বাকস্বাধীনতা খর্বে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন হয়নি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:৪৪ পিএম, ১০ জুন ২০১৯

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ‘বাকস্বাধীনতা ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা খর্ব করার জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করা হয়নি। এটি কেবল সাইবার অপরাধ রোধের জন্য করা হয়েছে।’

রাজধানীর গুলশানে সোমবার বিকেলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

ইইউর মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধির সঙ্গে রোহিঙ্গা ইস্যু, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিচার, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও নুসরাত হত্যা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন আইনমন্ত্রী।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কারাদণ্ড প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী বিশেষ প্রতিনিধি দলকে বলেন, ‘আইনের শাসনের কারণে এবং উচ্চ আদালত সাজা দেয়ায় তিনি (খালেদা জিয়া) কারাগারে। এখানে সরকারের কিছু করার নেই। এতিমের টাকা চুরির অভিযোগে এবং আদালতের কাছে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার কারণেই খালেদা জিয়া আজ কারাগারে। তাকে ছাড়ার বা না ছাড়ার ব্যাপারে সরকারের কোনো ভূমিকা নেই।’

আনিসুল হক বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিশেষ প্রতিনিধি দল ফেনীর মাদরাসাছাত্রী নুসরাত হত্যা মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার হালনাগাদ অগ্রগতি তুলে ধরে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সংশ্লিষ্ট সবাই মামলাটি গুরুত্ব সহকারে দেখছেন। এ ছাড়া এ মামলা যথাযথ প্রক্রিয়া অবলম্বন করে দ্রুত শেষ করতে সরকারের ইচ্ছার কথাও তাদের জানানো হয়।’

বৈঠকে বেপজা আইন, শিশু অধিকার আইন, রোহিঙ্গা ইস্যু ও বিচারবহির্ভূত হত্যা নিয়েও আলোচনা হয় বলে জানান আইনমন্ত্রী।

আনিসুল হক বলেন, ‘ইইউ বিশেষ প্রতিনিধি রোহিঙ্গাদের অবস্থা নিজের চোখে দেখতে কক্সবাজারে যাবেন। সেখান থেকে তারা মিয়ানমারে যাবেন। রোহিঙ্গা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী গতকাল যেসব কথা বলেছেন, আমাদের পক্ষ থেকে সে কথাগুলো তুলে ধরেছি। সার্বিক রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে আমরা কথা বলেছি। আমরা রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন চাই। তিনি (ইইউ প্রতিনিধি) মিয়ানমারের সঙ্গে সে বিষয়ে কথা বলবেন।’

ইইউর মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি সাবেক আইরিশ প্রধানমন্ত্রী অ্যামন গিলমোর রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করতে দু’দিনের সফরে সোমবার বাংলাদেশে আসেন।

ইইউর বিশেষ প্রতিনিধি অ্যামন গিলমোর ঢাকা সফর শেষে মিয়ানমার যাবেন। রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে তিনি ভূমিকা পালন করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। অ্যামন গিলমোর তার বাংলাদেশ সফরের দ্বিতীয় দিনে কক্সবাজার স্থাপিত কুতুপালং ও বালুখালী রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলবেন। রোহিঙ্গা সঙ্কটের ধরন নিয়ে বাংলাদেশে ধারণা পাওয়ার পর তিনি মিয়ানমার যাবেন।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তাসহ তাদের নির্ভয়ে ফিরে যাওয়ার উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি দেখতে চায় ইইউ।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নিষ্ঠুর নির্যাতন করার ফলে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বশেষ রোববার (৯ জুন) সংবাদ সম্মেলনে মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে আগ্রহী নয় বলে উল্লেখ করেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ইইউর মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধির ভূমিকা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।

এফএইচ/এনডিএস/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।