মুন সিনেমা হল মালিকের ১০০ কোটির চেক সংশোধনের নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:৪১ পিএম, ৩০ জুন ২০১৯

পুরান ঢাকার ওয়াইজঘাট এলাকার আলোচিত মুন সিনেমা হলের মালিক ইতালিয়ান মার্বেল কোম্পানিকে দেয়ার জন্য আদালতে দাখিল করা ১০০ কোটি টাকার চেকে ভুল থাকায় তা সংশোধনের নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এ বিষয়ে শুনানির জন্য আগামী ২১ জুলাই পরবর্তী দিন ঠিক করা হয়েছে।

রোববার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। অন্যদিকে মুন সিনেমা হল মালিকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী তৌফিক নেওয়াজ।

আইনজীবীরা জানান, মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট ১০০ কোটি টাকার চেক দেয় পুরান ঢাকার ওয়াইজঘাট এলাকার মুন সিনেমা হলের জমির মালিক ইতালিয়ান মার্বেল কোম্পানিকে। চেকে ভুল থাকায় আদালত তা সংশোধনের আদেশ দেন।

এর আগে ২০১৮ সালের ৮ অক্টোবর মুন সিনেমা হলের মালিককে প্রায় ১০০ কোটি টাকা পরিশোধের যে নির্দেশ দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ তা পরিশোধে সম্মত হওয়ার কথা জানিয়েছিল অর্থ মন্ত্রণালয়। যে কারণে এ অর্থ পরিশোধে ২০১৮ সালের ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ। কিন্তু ২০১৮ সালের ১০ ডিসেম্বর পুরান ঢাকার ওয়াইজঘাট এলাকার আলোচিত মুন সিনেমা হলের মালিককে প্রায় ১০০ কোটি টাকা পরিশোধের জন্য আজ (৩০ জুন) পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ। আপিল বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী আজ কোম্পানির নামে চেক না দিয়ে জমির মালিক মাকসুদুল আলমের নামে চেক দিয়েছেন। তাই ওই চেক সংশোধন করে দেয়ার নির্দেশ দেন আদালত।

পুরান ঢাকার ওয়াইজঘাটে একসময় মুন সিনেমা হলের মালিক ছিল ইতালিয়ান মার্বেল ওয়ার্কস লিমিটেড নামে একটি কোম্পানি। মুক্তিযুদ্ধের সময় ওই সম্পত্তি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। পরে ওই সম্পত্তি মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের অধীনে ন্যস্ত করা হয়। ইতালিয়ান মার্বেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাকসুদুল আলম এই সম্পত্তির মালিকানা দাবি করেন।

জিয়াউর রহমানের শাসনামলে ঘোষিত এক সামরিক ফরমানে সরকার কোনো সম্পত্তি পরিত্যক্ত ঘোষণা করলে তা আদালতে চ্যালেঞ্জ করা যাবে না বলা হয়। ইতালিয়ান মার্বেল ২০০০ সালে হাইকোর্টে ওই ফরমানসহ সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী চ্যালেঞ্জ করে।

২০০৫ সালের ২৯ আগস্ট হাইকোর্ট রায় দেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ২ ফেব্রুয়ারি আপিল করা হয়। আপিল বিভাগ হাইকোর্টের দেয়া সেই রায় বহাল রাখেন। পাশাপাশি ৯০ দিনের মধ্যে ইতালিয়ান মার্বেলকে মুন সিনেমা হল ফেরত দিতে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টকে নির্দেশ দেয়া হয়।

এ অবস্থায় সম্পত্তি ফিরে পেতে ২০১২ সালের ১০ জানুয়ারি ইতালিয়ান মার্বেল ওয়ার্কস মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন করেন। এর ধারাবাহিকতায় ২০১৭ সালের ১৫ জানুয়ারি আপিল বিভাগ ওই সম্পত্তি অভিজ্ঞ ও নিরপেক্ষ এক প্রকৌশলীকে দিয়ে জমি ও স্থাপনার মূল্য নির্ধারণ করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। ওই কমিটি জমির মূল্য ১০০ কোটি টাকা বলে জানায়।

বর্তমানে মুন সিনেমা হলের জমিতে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের বহুতল বিপণিবিতান ররেছে। একটি ডেভেলপার কোম্পানি বহুতল ভবনটি নির্মাণ করে।

এফএইচ/বিএ/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।