‘আরও দায়িত্বশীলতার সঙ্গে বিচার পরিচালনা করুন’
বিচার কার্যক্রম আরও দায়িত্বশীলতার সঙ্গে পরিচালনার জন্য সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।
সুপ্রিম কোর্টের মামলাজট নিরসনে বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে অনুষ্ঠিত ফুলকোর্ট সভায় এ আহ্বান জানান তিনি।
প্রধান বিচারপতির এ আহ্বানের পর বিচারপতিরা বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের দেশে বিচারকের সংখ্যা কম, কিন্তু ওই সব দেশের তুলনায় আমাদের উচ্চ আদালতে মামলা নিষ্পত্তির হার অনেক বেশি।
‘ন্যাশনাল জাস্টিস অডিট বাংলাদেশ’র তথ্য উপস্থাপনের পাঁচদিনের মাথায় প্রধান বিচারপতির সভাপতিত্বে ফুলকোর্ট সভার উদ্যোগ নেয়া হয়। গত ৩০ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (প্রশাসন ও বিচার) মোহাম্মদ আক্তারুজ্জামান ভূঁইয়া স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে আজকের ফুলকোর্ট সভার তথ্য জানানো হয়।
গত ২৭ এপ্রিল মামলার জট ও মামলা ব্যবস্থাপনা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের সামনে তথ্য উপস্থাপনের পর সব বিচারপতির সঙ্গে এক মাসের মধ্যে বসার ঘোষণা দেন প্রধান বিচারপতি। এর পরদিন এক মামলার শুনানিকালে আপিল বিভাগে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবীদের কাছে মামলাজট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের বর্তমানে এত মামলা যে ফাইল রাখার মতো জায়গা নেই। এক কথায় ক্রিটিক্যাল অবস্থা। এভাবে চলতে পারে না।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এএফ হাসান আরিফ প্রমুখ।
প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, ‘জিআইজেডের (জার্মান ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন বাংলাদেশ) উপস্থাপন করা সুপ্রিম কোর্টের মামলার নিরীক্ষা প্রতিবেদন দেখে আমি প্রায় বিব্রত। এত মামলা! এভাবে চলতে পারে না। তাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি মামলাজট নিরসন বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের সব বিচারপতিকে নিয়ে বসব।’
ফুলকোর্ট সভায় বিভিন্ন বিচারাঙ্গনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। বিচার বিভাগের প্রশাসনিক কার্যক্রম কীভাবে পরিচালিত হবে তা নিয়েও ফুলকোর্ট সভায় উপস্থাপন করা হয়। পদাধিকার বলে দেশের প্রধান বিচারপতি সভাপতিত্ব করেন এ সভায়।
জাস্টিস অডিটের ফলাফলে দেখা গেছে, ২০১৬ থেকে ২০১৭ সালে মুখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতে বিচারাধীন মামলার প্রবৃদ্ধির হার ছিল ১৪ শতাংশ, দায়রা আদালতে এ হার ১৬ শতাংশ এবং সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে এ প্রবৃদ্ধির হার ৯ শতাংশ। এভাবে চলতে থাকলে ২০২২ সালে মুখ্য বিচারিক হাকিমের আদালত, দায়রা আদালত ও হাইকোর্ট বিভাগে আগের বছরগুলো থেকে আসা মামলার পরিমাণ হবে যথাক্রমে ৭২ শতাংশ, ৮০ শতাংশ এবং ৯০ শতাংশ। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে মামলা ব্যবস্থাপনায় বিশেষ পদক্ষেপ নিতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে অডিটে।
এফএইচ/এনডিএস/পিআর