ছাদ ধসে শিক্ষার্থী হতাহতের ঘটনায় যথাযথ ক্ষতিপূরণ কেন নয়
বরগুনার তালতলীর পি কে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাদ ধসে হতাহত শিক্ষার্থীদের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ কেন দেয়া হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, বরগুনার জেলা প্রশাসক, বরগুনার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, তালতলী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও স্কুলটির পরিচালনা কমিটির সভাপতিকে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
জনস্বার্থে দায়ের করা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রোববার বিকেলে হাইকোর্টের বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ আদেশ দেন। আদালতে আজ রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এম. মাইনুল ইসলাম। তার সঙ্গে ছিলেন রিটকরী আইনজীবী মো. ইশতিয়াক আহমেদ।
আইনজীবী ইশতিয়াক আহমেদ জানান, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাদ ধসে নিহত ও আহতদের ঘটনায় আমরা রিট করেছি। শুনানি শেষে আদালত রুল জারি করেছেন। রুলে বরগুনার তালতলীতে পি কে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্ত বিধানে বিবাদীদের ব্যর্থতা কেন আইনগত কতৃত্ববর্হিভূত ঘোষণা করা হবে না এবং হতাহত শিক্ষার্থীদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়েছেন।
রোববার দুপুরে রিটটি করেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. ইশতিয়াক আহমেদ।
এর আগে সকালে এক আইনজীবী এবং একটি সংগঠনের পক্ষে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আরেকটি রিট করা হয়। আদালতে রিটের পক্ষে আইনজীবী হয়েছেন ব্যারিস্টার হুমায়ুন কবির পল্লব।
আরও পড়ুন >> শ্রেণিকক্ষের পলেস্তারা ধসে স্কুলছাত্রী নিহত
তিনি জানান, শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ক্লাস চলাকালে হঠাৎ তালতলী উপজেলার ছোটোবগি পি কে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাদের বিম ধসে শিক্ষার্থীদের ওপর পড়ে ১১ জন আহত হয়। তাদের হাসপাতালে নেয়ার পথে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী মানসুরা মারা যায়। এ ঘটনায় প্রকাশিত সংবাদযুক্ত করে রিট করা হয়।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হাসান তারেক পলাশ ও ল’ অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশনের পক্ষে এ রিট আবেদনটি করা হয়। সোমবার বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানি হতে পারে।
আবেদনে নিহত শিক্ষার্থী মানসুরার পরিবারকে এক কোটি টাকা এবং আহত অন্যান্য শিক্ষার্থীর পরিবারকে ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ ও তাদের যথাযথ চিকিৎসা দেয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। এছাড়া শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সবার জন্য নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশে নিশ্চিত করার নির্দেশে রুল জারির আবেদন করা হয়েছে।
রিটে বিবাদী করা হয়েছে- শিক্ষা সচিব, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্থানীয় সরকার সচিব, বরগুনার জেলা প্রসাশক, তালতলা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা, ছোটোবগি পি কে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও বিদ্যালয় ভবনটি নির্মাণকারী সেতু এন্টারপ্রাইজের মালিককে।
এর আগে, শনিবার (৬ এপ্রিল) দুপুরে বিদ্যালয়ের ক্লাস চলাকালীন ছাদের পলেস্তারা ধসে পড়ে মানসুরা (৮) নামে তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রী নিহত হয়। এ ঘটনায় আহত হয় আরও ১০ শিক্ষার্থী।
নিহত মানসুরা উপজেলার পচাকোড়ালিয়া ইউনিয়নের গেন্ডামারা গ্রামের নজির হোসেন তালুকদারের মেয়ে। আহতদের মধ্যে রুমা আক্তার, সাদিয়া, রোজমা, শাহিন ও ইসমাইল হোসেনের নাম জানা গেছে।
এফএইচ/বিএ/পিআর/জেআইএম