জবির ভবন নির্মাণে দুর্নীতি : হাইকোর্টের রুল
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাম প্রশাসনিক ভবনের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ প্রকল্পে দুর্নীতির ঘটনায় রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। ভবন নির্মাণে দুর্নীতি ও অনিয়ম তদন্তে নিষ্ক্রিয়তা এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ও বিভাগীয় পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্টদেরকে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। মহসীন আহমেদ স্বপন নামে এক ব্যক্তির করা রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই রুল জারি করেন।
রিট আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবী মো. কামাল হোসেন সোমবার রুল জারির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণে অনিয়মের বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
ইত্তেফাকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয়তলা একাডেমিক ভবন ১৫তলা করতে ২০১৫ সালে দ্য বিল্ডার্স নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয় শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী দেওয়ান মোহাম্মদ হানজালা। নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৪৫ কোটি ২৪ লাখ টাকা। অর্থাৎ মোজাইকসহ প্রতি তলার ব্যয় ধরা হয় ৫ কোটি দুই লাখ টাকা।
২০০৭ সালে ভবনটি ছয়তলা করা হয়েছিল। দ্বিতীয় দফায় ২০১৫ সালে ১৫তলা পর্যন্ত নির্মাণকাজ শুরুর দুই বছর পর হঠাৎ করেই প্রধান প্রকৌশলী ডিএম হানজালা ‘ভিত্তি দুর্বল’ এমন অজুহাতে ১২তলা পর্যন্ত ভবন করার মতামত দেন। যদিও ভবনটির ভিত্তি দেয়া আছে ২০ তলার। ১২ তলার জন্য সংশোধিত ব্যয় ধরা হয় ৩৭ কোটি ৪০ লাখ টাকা।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, মূল দরপত্রে মোজাইকের কথা বলা হলেও দেয়া হয় টাইলস। প্রথম দরপত্রে মোজাইকসহ প্রতি তলার ব্যয় ধরা হয়েছিল ৫ কোটি দুই লাখ টাকা। সেই হিসেবে ছয় তলার জন্য ব্যয় হওয়ার কথা ৩০ কোটি ১২ লাখ টাকা। কিন্তু প্রধান প্রকৌশলী ডি এম হানজালার হস্তক্ষেপে দর নির্ধারিত হয় ৭ কোটি টাকা বেশি, ৩৭ কোটি ৪০ লাখ টাকায়। এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে দফায় দফায় মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়ে আপত্তির কথা জানান তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
রিটকারী মহসীন আহমেদ স্বপন বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভবন নির্মাণে অনিয়মের বিষয়ে ইত্তেফাক ও সকালের সময়সহ বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। পরে এসব প্রতিবেদন যুক্ত করে আমি জনস্বার্থে হাইকোর্টে রিটটি দায়ের করি। শুনানি শেষে আদালত রুল জারি করেন।
এফএইচ/এমআরএম/এমএস