ইউনিভার্সেল মেডিকেলের এমডিকে হাইকোর্টে তলব

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:১৪ পিএম, ০২ জুলাই ২০১৯

রোগী মারা যাওয়ার পরও চিকিৎসা চালানোর কারণ ব্যাখ্যা করতে ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের (প্রাক্তন আয়েশা মেমোরিয়াল হাসপাতাল) ব্যবস্থাপনা পরিচালককে (এমডি) তলব করেছেন হাইকোর্ট।

মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেনের নেতৃত্বে দ্বৈত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। ইউনিভার্সেল মেডিকেলের এমডিকে আগামী মঙ্গলবার (৯ জুলাই) সশরীরে হাইকোর্টে উপস্থিত থেকে রোগী মারা যাওয়ার পরও চিকিৎসা চালানোর কারণ ব্যাখ্যা করতে বলা হয়েছে।

রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় হাসপাতালে হামলা-ভাঙচুর ও মামলার ঘটনায় রোগীর স্বজনরা আদালতে হাজির হয়ে আগাম জামিনের আরজির শুনানিতে আজ হাইকোর্টের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেনের ও মো. রিয়াজ উদ্দিন খানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।আদালতে রোগীর স্বজনদের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন জাহিদ সারোয়ার কাজল।

গত ২১ জুন চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইউনিভার্সেল হাসপাতালে শহীদুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি। তার বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে। গত ১৪ মে কিডনির সমস্যা নিয়ে ওই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি।

মৃত শহীদুলের স্বজনদের অভিযোগ, এক সপ্তাহ ধরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীর অবস্থা তাদের জানায়নি। ২১ জুন সন্ধ্যায় শহীদুলের স্বজনরা হাসপাতালের কর্মকর্তাদের কাছে রোগীর অবস্থা জানতে চাইলে তাদেরকে মারা যাওয়ার কথা বলা হয়।

শহীদুল ইসলামের ছেলে কামালের অভিযোগ, তার বাবাকে ২০ দিনে ২৩টি ডায়ালাইসিস দেয়ার কথা বলে ১০ লাখ টাকার বিল ধরিয়ে দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

এ ঘটনায় মৃত রোগীর স্বজনদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি থেকে হামলা-ভাঙচুর ও হামলার ঘটনায় করা মামলায় রোগীর স্বজনদের পক্ষে হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। এর শুনানি নিয়ে এ আদেশ দেন আদালত।

এর আগে ২১ জুন রোগী মারা গেছে বলে হাসপাতাল থেকে লাশ বের করা হয়। এর পরের দিন ২২ জুন “ঢাকায় ‘মৃত্যুর পরেও’ হাসপাতালে রেখে বিল ধরিয়ে দেয়ার অভিযোগ” শিরোনামে খবর প্রকাশ পায়। প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়-

রাজধানীর মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক রোগীর ‘মৃত্যুর পরেও’ প্রায় এক সপ্তাহ তাকে চিকিৎসাধীন রাখার কথা বলে বড় অংকের বিল ধরিয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।

মৃত শহীদুল ইসলামের বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে। গত ১৪ মে কিডনির সমস্যা নিয়ে এই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। তার স্বজনদের অভিযোগ, গত এক সপ্তাহ ধরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীর অবস্থা তাদের জানায়নি। শুক্রবার সন্ধ্যায় শহীদুলের স্বজনরা হাসপাতালের কর্মকর্তাদের কাছে রোগীর অবস্থা জানতে চাইলে মারা যাওয়ার কথা বলা হয় তাদের। শহীদুল ইসলামের ছেলে কামাল অভিযোগ করেন, তার বাবাকে ২০ দিনে ২৩টি ডায়ালাইসিস দেওয়ার কথা বলেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

‘২০ দিনে ২৩টা ডায়ালাইসিস কীভাবে দেয়? আমরা কয়েকবার অন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু তারা আমাদের রোগীকে নিতে দেয়নি। আমার ধারণা, উনি ১৪ তারিখে মারা গেছেন। এরপরও তারা আমার বাবাকে নিয়ে ব্যবসা করেছে।’

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বাবার চিকিৎসা বাবদ ১০ লাখ টাকা বিল করেছে বলে জানান তিনি। শাহাদাত হোসেন নামে শহীদুলের আরেক স্বজনও অভিযোগ করেন, তার আত্মীয় আগেই মারা গিয়েছেন।

‘আগে প্রতিদিন বিলের জন্য হাসপাতাল থেকে ফোন দেওয়া হত। কিন্তু গত এক সপ্তাহ ধরে বিলের বিষয়ে কিছু বলছে না। এতে আমাদের সন্দেহ হয়। আজ চাপাচাপি করার পর রাতে মারা যাওয়ার কথা স্বীকার করেছে।’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. আশীষ কুমার চক্রবর্তী রোগীর স্বজনদের অভিযোগ অস্বীকার করেন।

তিনি বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু বাঁচানো সম্ভব হয়নি। তার দুটি কিডনি বিকল ছিল। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় এখানে ভর্তি হয়েছিলেন। রোগীর স্বজনদের মানসিক অবস্থা থেকে এ ধরনের অভিযোগ করেছেন।

বিষয়টি নিয়ে সন্ধ্যায় হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে রোগীর স্বজনদের বাকবিতণ্ডায় উত্তাপ ছড়ালে সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

এফএইচ/বিএ/আরআইপি/এমএসএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।