জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বক্তব্য বিকৃত মানুষের মত


প্রকাশিত: ১০:১৫ এএম, ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৫

জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বক্তব্যকে বিকৃত মানুষের মত অর্থাৎ ‘এক্সট্রিমলি রংহেডেড’-এর সঙ্গে তুলনা করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। মঙ্গলবার তিন বিচারপতিকে নিয়ে কটুক্তি করায় আদালত অবমাননার বিষয়ে আদেশ দেওয়ার সময় ট্রাইব্যুনাল এ মন্তব্য করেন।

ট্রাইব্যুনাল বলেন, ‘রং হেডেড’ ব্যক্তি ছাড়া বিচারপতিদের নিয়ে এ ধরনের মন্তব্য কেউ করতে পারে না। পরে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে কঠোরভাবে সতর্ক করে তাকে আদালত অবমাননার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই ঘোষণা দেন। এর আগে আরো দুই বার আদালত অবমাননার অভিযোগে জাফরুল্লাহর বক্তব্যকে একজন ‘অবিবেচক ব্যক্তির মন্তব্য’ বলে আখ্যায়িত করা হয়।

জাফরুল্লার পক্ষে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করার পর আবেদন মঞ্জুর করে রায়ে বিচারক বলেন, ‘রং হেডেড’ ব্যক্তি ছাড়া এ ধরনের মন্তব্য কেউ করতে পারে না।

ভবিষ্যতে মত প্রকাশের স্বাধীনতার নামে এ ধরনের আচরণ না করতে জাফরুল্লাহকে কঠোরভাবে সতর্ক করেছেন আদালত। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ড. জাফরুল্লাহ রায় পাঠ করার শেষ পর্যায়ে আদালতের নির্দেশে নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে ছিলেন। মঙ্গলবার আদালত থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে তিনি কোনো কথা বলেননি।

জাফরুল্লাহর পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল বাসেত মজুমদার। প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ ও তাপস কান্তি বল। আদালত অবমাননার আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ।

আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল বাসেত মজুমদার বলেন, ‘জাফরুল্লাহ সাহেব ক্ষমা প্রার্থনা করেছিলেন, আাদলত তাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। পূর্বে আদালত যে রায়টা দিয়ে ছিলেন, এই নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন তিনি, তা অত্যান্ত দুঃখজনক, আদালত অবমাননার সামিল।’

তিনি বলেন, ‘আদালত বলেছেন তিনি যে বক্তব্য রেখেছেন এটা কোনো সুস্থ মস্তিস্কের মানুষের বক্তব্য হতে পারে না। এক্সট্রিমলি রং হেডেডের মতো কথা বলেছেন জাফরুল্লাহ।’ |

পরে প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ সাংবাদিকদের বলেন, ‘ডা. জাফরুল্লাহর বক্তব্য বিকৃত মানুষিকতার পরিচয় দিয়েছে। এই রকম বিকৃত মস্তিস্ক মানুষের মত কথা বলেছেন পরর্বতিতে তিনি অনুতপ্ত হয়েছেন। আদালত তা গ্রহণ করে তাকে খালাস দিয়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘বাক স্বাধীনতার নামে সমাজে স্বেচ্ছাচারিতা করা হচ্ছে, আমদের সংবিধান যে গ্যারান্টি দিয়েছে সেটা খেয়াল রাখতে হবে, এ ধরণের বক্তব্য আদালত অবমাননার সামিল। সুতরাং খেয়াল রাখতে হবে যাতে কোনো কারণে আদালত অবমাননা না হয়।’

তুরিন আফরোজ আরও বলেন, ‘তিনি (জাফরুল্লাহ) ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ করেছেন তার প্রতি দেশের মানুষের প্রত্যাশা রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে কেউ বিরোধীতা করে পরবর্তিতে ভাল কাজ করলেও তাকে শাস্তি পেতে হবে।’

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে আদালত অবমাননা বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে ট্রাইব্যুনালে তলব করে গত ১২ জুলাই আদেশ দেয়া হয়। বিচারকদের নিয়ে মন্তব্যের জন্য ট্রাইব্যুনালের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করে গত ৯ আগস্ট বক্তব্য পেশ করেন তিনি। আজ আদেশে তাকে কঠোরভাবে সতর্ক করে আদালত অবমানার এ মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। এ সময় ট্রাইব্যুনালের পর্যবেক্ষণে ডা. জাফরুল্লাহকে ‘এক্সট্রিমলি রং হেডেড পারসন’ বলেও উল্লেখ করা হয়।

ট্রাইব্যুনাল-২ বিষয়ে নানা মন্তব্য করায় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বিরুদ্ধে গত ৬ জুলাই আদালত অবমাননার অভিযোগে আবেদন দাখিল করেন তিন মুক্তিযোদ্ধা ও গণজাগরণ মঞ্চের একাংশ।

এফএইচ/একে

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।