টি নজরে আনেন। এ সময় তিনি দৈনিক ইনকিলাবে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন পড়ে শোনান।
এই আইনজীবী আদালতকে বলেন, এক ধর্মের রীতিনীতি অন্য ধর্মের মানুষের ওপর চাপিয়ে দেয়া আমাদের সংবিধান সমর্থন করে না।
হাইকোর্ট বলেন, একটা এনজিও স্কুলে খাবার বিতরণ করতে পারে। কিন্তু জোর করে বা প্রলোভন দেখিয়ে যদি প্রসাদ খাওয়ায় তাহলে সেটা অন্যায়। তবে আমরা কোনো ধর্মীয় বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে চাই না। এর আগে শবে বরাত নিয়েও আমরা হস্তক্ষেপ করিনি।
তখন আইনজীবী বলেন, এখন যদি বিসমিল্লাহ বলে কেউ অন্য কোনো ধর্মের মানুষকে খাওয়ানো হয় সেটা কেমন হতো? আপনারা যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দেন। স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি আছে, স্থানীয় প্রশাসন আছে তাদেরকে বলুন।
তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, আদালত শেষ আশ্রয়স্থল। আমরা আগে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানাবো। সেখানে প্রতিকার না পেলে আমাদের আবার আপনাদের কাছে (আদালত) আসতে হবে।
উল্লেখ্য, দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকায় আজ ‘প্রসাদ খাইয়ে স্কুলে শিক্ষার্থীদের হরে কৃষ্ণ হরে রাম মন্ত্র পাঠ’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
ওই প্রতিবেদেনে বলা হয়েছে, স্কুলে শিক্ষার্থীদের প্রসাদ খাওয়ালো আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ-ইসকন। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের রথযাত্রা উপলক্ষে সপ্তাহব্যাপী ‘ফুড ফর লাইফ’ কর্মসূচির আড়ালে গত ১১ জুলাই থেকে নগরীর প্রায় ৩০টি স্কুলের শিক্ষার্থীর মাঝে প্রসাদ বিতরণ করা হয়। ইসকন কর্মীদের শেখানো মতে, কোমলমতি শিক্ষার্থীরা ‘হরে কৃষ্ণ হরে রাম’ মন্ত্র পাঠ করে এ প্রসাদ গ্রহণ করে।
শ্লোক-মন্ত্র পাঠের মাধ্যমে মুসলিমসহ বিভিন্ন ধর্মের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের প্রসাদ গ্রহণে উৎসাহিত করায় অনেক শিক্ষার্থী তা গ্রহণে অস্বীকৃত হয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ ধরনের নজিরবিহীন কর্মসূচিতে বিক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে এ ধরনের ঘটনায় বিস্ময় ও নিন্দা প্রকাশ করে এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানানো হয়েছে।
এফএইচ/এমএসএইচ/জেআইএম