এক মামলায় জামিন, অপরটি স্থগিত : আটকে গেল এমপি রানার মুক্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:৩৯ পিএম, ১৪ মার্চ ২০১৯
ফাইল ছবি

মুক্তিযোদ্ধা ফারুক হত্যার আলোচিত মামলায় টাঙ্গাইল-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান রানাকে ছয় মাসের অন্তর্বর্তী জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।

অন্যদিকে যুবলীগের দুই নেতা হত্যা মামলায় হাইকোর্টের দেয়া জামিন স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত। ফলে মুক্তিযোদ্ধা ফারুক হত্যা মামলায় জামিন পেলেও কারামুক্ত হতে পারছেন না রানা।

মুক্তিযোদ্ধা হত্যা মামলায় করা জামিন আবেদন শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) হাইকোর্টের বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি এস এম মজিবুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রানার ছয় মাসের জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন।

অন্যদিকে দুপুরের জামিনের পরপরই যুবলীগের দুই নেতা হত্যা মামলায় গত ৬ মার্চ হাইকোর্টের দেয়া জামিন স্থগিত করেন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত। এক মামলায় জামিন স্থগিত হওয়ায় রানার কারামুক্তি আটকে গেল বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো. বশির উল্লাহ।

তিনি জানান, দুই যুবলীগ নেতা হত্যা মামলায় আওয়ামী লীগের সাবেক এই সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে করা মামলা চার সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেন আদালত। জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. নুরুজ্জামানের চেম্বার জজ আদালত এ আদেশ দেন। চেম্বার জজ আদালতে এ আদেশের পর তার মুক্তির বিষয়টি আটকে গেছে।

চেম্বার জজ আদালতে আজ (বৃহস্পতিবার) এমপি রানার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী। এছাড়া রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো. বশির উল্লাহ এবং তার সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মো. মাহমুদুল করিম রতন।

২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি কলেজপাড়া এলাকার বাসার কাছ থেকে আওয়ামী লীগের টাঙ্গাইল জেলা কমিটির সদস্য মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদের গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই ঘটনার তিনদিন পর ফারুকের স্ত্রী নাহার আহমেদ টাঙ্গাইল মডেল থানায় অজ্ঞাত পরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করেন।

পরে তৎকালীন সংসদ সদস্য রানা, তার তিন ভাই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পা, টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র ও শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সহিদুর রহমান খান মুক্তি এবং ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাঁকনসহ মোট ১৪ জনকে আসামি করে ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ।

মামলায় রানা ২০১৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়। এরপর একই বছর ২৬ সেপ্টেম্বর টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আবুল মনসুর মিয়া রানার জামিন নাকচ করে দিলে তিনি হাইকোর্টে আসেন। বর্তমানে কাশিমপুর কারাগারে রয়েছেন সাবেক এমপি রানা।

অপরদিকে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বাঘিল ইউনিয়ন যুবলীগের নেতা শামীম ও মামুন ২০১২ সালের ১৬ জুলাই বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলযোগে টাঙ্গাইল শহরে গিয়ে নিখোঁজ হন। পরদিন শামীমের মা আছিয়া খাতুন সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এক বছর পর ২০১৩ সালের ৯ জুলাই নিখোঁজ মামুনের বাবা টাঙ্গাইল আদালতে হত্যা মামলা করেন। পরে তদন্ত করে পুলিশ ওই বছর ২১ সেপ্টেম্বর মামলাটি তালিকাভুক্ত করে।

ওই মামলায় গ্রেফতার হওয়া শহরের বিশ্বাস বেতকা এলাকার খন্দকার জাহিদ, শাহাদত হোসেন ও হিরণ মিয়া হত্যার ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে তারা সাংসদ আমানুরের দিকনির্দেশনায় যুবলীগ নেতা শামীম ও মামুনকে হত্যা করে লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেয়ার কথা স্বীকার করেন। এর আগে গত ৬ মার্চ এই মামলায় রানাকে জামিন দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। পরে এই আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।

এফএইচ/আরএস/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।