রাজধানীর ১৬ এলাকার পানি দূষিত, পরীক্ষার খরচ দেবে কোন প্রতিষ্ঠান?
রাজধানীর ১৬টি এলাকায় ওয়াসার পানি বেশি দূষিত বলে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে আজ সোমবার। রাজধানী ঢাকায় কোন কোন এলাকার ওয়াসার পানি দূষিত-এ বিষয়ে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে একটি তালিকা দাখিল করেন রিটকারী আইনজীবী নিজেই। ওই তালিকা দাখিলের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট জানতে চেয়েছেন এসব এলাকার দূষিত পানি পরীক্ষার খরচ কোন প্রতিষ্ঠান বহন করবে। এ জন্য আদালত দুই দিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন।
পরে এ বিষয়ে শুনানির জন্য আগামী ১৫ মে (বুধবার) পরবর্তী দিন ঠিক করেছেন হাইকোর্ট। সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে আজ রিটের পক্ষে শুনানি করেন রিটকারী আইনজীবী মো. তানভীর আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু।
সংবাদপত্র এবং সোশাল মিডিয়া থেকে তথ্য সংগ্রহ করে এই তালিকা আদালতে দেয়া হয়েছে বলে জানান রিটকারী আইনজীবী মো. তানভীর আহমেদ।
রাজধানীর জুরাইন, দনিয়া, শ্যামপুর, উত্তরা-৪ নম্বর সেক্টর, লালবাগ, রাজার দেউরি, মালিবাগ, মাদারটেক, বনশ্রী, গোড়ান, রায়সাহেব বাজার, মোহাম্মদপুরের বসিলা, মিরপুরের পল্লবী, কাজীপাড়া ও সদরঘাট এলাকার পানি দূষিত বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু জানান, এর আগে গত ৮ মে ঢাকায় ওয়াসার কোন কোন এলাকার পানি সবচেয়ে বেশি দূষিত (অনিরাপদ) তা জানতে চেয়েছিলেন হাইকোর্ট। আজ নির্ধারিত দিনে আইনজীবী এ-সংক্রান্ত একটি তালিকা আদালতে জমা দেন। পরে মামলার শুনানির জন্য আগামী বুধবার দিন ঠিক করেন আদালত।
এর আগে শুনানিকালে পানি পরীক্ষার প্রতিবেদন দাখিলের পরিবর্তে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে হাইকোর্টে একটি অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। ওই প্রতিবেদনে পানি পরীক্ষায় কমিটি গঠন ও কমিটির কার্যপরিধি তুলে ধরা হয়। এ ছাড়াও ওই প্রতিবেদনে ওয়াসাকে মোট ১১টি জোনে ভাগ করে পানি পরীক্ষার কথা বলা হয়। পাশাপাশি অর্থায়ন পাওয়া গেলে চার মাসের মধ্যে পানি পরীক্ষার প্রতিবেদন পাওয়া যেতে পারে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
এরপর আদালত কোন কোন এলাকার পানি বেশি দূষিত ও অনিরাপদ সেসব এলাকা চিহ্নিত করে জানানোর নির্দেশ দেন। আজ ওয়াসা বা রাষ্ট্রীয় কোনো প্রতিষ্ঠান এর কোনো তথ্য না দিলেও রিটকারী আইনজীবী নিজেই এমন একটি তালিকা-সম্বলিত তথ্য আদালতে জমা দেন।
২০১৮ সালের ১১ অক্টোবর বিশ্বব্যাংক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষ অনিরাপদ উৎসের পানি পান করে। ৪১ শতাংশ পানির নিরাপদ উৎসগুলোতে রয়েছে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া। পাইপের মাধ্যমে সরবরাহ করা পানিতে এ ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি সবচেয়ে বেশি, প্রায় ৮২ শতাংশ। ১৩ শতাংশ পানিতে রয়েছে আর্সেনিক।
ওই প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। পরে প্রতিবেদন যুক্ত করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন আইনজীবী তানভীর আহমেদ।
ওই রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৬ নভেম্বর রাজধানী ঢাকায় পাইপের মাধ্যমে সরবরাহকৃত ওয়াসার পানি পরীক্ষার জন্য পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এ ছাড়া কমিটিকে দুই মাসের মধ্যে পানি পরীক্ষা করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেন। কিন্তু ৮ মে অন্য এক অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করে পানি পরীক্ষায় কমিটি গঠন ও কমিটির কার্যপরিধি আদালতের সামনে তুলে ধরা হয়।
এফএইচ/এসআর/এমকেএইচ