হাইকোর্টের তাগিদের পরও রাসেলকে টাকা দেয়নি গ্রীনলাইন

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১১:০৮ এএম, ২৫ জুন ২০১৯

বাসচাপায় পা হারানো রাসেল সরকারকে বাকি ৪৫ লাখের মধ্যে এক টাকাও দেয়নি গ্রীনলাইন পরিবহন কর্তৃপক্ষ। এছাড়া তার সঙ্গে এ বিষয়ে গ্রীনলাইন কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের যোগাযোগ করেনি বলেও জানিয়েছেন ভিকটিম রাসেল সরকার।

জাগো নিউজকে রাসেল সরকার বলেন, হাইকোর্ট থেকে গত তারিখে (২২ মে) আদেশ দেওয়ার পরও তারা (গ্রীনলাইন) কোনো টাকা দেয়নি। এমনকি আমার বা আমাদের পরিবারের কারো সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগ করেনি।

গত ২২ মে রাসেল সরকার হাইকোর্টেও জানিয়েছিলেন তাকে টাকা দেওয়া হয়নি। এমনকি গ্রীনলাইন কর্তৃপক্ষের আইনজীবীর সঙ্গেও যোগাযোগ ছিল না (২০ মে থেকে)। পরে অবশ্য ২২ মে গ্রীনলাইনের আইনজীবী তার ওকালতনামা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।

বাসচাপায় পা হারানো রাসেল সরকারকে ৫০ লাখ টাকা দিতে গ্রীনলাইন পরিবহন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। ওই আদেশ বাস্তবায়নের বিষয়ে গত ২২ মে হাইকোর্টে শুনানির দিন ধার্য ছিল। শুনানিতে গ্রীনলাইনের এমন আচরণের কথা শুনে ক্ষোভ প্রকাশ করেন আদালত। সঙ্গে সঙ্গে এ বিষয়ে ২৫ জুন (মঙ্গলবার) পরবর্তী আদেশের জন্য দিন ধার্য করেন। আজ (২৫ জুন, মঙ্গলবার) এ বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

আজ (মঙ্গলবার) হাইকোর্টের বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে এ মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

মামলার শুনানি থাকায় মঙ্গলবার (২৫ জুন) সকাল ১০টার দিকে হাইকোর্টে আসেন রাসেল সরকার। হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে জাগো নিউজকে তিনি বলেন, গত ২২ মে হাইকোর্টের আদেশের পর কোনো ধরনের যোগাযোগ করেনি গ্রীনলাইন কর্তৃপক্ষ। ৫ লাখ টাকা দেওয়ার পর বাকি ৪৫ লাখ টাকা দেওয়ার জন্য আদেশ দিলেও তারা (গ্রীনলাইন) আর কোনো টাকা দেয়নি।

এর আগে গত ২২ মে হাইকোর্টের শুনানিতে গ্রীনলাইনের আইনজীবী মো. ওজিউল্লাহ বলেন, আদালতের সর্বশেষ আদেশের পর গ্রীনলাইন কর্তৃপক্ষ আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। তাদের আইনজীবী থেকে আমার নাম প্রত্যাহার করতে চাই। এ সময় পা হারানো রাসেল সরকারের আইনজীবী শামসুল হক রেজা বলেন, আমাদের সঙ্গেও কোনো যোগাযোগ করছে না গ্রীনলাইন কর্তৃপক্ষ।

পরে আদালত বলেন, আমরা অনেক নমনীয়ভাবে কথা বলেছি, গ্রীনলাইন কর্তৃপক্ষ কখনও বলে নাই যে আমাদের এই সমস্যা, আমরা এত টাকা দিতে পারব না। আবার রাসেলের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টা মীমাংসা করারও চেষ্টা করেনি।

আদালত আরও বলেন, যারা ব্যবসা করে তাদের মানবিক মূল্যবোধ থাকা উচিত। কিন্তু এ ক্ষেত্রে গ্রীনলাইন কর্তৃপক্ষের আচরণ আমাদের কাছে ভালো লাগেনি। তারপরও তাদের অনুপস্থিতিতে আমরা আজ আদেশ দিতে চাই না। প্রয়োজনে রুল শুনানির পর যা করার দরকার তাই করব।

এরপর আদালত পরবর্তী আদেশের জন্য আজ (২৫ জুন) দিন নির্ধারণ করেন এবং এ সময়ের মধ্যে বাকি ৪৫ লাখ টাকা পরিশোধের জন্য তাগিদাসহ নির্দেশ দেন।

এর আগে গত ১৫ মে আদালত রাসেল সরকারকে টাকা দিতে গ্রীনলাইন কর্তৃপক্ষকে ২২ মে পর্যন্ত সময় দিয়েছিলেন আদালত। এর পর তা বাড়িয়ে ২৫ জুন ঠিক করেন।

গত ১০ এপ্রিল রাসেল সরকারকে আদালতের মাধ্যমে ৫ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করে গ্রীনলাইন কর্তৃপক্ষ। বাকি ৪৫ লাখ টাকা পরিশোধ করতে এক মাস সময় দেন আদালত। রাসেল সরকারকে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে এর আগে গত ৩১ মার্চ হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন আপিল বিভাগ।

গত ১২ মার্চ রাসেল সরকারকে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার হাইকোর্টে নির্দেশের পর পরে আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করে গ্রীনলাইন কর্তৃপক্ষ।

এফএইচ/আরএস/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।