অফিসে বসে শুধু চা খেলে হবে? বিআরটিএর পরিচালককে হাইকোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২:০৬ পিএম, ২৪ জুন ২০১৯

দেশের সড়কে ফিটনেসবিহীন গাড়ি ও লাইসেন্সহীন ড্রাইভারদের বিষয়ে সঠিক তথ্য দিতে না পারায় বিআরটিএর প্রতি চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।

এ তথ্য দেয়ার জন্য বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) পরিচালক (রোড সেফটি) শেখ মোহাম্মদ মাহবুব-ই রাব্বানীকে আজ তলব করেছিলেন হাইকোর্ট।

আজ সোমবার বিআরটিএর এই পরিচালক আদালতে হাজির হন। শুনানিতে বিআরটিএর পরিচালক আদালতকে জানান, মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও সারা দেশে লাইসেন্স নবায়ন করেনি ৪ লাখ ৫৮ হাজার ৩৬৯টি গাড়ি। ঢাকায় এ সংখ্যা ১ লাখ ৬৮ হাজার ৩০৮টি। কিন্তু তিনি ফিটনেসবিহীন গাড়ি ও লাইসেন্সহীন ড্রাইভারদের বিষয়ে সঠিক তথ্য দিতে পারেননি।

পরে লাইসেন্স নিয়ে নবায়ন না করা গাড়ি ও চালকের বিস্তারিত তথ্য জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। বিআরটিএকে আগামী ২৩ জুলাইয়ের মধ্যে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
একইসঙ্গে ঢাকাসহ সারাদেশে ফিটনেসহীন গাড়ি এবং লাইসেন্সহীন চালকের বিরুদ্ধে বিআরটিএ কী ব্যবস্থা নিয়েছে তাও জানাতে হবে।

এ ছাড়া ২৩ জুলাই এ বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য করেন আদালত। হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই দিন ঠিক করেন।

দেশের সড়কের বেহাল দশা সম্পর্কে আদালত বলেছেন, আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি কি দেশের সড়কে বেহাল দশার জন্য। সিঙ্গাপুরের দিকে তাকান। আমাদের কাছাকাছি সময়ে স্বাধীনতা অর্জন করার পরও তারা কত উন্নতি করেছে। সিঙ্গাপুরে কি বাংলাদেশের মতো দুর্ঘটনা ঘটে? বাংলাদেশে কেন এত দুর্ঘটনা ঘটছে? আমেরিকায় কি এমন দুর্ঘটনা ঘটছে? ইংল্যান্ডে কি ঘটছে?

আদালত ক্ষোভ প্রকাশ করে আরও বলেন, বিআরটিএ ছাড়াও দেশে পুলিশ আছে, পুলিশের নাকের ডগার ওপর দিয়ে এসব অনিয়ম হচ্ছে।

বিআরটিএর পরিচালকের উদ্দেশ্যে আদালত বলেন, অফিসে বসে বসে মিটিং আর শুধু কি চা খাইলে হবে? দেশপ্রেম থাকতে হবে। বিআরটিএ কি করে? আমরা কেন ডাকবো, তাদের (বিআরটিএ) ডাকতে হবে কেন? তারা (বিদেশিরা) পারছে, আমরা পারছি না কেন?

আমরা সোনার বাংলা গড়তে চাই। কিন্তু কোনো পরিবর্তন লক্ষ্য করছি না,- যোগ করেন আদালত।

আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিনউদ্দিন মানিক। বিআরটিএর পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মঈন ফিরোজী ও রাফিউল ইসলাম।

একটি ইংরেজি জাতীয় দৈনিকের প্রকাশিত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে হাইকোর্টের এই বেঞ্চ সুয়োমুটো (স্বপ্রণোদিত) হয়ে গত ২৭ মার্চ বিআরটিএর পরিচারককে তলব করেছিলেন।

এ ছাড়া ওইদিন আদালত রুল জারি করেন। রুলে ফিটনেস ও রেজিস্ট্রেশনবিহীন গাড়ি ও ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালানোর বিষয়ে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়।

পাশাপাশি সংবিধানের ৩২ নম্বর অনুচ্ছেদের আলোকে বেঁচে থাকার অধিকার বাস্তবায়নে কেন মোটর ভেহিকল অধ্যাদেশ ১৯৮৩ এর বিধানগুলো সঠিকভাবে পালনের জন্য নির্দেশনা দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন আদালত।

চার সপ্তাহের মধ্যে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, পুলিশের আইজি, চেয়ারম্যান (বিআরটিএ), ঢাকার ডিসি ট্রাফিক (উত্তর ও দক্ষিণ), বিআরটিএ পরিচালককে (রোড নিরাপত্তা) রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছিল।

 

এফএইচ/জেডএ/পিআর/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।