মালিকের মারধরে মা পঙ্গু : ক্ষতিপূরণ চেয়ে হাইকোর্টে মেয়ে
গার্মেন্টস মালিকের মারধরে পঙ্গু হওয়া মায়ের জন্য ক্ষতিপূরণ চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেছেন মেয়ে। তার মা বেদানা খাতুনকে (৪৫) মারধর করে দোতলা থেকে ফেলে দিয়েছিল মিরপুরের অ্যাটান ফ্যাশন গার্মেন্টসের মালিক। মূলত মালিকের মারধর থেকে গার্মেন্ট শ্রমিক মেয়ে লিজা আক্তারকে বাচাঁতে গিয়েই পঙ্গু হন মা।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় বেদানা খাতুনের বড় মেয়ে তথা লিজা আক্তারের বোন পারুল আক্তারের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এ বি এম আতাউল মজিদ এ রিট আবেদন করেন।
এ বিষয়ে হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চে আজ শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হয়। এরপর আগামী রোববার (২৮ এপ্রিল) শুনানির দিন ঠিক করা হয়েছে।
রিটে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে, এ বিষয়ে পল্লবী থানায় মামলা গ্রহণ না করায় সংশ্লিষ্টদের কেন কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেয়া হবে না এবং ক্ষতিগ্রস্ত নারীর চিকিৎসার জন্য সব খরচ ও তার পুনর্বাসন করতে গার্মেন্টস মালিককে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারির আরজি জানানো হয়েছে।
রিটে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সচিব, পুলিশের আইজি, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার, মিরপুর জোনের ডেপুটি কমিশনার, অ্যাটান ফ্যাশন গার্মেন্টসের মালিক মাহবুবসহ মোট আটজনকে বিবাদী করা হয়েছে।
রিটকারীর আইনজীবী এবিএম আতাউল মজিদ জানান, ‘গত ১২ এপ্রিল সকাল ১০টার দিকে গার্মেন্টস কর্মী লিজা বকেয়া বেতন চাইতে অ্যাটান ফ্যাশন গার্মেন্টসে যান। কিন্তু গার্মেন্টস মালিক মাহবুব তা পরিশোধ না করে লিজাকে গালিগালাজ ও মারধর করতে উদ্যত হন। এ সময় তার মা বেদানা আক্তার (৪৫) এগিয়ে আসেন। তখন লিজা ও তার মাকে গার্মেন্টস মালিক মাহবুব এবং তার কর্মচারী রাবেয়া ও হাছিনা মারধর করেন। একপর্যায়ে বেদানাকে দোতলা হতে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। এতে লিজার মায়ের ডান হাত, ডান পা এবং কোমড়ের হাড় ভেঙে যায়। পরে তার চিৎকারে এলাকাবাসী ছোটে আসে। আহত বেদানাকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রাজধানীর শ্যামলীতে জাতীয় অর্থোপেডিকস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
প্রকাশ্যে ওই ঘটনা পর পল্লবী থানা পুলিশকে জানানো হলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এরপর ১৪ এপ্রিল মামলা করতে গেলে পল্লবী থানার কর্তব্যরত ডিউটি অফিসার এজাহার গ্রহণ করেন এবং বিষয়টি তদন্তের পর মামলা করা হবে বলে জানান। তবে, এখনও মামলা গ্রহণ করেনি থানা কর্তৃপক্ষ। বরং মামলা গ্রহণের বিষয়ে খোঁজ নিতে গেলে উল্টো অভিযোগকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে বলে তিনজন ইন্সপেক্টর দুর্ব্যবহার করেন এবং তাদের তাড়িয়ে দেন।
এরপর মামলা গ্রহণ না করার বিষয়টি অবহিত করে গত ১৮ এপ্রিল পুলিশের মহাপরিদর্শক বরাবর একটি আবেদন পাঠানো হয়। কিন্তু সে আবেদনের কোনো জবাব না পেয়ে বেদানা খাতুনের বড় মেয়ে পারুল আক্তার ক্ষতিপূরণ চেয়ে হাইকোর্টে আজ রিট করেন।
এ বি এম আতাউল মজিদ বলেন, আজ রিট আবেদনটি শুনানির জন্য হাইকোর্টের বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে উপস্থাপন করা হলে আগামী রোববার (২৮ এপ্রিল) শুনানির দিন নির্ধারণ করেছেন।
এফএইচ/জেডএ/জেআইএম